বারাকা মালিহা:
ছোটবেলা অনেকেই হয়ত একটি গল্প পড়েছেন। দুই বন্ধু বনে ঘুরতে গেল। ঘুরতে ঘুরতে তারা গভীর বনে চলে গেল। এমন সময় তারা দেখতে পেল ভাল্লুক আসছে। তাই দেখে এক বন্ধু অন্য বন্ধুকে ফেলে নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য গাছে চড়ে বসল। অন্য বন্ধুটি গাছে চড়তে জানে না। কিন্তু সে জানত যে ভাল্লুক মরা মানুষ ভক্ষণ করে না। তাই সে বুদ্ধি করে মরা মানুষের মতো পড়ে রইল। ভাল্লুক তার কাছে এসে তাকে ভালো করে দেখে মৃত ভেবে চলে গেল। এরপর গাছের বন্ধুটি নিচে নেমে এসে অপর বন্ধুকে বললো, ভাল্লুক তোমার কানে কানে কী বলে গেল? বন্ধুটি উত্তর দিল- ভাল্লুক বলে গেছে যে, বিপদের সময়ের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু। কিন্তু আমরা বাঙালিরা আজও প্রকৃত বন্ধুকে চিনতে পারলাম না। একশ্রেণির লোক ধর্ম গেলো ধর্ম বাঁচাও উন্মাদনা সৃষ্টি করে জাতিকে আন্দোলনের নামে মৃত্যু মুখে ঠেলে দিয়ে নিজেরা মসজিদে, মন্দিরে, খানকায়, মাদ্রাসায় গুঁই সাপের মতো লুকিয়ে আছে। জাতির মধ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করে দিয়ে এসব নামধারী ধর্মের ধারক বাহকরা নিরাপদ অবস্থানে চলে যায়। তবে কেন আমরা তাদের কথায় প্ররোচিত হয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি করছি? নিজেদের জীবন সম্পদের বিনাশ করছি? মানবতার কল্যাণের নামে অকল্যাণ, রাজনীতির নামে অপরাজনীতিতে লিপ্ত হয়ে যারা দেশের মানুষের সম্পদ লুট করে দরিদ্র জনগণের রক্ত চুষে নিয়ে বিদেশের মাটিতে বসতি নির্মাণ করে তারা কি জাতির কল্যাণ করছে? তারা কি দেশপ্রেমিক? নিজেদের ক্ষমতার লড়াইয়ে দলাদলি করে যারা দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করছে, শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, জাতিকে হুমকির সম্মুখীন করেছে তারা কি কখনও দেশপ্রেমিক হতে পারে? আমাদের প্রকৃত বন্ধু হতে পারে? অথচ তারা নিজেদের সন্তানকে নিরাপদে বিদেশে পাঠিয়ে তাদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করে দিচ্ছে। দুঃখের কথা আমরা তাদের কথায় পুতুলের মতো নৃত্য করছি। অন্যদিকে যারা সত্যিকার মানবতার কল্যাণের জন্য, মানবজাতিকে শান্তি, নিরাপত্তা দেবার জন্য নিজেদের সর্বস্ব কোরবান করে দিয়ে এখন জীবনটাও বিলিয়ে দিচ্ছে তাদেরকে জাতি আজও চিনতে পারল না। গত ১৯ বছর যাবৎ মানবজাতিকে শান্তি নিরাপত্তা দেবার প্রয়াসে নিজেদের পার্থিব সম্পদ বিসর্জন দিয়ে এমনকি নিজেদের বাড়ি ঘর ছেড়ে অবিরাম সংগ্রাম করে যাচ্ছে এক দল লোক। তারা যামানার এমাম এমামুয্যামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীর অনুসারী, হেযবুত তওহীদের সদস্য। প্রকৃত বন্ধুকে চিনে দেশ ও জাতির কল্যাণে তাদের সাথে ঐক্যবদ্ধ হোন। দেশ ও জাতির এই চরম ক্রান্তিলগ্নে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য হেযবুত তওহীদের অনুসারীরা মাঠে ময়দানে প্রত্যন্ত অঞ্চলে সমস্ত রকম আশঙ্কাকে দূরে ঠেলে দিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছে। যারা নিজেদের ঘৃণিত স্বার্থের জন্য জনগণকে উস্কানি দিয়ে সুযোগমতো গর্তে লুকায়, বিদেশে পাড়ি জমায় তাদের বিরুদ্ধে এ দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জেনে রাখুন, বিপদের সময় লুকানোর জন্য আগে থেকেই তারা গল্পের বন্ধুটির মতো বিদেশের মাটিতে আশ্রয় নির্ধারণ করে রেখেছে। আমার, আপনার কিন্তু লুকানোর জায়গা নেই। আমাদের এই দেশেই থাকতে হবে। দেশ ধ্বংস হলে আমরাও ধ্বংস হয়ে যাব। তাই আমাদের দেশকে, জাতিকে এবং নিজেদেরকে বাঁচানোর জন্য প্রকৃত অর্থে যারা জীবন সম্পদ বাজি লাগিয়ে সংগ্রাম করছে, তাদের সাথে ঐক্যবদ্ধ হোন। এসব মানুষরূপী হায়েনার হাত থেকে নিজেরাও বাঁচুন, দেশকেও বাঁচান।