ঢাকা    সোমবার, ২৯ চৈত্র, ১৪২৭, ১২ এপ্রিল, ২০২১
  • ফটো গ্যালারি
  • ভিডিও গ্যালারি
  • সবখবর
logo
  • জাতীয়
  • রাজনীতি
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
    • রংপুর
    • রাজশাহী
    • ময়মনসিংহ
    • খুলনা
    • সিলেট
    • ঢাকা
    • বরিশাল
    • চট্টগ্রাম
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • প্রযুক্তি
  • রঙ্গমঞ্চ
  • শিক্ষাঙ্গণ
  • বিশেষ নিবন্ধ
  • আরও
    • ভিডিও
    • রকমারি
    • সম্পাদকীয়
    • ইতিহাসের এই দিনে
    • স্বাস্থ্য এবং ফিটনেস
    • হাস্যরস
    • ছবির বাসা
    • আর্টস ও লাইফস্টাইল
    • কবিতা ও গান
  • জাতীয়
  • রাজনীতি
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
    • রংপুর
    • রাজশাহী
    • ময়মনসিংহ
    • খুলনা
    • সিলেট
    • ঢাকা
    • বরিশাল
    • চট্টগ্রাম
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • প্রযুক্তি
  • রঙ্গমঞ্চ
  • শিক্ষাঙ্গণ
  • বিশেষ নিবন্ধ
  • আরও
    • ভিডিও
    • রকমারি
    • সম্পাদকীয়
    • ইতিহাসের এই দিনে
    • স্বাস্থ্য এবং ফিটনেস
    • হাস্যরস
    • ছবির বাসা
    • আর্টস ও লাইফস্টাইল
    • কবিতা ও গান
দৈনিক বজ্রশক্তি
No Result
View All Result
ফ্রন্টপেজ বিশেষ নিবন্ধ

অন্ধ বিশ্বাস নয়, যুক্তিই ঈমানের ভিত্তি -রাকিব আল হাসন

জুন ২৮, ২০১৭
in বিশেষ নিবন্ধ

ঈমান আনার আগে আকিদা জানা জরুরি:
এই দীনের প্রায় সকল আলেম একমত যে, আকিদা সহীহ্ না হলে ঈমানের কোনো দাম নেই। সেই মহা গুরুত্বপূর্ণ আকিদা বিষয়টি কী তা ভালো করে বুঝে নেওয়া অতীব জরুরি। বর্তমানে ঈমান ও আকিদা একই বিষয় বলে ধরা হয়, আসলে তা ঠিক নয়। ঈমান শব্দের অর্থ বিশ্বাস। আর আকিদা শব্দের অর্থ হলো কোনো বিষয় সম্বন্ধে সঠিক ও সম্যক ধারণা (ঈড়সঢ়ৎবযবহংরাব পড়হপবঢ়ঃ)। কোন জিনিস কি উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে তা সঠিকভাবে জানার নামই হলো আকিদা অর্থাৎ ঐ জিনিস সম্পর্কে আকিদা সহীহ্ হওয়া। যদি কোন জিনিসের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানা ভুল হয় তাহলে ঐ জিনিসের উপর করা যাবতীয় কাজও ভুল হয়ে যাবে। যেমন একটা গাড়িকে বানানোর উদ্দেশ্য হলো আপনাকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে আনা নেওয়া করা। ঐ উদ্দেশ্য পূরণার্থে অর্থাৎ সহজ করার লক্ষ্যে, আরামদায়ক করার লক্ষ্যে এর ভেতরে বসার জন্য চামড়ার নরম গদি বসানো হয়। গান শোনার জন্য ডিভিডি প্লেয়ার বা সঙ্গীতের ব্যবস্থা করা হয়। গরম বা ঘাম থেকে বাচার জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বসানো হয়। এসব ব্যবস্থা দেখে যদি কেউ মনে করে এটা একটা বাড়ি এবং এটাকে বানানো হয়েছে বসবাস করার জন্য, তাহলে ঐ গাড়ি সর্ম্পকে তার আকিদা ভুল হয়ে গেল। সুতরাং সেই ব্যক্তি যেহেতু এর আসল উদ্দেশ্য জানে না, সেহেতু সে এই গাড়ি চড়ে একস্থান থেকে অন্যস্থানে যাবে না, সুতরাং তার গাড়িটি অর্থহীন হয়ে যাবে যদি তা পৃথিবীর সবচাইতে দামি গাড়িও হয়। সুতরাং আমাদের ভালো করে জানা দরকার যে, আল্লাহ আমাদের কেন সৃষ্টি করেছেন, মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য কী, নবী রসুল প্রেরণের উদ্দেশ্য কী, কেতাব প্রেরণের উদ্দেশ্য কী, জাতি গঠনের উদ্দেশ্য কী, সালাহ্, সওম, হজ্ব, যাকাহ্, ইত্যাদি দেওয়ার উদ্দেশ্য কী? ঈমান কী, কেন ঈমান থাকা দরকার?- এসব বিষয়ের সঠিক উদ্দেশ্য জানা না থাকলে আমল করেও কোনো ফল পাওয়া যাবে না।

আরও খবর:

এই মেয়ে! তোমরা বাইরে কেন?

রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে কি আলাদা করা সম্ভব?

প্রসঙ্গ: শবে বরাত ও মাহে রমজান, সব আমলের পূর্বশর্ত ‘তওহীদ’

রসুলাল্লাহর (স.) পৃথিবীতে আগমনের উদ্দেশ্য:
আল্লাহ পবিত্র কোর’আনের অন্তত তিন স্থানে বলেছেন, “হেদায়াহ ও সত্যদীন দিয়ে আমি আপন রসুল প্রেরণ করেছি, তিনি যেন এটাকে (হেদায়াহ ও সত্যদীনকে) অন্যান্য সমস্ত দীনের উপর বিজয়ী করেন (সুরা-ফাতাহ: ২৮, সুরা-সফ: ৯, সুরা-তওবা: ৩৩)। এই আয়াতে পরিষ্কার দুটি বিষয় দেখা যায়। প্রথমটি হলো হেদায়াহ ও সত্যদীন আর দ্বিতীয়টি হলো অন্যান্য সমস্ত দীনের উপর এই হেদায়াহ ও সত্যদীনকে প্রতিষ্ঠা করা। তাহলে একথা পরিষ্কার হয়ে যায় যে, আমাদের মহানবীর উপর নাজেল করলেন হেদায়াহ ও সত্যদীন এবং তাঁকে দায়িত্ব দিলেন এটাকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য। এই কাজ করার জন্য নীতি হিসাবে দিলেন সর্বাত্মক সংগ্রামের। আল্লাহর রসুল তাই বলেছেন- আমি আদিষ্ট হয়েছি মানবজাতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে যে পর্যন্ত না সমস্ত মানুষ আল্লাহকে একমাত্র ইলাহ এবং আমাকে তাঁর রসুল বলে মেনে নেয় (হাদিস- আবদাল্লাহ বিন ওমর (রাঃ) থেকে- বোখারী, মেশকাত)। যতোদিন এই প্রত্যক্ষ দুনিয়ায় তিনি ছিলেন, এক দেহ এক প্রাণ হয়ে তিনি এবং তাঁর সঙ্গীরা সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। এই কঠিন সংগ্রামের মাধ্যমে তিনি এবং তাঁর সঙ্গীরা তদানীন্তন আরবের এক বিরাট এলাকা আল্লাহর হুকুমের অধীনে নিয়ে আসলেন। তারপর তিনি প্রভুর ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেলেন, তবে যাওয়ার আগে তার বাকি কাজ অর্থাৎ সর্বাত্মক সংগ্রামের মাধ্যমে বাকি দুনিয়াতে দীনুল হক প্রতিষ্ঠা করার ভার দিয়ে গেলেন তার সৃষ্ট জাতি উম্মতে মোহাম্মদীর উপর। বিশ্বনবীর লোকান্তরের সঙ্গে সঙ্গে তার উম্মাহ তাদের বাড়িঘর, স্ত্রী-পুত্র, ব্যবসায়-বাণিজ্য এক কথায় দুনিয়া ত্যাগ করে তাদের প্রাণপ্রিয় নেতা কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব পূর্ণ করতে দেশ ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে পড়েছিল। মাত্র দশ বছরের মধ্যে তদানীন্তন দুটি বিশ্বশক্তি রোমান এবং পারসিক সাম্রাজ্য উম্মতে মোহাম্মদির সামনে তুলার মতো উড়ে গেলো এবং অর্ধ-পৃথিবীতে আল্লাহর সত্যদীন প্রতিষ্ঠা হলো। ৬০/৭০ বছর পর দুর্ভাগ্যজনকভাবে পরবর্তী উম্মাহ্ তাদের আকিদা ভুলে গেল। ভুলে গেল কেন তাদের তৈরি করা হলো। তাদের তৈরি করা হয়েছিল কঠোর অধ্যবসায় অক্লান্ত পরিশ্রম এবং সংগ্রামের মাধ্যমে মানবজীবন থেকে অন্যায়, অশান্তি, যুদ্ধ, রক্তপাত, ক্ষুধা, দারিদ্র্য ইত্যাদি দূর করে এক অনাবিল শান্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য। সেই কাজ বাদি দিয়ে অন্তর্মুখী হয়ে দীনের চুলচেরা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে হাজারো রকমের ফেরকা-মাজহাব-দল-উপদলে বিভক্ত হলো। আজ বিকৃতির চূড়ান্ত স্তরে পৌঁছেছে।

এই দীনের সকল বিকৃতির মূল কারণ হলো আকিদার বিকৃতি:
ইসলামের আকিদা যখন বিকৃত হতে আরম্ভ করে, তখন থেকে একটা একটা করে প্রতিটি বিষয়েই বিকৃতি ও ভ্রান্তি প্রবেশ করতে থাকে। আকিদার বিকৃতির অন্যতম ফল হিসাবে দেখা দেয় অন্ধ বিশ্বাস। বর্তমানে ইসলামের শত্রুরা যে সমস্ত কারণে ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে থাকে, অন্ধবিশ্বাস তার মধ্যে একটি। ইসলামের প্রত্যেকটি হুকুম যুক্তিপূর্ণ। যেমন আল্লাহ জেহাদ করতে বলেছেন। এই জেহাদ হলো সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার সর্বত্মক চেষ্টা, প্রচেষ্টা। এই জেহাদ না থাকলে মানুষের উপর অন্যায়, অবিচার, যুলুম ইত্যাদি চলতে থাকবে। এজন্য মানুষকে সত্য পথে আনার জন্য সর্বদা চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে, সত্য প্রচারে সংগ্রাম করে যেতে হবে। উদ্দেশ্য বুঝে যদি কেউ জেহাদ করে তখন তার মাধ্যমে মানুষের জীবনে কল্যাণ আসে, ন্যায় ও সুবিচার আসে আর উদ্দেশ্য না বুঝে যদি কেউ অন্ধভাবে জেহাদ-কেতালের বিষয়ে আমল করতে যায় তখন সেটা সন্ত্রাস সৃষ্টি করে, জঙ্গিবাদের জন্ম দেয়। বর্তমানে যেটা চলছে।

ইসলামে অন্ধ বিশ্বাসের কোনো স্থান নেই:
আল্লাহর কোর’আন যিনি ভাসাভাসা ভাবেও একবার পড়ে গেছেন তিনিও লক্ষ্য না করে পারবেন না যে- চিন্তা-ভাবনা, যুক্তির উপর আল্লাহ কত গুরুত্ব দিয়েছেন। “তোমরা কি দেখ না? তোমরা কি চিন্তা করো না?” এমন কথা কোর’আনে এতবার আছে যে সেগুলোর উদ্ধৃতির কোন প্রয়োজন করে না। এখানে শুধু দু’একটির কথা বলছি এর গুরুত্ব অনুধাবনের জন্য। চিন্তা-ভাবনা, কারণ ও যুক্তির উপর আল্লাহ অতখানি গুরুত্ব দেওয়া থেকেই প্রমাণ হয়ে যায় যে এই দীনে অন্ধ বিশ্বাসের কোনও স্থান নেই। তারপরও তিনি সরাসরি বলছেন-“যে বিষয়ে তোমাদের জ্ঞান নেই (অর্থাৎ বোঝ না) তা গ্রহণ ও অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই তোমাদের শোনার, দেখার ও উপলব্ধির প্রত্যেকটিকে প্রশ্ন করা হবে (কেয়ামতের দিনে) (কোর’আন- সুরা বনি ইসরাইল ৩৬)।” কোর’আনের এ আয়াতের কোন ব্যাখ্যা প্রয়োজন করে না। অতি সহজ ভাষায় আল্লাহ বলছেন জ্ঞান, যুক্তি-বিচার না করে কোন কিছুই গ্রহণ না করতে। অন্য বিষয় তো কথাই নেই, সেই মহান স্রষ্টা তার নিজের অস্তিত্ব সম্বন্ধেও কোর’আনে বহুবার বহু যুক্তি দেখিয়েছেন। অথচ তাঁর নিজের সম্পর্কে বলার কোন প্রয়োজন ছিলো না, কারণ আল্লাহ কারও ঈমানের মুখাপেক্ষী নন। তারপরও তিনি তাঁর একত্ব, তিনি যে এক, তার কোন অংশীদার, সমকক্ষ নেই, অর্থাৎ একেবারে তার ওয়াহদানিয়াত (একত্ব) ও উলুহিয়াত (সার্বভৌমত্ব) সম্পর্কেই যুক্তি তুলে ধরেছেন। বলছেন- “বল (হে মোহাম্মদ), মোশরেকরা যেমন বলে তেমনি যদি (তিনি ছাড়া) আরও সার্বভৌমত্বের অধিকারী (ইলাহ) থাকতো তবে তারা তাঁর সিংহাসনে (আরশে) পৌঁছতে চেষ্টা কোরত (কোর’আন- সুরা বনি ইসরাইল ৪২)। আবার বলছেন- “আল্লাহ কোন সন্তান জন্ম দেন নি; এবং তার সাথে আর অন্য কোনও সার্বভৌম (ইলাহ) নেই, যদি থাকতো তবে প্রত্যেকে যে যেটুকু সৃষ্টি করছে সে সেইটুকুর পৃষ্ঠপোষকতা করতো এবং অবশ্যই কতগুলি (ইলাহ-সার্বভৌম হুকুমদাতা) অন্য কতকগুলির (ইলাহ) উপর প্রাধান্য বিস্তার করতো (কোর’আন- সুরা আল-মো’মেনুন ৯১)।” এমনি আরও বহু আয়াত উল্লেখ করা যায় যেগুলিতে আল্লাহ মানুষের জ্ঞান, বিবেক, যুক্তির, চিন্তার প্রাধান্য দিয়েছেন, সব কিছুতেই ঐগুলি ব্যবহার করতে বলেছেন, চোখ-কান বুঁজে কোন কিছুই অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। আল্লাহ যেমন একেবারে তার নিজের অস্তিত্ব ও একত্বের ব্যাপারেও যুক্তি উপস্থাপিত করেছেন, (একটু পেছনেই যা উল্লেখ করে এলাম) তেমনি তার রসুল (দ:) তার ঈমান অর্থাৎ বিশ্বাসের ব্যাপারেও বলছেন- ‘আমার ঈমানের ভিত্তি ও শেকড় হলো যুক্তি।’ এছাড়া কোর’আনময় আল্লাহ তাঁর সার্বভৌমত্বের সম্পর্কে যুক্তি উত্থাপন করে গেছেন এবং বলেছেন এবং কারও সাধ্য থাকলে তা খ-ানোর আহ্বান (ঈযধষষবহমব)। তিনি যে দীন মানবজাতিকে দান করেছেন তা গ্রহণ করে নিতে তিনি মানবজাতিকে জোর না করে তিনি তাঁর দীনের শ্রেষ্ঠত্ব যুক্তিসহকারে উপস্থাপন করেছেন এবং তা মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রশ্ন করেছেন, “যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি কি জানেন না? তিনি সুক্ষ্মতম বিষয়ও জানেন” (সুরা মূলক ১৪)।

ইসলামে অন্ধ বিশ্বাস কোনভাবেই স্বীকৃত নয়। ইসলামের অপর নাম দীনুল ফেতরাত বা প্রাকৃতিক দীন যা স্বাভাবিককের উপর, যুক্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। অন্ধ বিশ্বাস তো দূরের কথা আল্লাহ ও রসুলের (দ:) প্রেমে ও শ্রদ্ধায় আপ্লুত হয়েও যে যুক্তিকে ত্যাগ করা যাবে না, তা তাঁর উম্মাহকে শিখিয়ে গেছেন মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক মোহাম্মদ (দ:)। একটি মাত্র শিক্ষা এখানে উপস্থাপন করছি। উহুদের যুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় তাঁর তলোয়ার উঁচু করে ধরে বিশ্বনবী (দ:) বললেন- “যে এর হক আদায় করতে পারবে সে এটা নাও।” ওমর বিন খাত্তাব (রা:) লাফিয়ে সামনে এসে হাত বাড়িয়ে বললেন-“ইয়া রসুলাল্লাহ (দ:)! আমাকে দিন, আমি এর হক আদায় করবো।” মহানবী (দ:) তাকে তলোয়ার না দিয়ে অন্যদিকে ঘুরে আবার বললেন- “যে এর হক আদায় করতে পারবে সে নাও।” এবার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাহাবা যুবায়ের বিন আল আওয়াম (রা:) লাফিয়ে এসে হাত বাড়ালেন- “আমি এর হক আদায় করবো।” আল্লাহর রসুল (দ:) তাকেও তলোয়ার না দিয়ে অন্যদিকে ঘুরে আবার ঐ কথা বললেন, এবার আনসারদের মধ্যে থেকে আবু দুজানা (রা:) বিশ্বনবী (দ:) সামনে এসে প্রশ্ন করলেন- “হে আল্লাহর রসুল! এই তলোয়ারের হক আদায়ের অর্থ কি?” রসুলাল্লাহ জবাব দিলেন- ‘এই তলোয়ারের হক হচ্ছে এই যে, এটা দিয়ে শত্রুর সঙ্গে এমন প্রচ-ভাবে যুদ্ধ করা যে এটা দুমড়ে, ভেঙ্গে চুরে যাবে।” আবু দু’জনা (রা:) বললেন- ‘আমায় দিন, আমি এর হক আদায় করবো।” বিশ্বনবী (দ:) আবু দু’জনা (রা:) হাতে তাঁর তলোয়ার উঠিয়ে দিলেন (হাদিস ও সীরাতে রসুলাল্লাহ- মোহাম্মাদ বিন এসহাক)। একটা অপূর্ব দৃষ্টান্ত- শিক্ষা যে, অন্ধবিশ্বাস ও আবেগের চেয়ে ধীর মস্তিস্ক, যুক্তির স্থান কত উর্দ্ধে। ওমর (রা:) ও যুবায়ের (রা:) এসেছিলেন আবেগে, স্বয়ং নবীর (দ:) হাত থেকে তাঁরই তলোয়ার! কত বড় সম্মান, কত বড় বরকত ও সৌভাগ্য। ঠিক কথা। কিন্তু আবেগের চেয়ে বড় হলো যুক্তি, জ্ঞান। তারা আবেগে ও ভালোবাসায় জিজ্ঞাসা করতে ভুলে গেলেন যে মহানবী (দ:) যে হক আদায় করার শর্ত দিচ্ছেন, সেই হকটা কী? আবু দু’জানার (রা:) আবেগ ও ভালোবাসা কম ছিল না। কিন্তু তিনি আবেগে যুক্তিহীন হয়ে যান নি, প্রশ্ন করেছেন- কী ঐ তলোয়ারের হক? হকটা কি তা না জানলে কেমন করে তিনি তা আদায় করবেন? বিশ্বনবী (দ:) যা চাচ্ছিলেন আবু দুজানা (রা:) তাই করলেন। যুক্তিসঙ্গত প্রশ্ন করলেন এবং তাকেই তাঁর তলোয়ার দিয়ে সম্মানিত করলেন। এখানে লক্ষ্য করার বিষয় হচ্ছে যুক্তিকে প্রাধান্য না দেওয়ায় মহানবী (দ:) প্রত্যাখ্যান করলেন কাদের? একজন তাঁর শ্বশুর এবং ভবিষ্যত খলিফা, অন্যজন শ্রেষ্ঠ সাহাবাদের অন্যতম, এবং দু’জনেই আশারায়ে মোবাশশারাহর অন্তর্ভুক্ত, অন্যদিকে আবু দুজানা এসব কিছুই নন, একজন সাধারণ আনসার। তবু যুক্তিকে প্রাধান্য দেয়ায় ঐ মহা সম্মানিত সাহাবাদের বাদ দিয়ে তাকেই সম্মানিত করলেন। প্রশ্ন হচ্ছে- আবু দুজানার (রা:) আবেগ, বিশ্বনবীর (দ:) প্রতি তার ভালোবাসা কি ওমর (রা:) বা যুবায়েরের (রা:) চেয়ে কম ছিলো? না, কম ছিলো না, তার প্রমাণ বিশ্বনবীর (দ:) দেয়া তলোয়ারের হক তিনি কেমন করে আদায় করেছিলেন তা ইতিহাস থেকে পাওয়া যায়। আবেগের চেয়ে যুক্তি ঊর্ধ্বে। আবেগের সঙ্গে যুক্তি না থাকলে অন্ধ আবেগ নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে ধ্বংসাত্মক কর্মকা- ঘটাতে পারে।

আকলের বেশি কেউ কোন পুরস্কার পাবে না:
এবনে ওমর (রা:) বর্ণনা করেছেন- আল্লাহর রসুল (দ:) বললেন- ‘কোন মানুষ নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত, ওমরা (এবনে ওমর (রা:) উল্লেখ করছেন যে ঐগুলি তিনি একে একে এমন বলতে লাগলেন যে, মনে হলো কোন সওয়াবের কথাই তিনি (দ:) বাদ রাখবেন না) ইত্যাদি সবই কোরল, কিন্তু কেয়ামতের দিন তার আকলের বেশি তাকে পুরস্কার দেয়া হবে না (এবনে ওমর (রা:) থেকে- আহমদ, মেশকাত)। রসুলাল্লাহ (দ:) শব্দ ব্যবহার করেছেন আকল, যে শব্দটাকে আমরা বাংলায় ব্যবহার কোরি ‘আক্কেল’ বলে, অর্থাৎ মানুষের বুদ্ধি, সাধারণজ্ঞান, যুক্তি ইত্যাদি, আবু দুজানা (রা:) যেটা ব্যবহার করে নবীকে (দ:) প্রশ্ন করেছিলেন তলোয়ারের কী হক? অর্থাৎ বিচারের দিনে মানুষের সওয়াবই শুধু আল্লাহ দেখবেন না, দেখবেন ঐ সব কাজ বুঝে করেছে, নাকি গরু-বকরীর মতো না বুঝে করে গেছে, এবং সেই মতো পুরস্কার দেবেন, কিম্বা দেবেন না। অর্থাৎ কারণ ও উদ্দেশ্য না বুঝে বে-আক্কেলের মত নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত, ইত্যাদি সব রকম সওয়াবের কাজ শুধু সওয়াব মনে করে করে গেলে কোন পুরস্কার দেওয়া হবে না। এই হাদিসটাকে সহজ বাংলায় উপস্থাপন করলে এই রকম দাঁড়ায়- ‘বিচারের দিনে পাক্কা নামাজীকে আল্লাহ প্রশ্ন করবেন- নামাজ কায়েম করেছিলে? মানুষটি জবাব দেবে-হ্যাঁ আল্লাহ! আমি সারা জীবন নামাজ পড়েছি। আল্লাহ বলবেন-ভাল! কেন পড়েছিলে? লোকটি জবাব দেবে- তুমি প্রভু। তোমার আদেশ, এই তো যথেষ্ঠ, তুমি হুকুম করেছ তাই পড়েছি। আল্লাহ বলবেন- আমি হুকুম ঠিকই করেছি। কিন্তু কেন করেছি তা কি বুঝেছ? তোমার নামাজের আমার কি দরকার ছিলো? আমি কি তোমার নামাজের মুখাপেক্ষী ছিলাম বা আছি? কি উদ্দেশ্যে তোমাকে নামাজ পড়তে হুকুম দিয়েছিলাম তা বুঝে কি নামাজ পড়েছিলে?” তখন যদি ঐ লোক জবাব দেয়- না। তাতো বুঝিনি, তবে মহানবীর (দ:) কথা মোতাবেক তার ভাগ্যে নামাজের কোন পুরস্কার জুটবে না।

সকল আমলের পুরস্কার পেতে পূর্বশর্ত উদ্দেশ্য বোঝা:
নামাজ এবং হজ্বের মতো অন্যান্য সব পুণ্য-সওয়াবের কাজের সম্বন্ধেও ঐ একই কথা। আর যে মানুষ আল্লাহর প্রশ্নের জবাবে বলবে- হ্যাঁ আল্লাহ, আমি বুঝেই নামাজ পড়েছি। তোমার রসুলকে (দ:) তুমি দুনিয়ায় পাঠিয়েছিলে সমস্ত মানব জাতির উপর তোমার দেয়া জীবন-ব্যবস্থা, দীনকে সংগ্রামের মাধ্যমে জয়ী করে পৃথিবী থেকে সব রকম অন্যায়, শোষণ, অবিচার, যুদ্ধ ও রক্তপাত দূর করে শান্তি (ইসলাম) প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব দিয়ে। তাঁর একার পক্ষে এবং এক জীবনে এ কাজ সম্ভব ছিলো না। তাঁর প্রয়োজন ছিলো একটা জাতির, একটা উম্মাহর, যে জাতির সাহায্যে এবং সহায়তায় তিনি তাঁর উপর দেয়া দায়িত্ব পালন করতে পারেন এবং তাঁর তোমার কাছে প্রত্যাবর্তনের পর যে উম্মাহ তাঁর সংগ্রাম চালিয়ে যেতে সক্ষম হয়, যে পর্যন্ত না সমগ্র মানবজাতির উপর শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এবলিস তোমাকে যে দুনিয়ায় মানবজাতির মধ্যে ফাসাদ আর রক্তপাতের চ্যালেঞ্জ দিয়েছিল, তাতে তুমি জয়ী হও। আমার সৌভাগ্যক্রমে, তোমার অসীম দয়ায়, আমি সেই উম্মাহর অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। তোমার আদেশ নামাজের উদ্দেশ্য ছিলো আমার সেই রকম চরিত্র সৃষ্টি করা, সেই রকম আনুগত্য, শৃঙ্খলা শিক্ষা করা যে চরিত্র ও শৃঙ্খলা হলে আমি তোমার নবীর (দ:) দায়িত্ব সম্পাদনে তাঁর অনুসারী হয়ে সংগ্রাম করতে পারি। তাই আমি বুঝেই নামাজ পড়েছি। এই লোক পাবে তার নামাযের পূর্ণ পুরস্কার। একইভাবে যে হাজী আল্লাহর প্রশ্নের জবাবে বলবে যে, “হে আল্লাহ! আমি বুঝেছি যে তোমার ঘর ক্বাবাকে মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রতীক করেছ এবং হজ্বকে করেছ মুসলিম উম্মাহর মহাসম্মেলন। তুমি চেয়েছ বছরে একবার আরাফাতের মাঠে পৃথিবীর সমস্ত মুসলিমদের নেতৃস্থানীয়রা একত্র হয়ে জাতির সর্বরকম সমস্যা, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামরিক ইত্যাদি সর্বরকম সমস্যা, বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে, পরামর্শ করবে, সিদ্ধান্ত নেবে। অর্থাৎ স্থানীয় পর্যায় থেকে ক্রমশঃ বৃহত্তর পর্যায়ে বিকাশ করতে করতে জাতি পৃথিবীর কেন্দ্রবিন্দু মক্কায় একত্রিত হবে। এটাই হজ্ব। এই মহাজাতিকে ঐক্যের সুদৃঢ় বন্ধনে বেঁধে রাখার জন্য হজ্ব তোমার দেওয়ার চমৎকার একটি প্রক্রিয়া। তাই আমি বুঝেই হজ্ব করেছি।” এই লোক পাবে তার হজ্বের পূর্ণ পুরস্কার। অন্যান্য সব রকম কাজের (আমলের) ব্যাপারেও তাই। কাজেই সকল আমলের পুরস্কার পেতে হলে এই দীনের যাবতীয় আকিদা জানা আবশ্যক।
আলোচনার শুরুতে যে কথা বলেছিলাম- এই দীনে অন্ধবিশ্বাসের স্থান নেই; মানুষ যেন চিন্তা করে অর্থাৎ বুঝে শুনে, দেখে এবং হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করে তারপর সিদ্ধান্ত নেয়। না বুঝে কোনো কাজ করা নিতান্ত বোকামী, এই কাজে সওয়াব তো দূরের কথা বরং গুনাহ্ হবে। আজ মুসলিম নামক জাতি দুর্ভাগ্যজনকভাবে হাজারো ফেরকা মাজহাবে বিভক্ত। এদের ঈমান একেক জন একেক দিকে নিয়ে যাচ্ছে; এতে না হচ্ছে তার উপকার না হচ্ছে মানুষের উপকার। কাজেই এখন ইসলামের সকল বিষয়ের উদ্দেশ্য ভালোভাবে বুঝে শুনে পালন করা জরুরি।
লেখক: সহকারী সাহিত্য সম্পাদক, হেযবুত তওহীদ
ফোন: ০১৭১১০০৫০২৫, ০১৯৩৩৭৬৭৭২৫,
০১৭৮২১৮৮২৩৭, ০১৬৭০১৭৪৬৪৩

ShareTweetSharePinSendShareScanShareShareShareScanSendShareShareShare
Previous Post

মুকসুদপুরে রিজু কাজীর উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

Next Post

দীন নিয়ে বাড়াবাড়ি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ -মোহাম্মদ আসাদ আলী

Related Posts

বিশেষ নিবন্ধ

এই মেয়ে! তোমরা বাইরে কেন?

বিশেষ নিবন্ধ

রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে কি আলাদা করা সম্ভব?

বিশেষ নিবন্ধ

প্রসঙ্গ: শবে বরাত ও মাহে রমজান, সব আমলের পূর্বশর্ত ‘তওহীদ’

বিশেষ নিবন্ধ

ভাগ্যরজনীতে যাঁর ধরাপৃষ্ঠে আবির্ভাব

বিশেষ নিবন্ধ

এই যদি দাজ্জাল না হয় তবে দাজ্জাল কে?

বিশেষ নিবন্ধ

এক নজরে মানবজীবন ও উম্মতে মোহাম্মদী

Next Post

দীন নিয়ে বাড়াবাড়ি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ -মোহাম্মদ আসাদ আলী

Please login to join discussion

সর্বশেষ খবর

হেফাজত তাণ্ডব: নারায়ণগঞ্জে ১৬ মামলা, আটক ৬৫

সৌদি আরবে রোজা শুরু মঙ্গলবার, দেখা যায়নি চাঁদ

আন্দোলনরত জনকণ্ঠের সাংবাদিকদের উপর সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা বাংলাদেশ সাংবাদিক জোটের

তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে জেলেনস্কি এবং এরদোয়ানের মধ্যে বৈঠক

চীনে কয়লা খনিতে দুর্ঘটনায় আটকা পড়েছে ২১ শ্রমিক

জনপ্রিয় খবর

গাজওয়াতুল হিন্দ বা হিন্দের যুদ্ধ নিয়ে বিভ্রান্তি নিরসন জরুরি

কারা প্রকৃত আলেম কারা প্রতারক আলেম

দলের পক্ষ থেকে অবশ্যই এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছি-ফখরুল

সভ্যতা বলতে কী বোঝায়?

জাতীয়
রাজনীতি
অর্থনীতি
সারাদেশ

আন্তর্জাতিক
বিবিধ
খেলাধুলা
বিনোদন

শিক্ষাঙ্গণ
টিপস এন্ড ট্রিকস
স্বাস্থ্য
মজার খবর

রেসিপি
ফিচার
মতামত
নির্বাচিত খবর

ফটো
ভিডিও
সর্বশেষ
সবখবর

ফটো
ভিডিও
সর্বশেষ
সবখবর

আমাদের সম্পর্কে     প্রাইভেসি পলিসি     সম্পাদকমণ্ডলী     যোগাযোগ      সবখবর    ফটো গ্যালারি    ভিডিও গ্যালারি

Dainik Bajroshakti is the most popular Bangla newspaper in Bangladesh. Its Presents National, Economics, Whole Country, World, Sports, Rongomonch, Rokomari etc. news and articles. is one of the popular bangla news portals. It has begun with commitment of fearless, investigative, informative and independent journalism. This online portal has started to provide real time news updates with maximum use of modern technology from 2014. Latest & breaking news of home and abroad, entertainment, lifestyle, special reports, politics, economics, culture, education, information technology, health, sports, columns and features are included in it. A genius team of Jago News has been built with a group of country’s energetic young journalists. We are trying to build a bridge with Bengalis around the world and adding a new dimension to online news portal. The home of materialistic news. A genius team of Jago News has been built with a group of country’s energetic young journalists. We are trying to build a bridge with Bengalis around the world and adding a new dimension to online news portal. The home of materialistic news.

প্রকাশক ও সম্পাদক: এস এম সামসুল হুদা।
১৩৯/১, তেজকুনী পাড়া, তেজগাঁও, ঢাকা-১২১৫ কর্তৃক মানিকগঞ্জ প্রেস, ৪৪ আরামবাগ, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: হাউজ-৫৮, ব্ল­ক-বি, রোড-৩, নিকেতন, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২। ফোন: ০২-৪৭২১৮১১১, ০১৭৭৮-২৭৬৭৯৪, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ০১৬৩৪-২০৮০৩৯। ইমেইল: bajroshakti@gmail.com

Developed By Shahadat

No Result
View All Result
  • About Us
  • Contact Us
  • Copyright
  • Homepage
  • Privacy & Policy
  • Terms & Conditions
  • করোনা ভাইরাস
    • করোনা ভাইরাস আপডেট
    • করোনা ভাইরাস আপডেট তথ্য
  • প্রচ্ছদ
  • সম্পাদকমণ্ডলী
  • সর্বশেষ সবখবর
  • সারাদেশ

Developed By: Shahadat

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Create New Account!

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In