
মাঠের ভেতরে-বাইরে বর্ণময় এক চরিত্র ছিলেন সেলিম দুরানি। ছিলেন সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকা কার্যকর এক ক্রিকেটার। জীবনের ইনিংসে তার সময় এবার শেষ হলো। ৮৮ বছর বয়সে পরপারে পাড়ি জমালেন সাবেক এই ভারতীয় অলরাউন্ডার।
রোববার (২ এপ্রিল) সকালে ভারতের গুজরাটের জামনগরে নিজের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন সেলিম দুরানি। পারিবারিক সূত্র খবরটি নিশ্চিত করেছে। তিনি বহুদিন ধরে ক্যান্সারে ভুগছিলেন। সেলিম এর আগে জানুয়ারিতে তার উরুর হাড় ভেঙে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তখন তার অস্ত্রোপচারও করতে হয়েছিল।
১৯৩৪ সালের ১১ ডিসেম্বর আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে জন্মগ্রহণ করেন সেলিম দুরানি। তবে তার বেড়ে ওঠা মূলত গুজরাটের জামনগরেই। এখানেই তার ক্রিকেটে হাতেখড়ি।
ভারতীয় ক্রিকেটে দুরানির অবদান বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি খেলেছিলেন সৌরাষ্ট্র, রাজস্থান এবং গুজরাতের হয়ে। ভারতের হয়ে ২৯টি টেস্ট খেলেছিলেন বাঁহাতি এই স্পিন অলরাউন্ডার। ১৯৬০ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক হয়েছিল। শেষ টেস্ট খেলেন ১৯৭৩ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।
১৯৬০-৬১ মৌসুমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কলকাতা এবং চেন্নাই টেস্টে ১৮ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। তার দুরন্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ় জিতেছিল ভারত। ১৯৭১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে পোর্ট অফ স্পেন টেস্টেও ভারতের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল তার। ক্লাইভ লয়েড ও গ্যারি সোবার্সকে আউট করেছিলেন তিনি। ক্যারিবিয়ানদের বিরুদ্ধে সেটাই ছিল ভারতের প্রথম টেস্ট জয়।
বর্ণময় ক্রিকেট জীবন তার। টেস্ট দলে একবার তাকে বাদ দেওয়ায় স্লোগান উঠেছিল, ‘নো দুরানি, নো টেস্ট’। ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পরের টেস্টে তাকে ডাকতে বাধ্য হয়েছিলেন নির্বাচকরা। এমনই ছিল তার জনপ্রিয়তা। আর ছিল গ্ল্যামার। ২৯ টেস্টে এক সেঞ্চুরিসহ ১২০২ রান আর ৭৫ উইকেটের পরিসংখ্যানে তাই তাকে মাপা শুধু কঠিনই নয়, আদতে অসম্ভবই।