আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে
বসবাসের জন্য একটি ‘বাসা’ প্রতিটি মানুষেরই প্রয়োজন। সারাদিন ক্লান্তিকর পরিশ্রমের পর একটু সুখের ঘুমের জন্য, নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার জন্য একটি ছাদ গোজার ঠাঁই সবাই আশা করেন। অনেকেই কর্মক্ষেত্রের কারণে রাজধানীতে আসেন এবং স্থানীয়দের বাসায় বাড়িভাড়া দিয়ে থাকেন। কিন্তু সেই বাড়িভাড়া যদি হয়ে উঠে গলার কাঁটা তখন তা কতদিন সহ্য করা যায়? রাজধানীতে বাড়িভাড়ার নামে চলছে চরম নৈরাজ্য। স্থানীয় বাসিন্দারা বাড়ি ভাড়ার ব্যাপারে আইন না মেনেই যখন তখন বাড়ি ভাড়া বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এছাড়াও কিছু কিছু জায়গায় ভাড়াটিয়াদের উপর বিভিন্ন অজুহাতে চাপিয়ে দিচ্ছেন অতিরিক্ত ব্যায়।
পত্রপত্রিকা বিশ্লেষণে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ইতোপূর্বে ২০১০ সালে হিউম্যানস রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) রিট আবেদন করলে হাইকোর্ট রিটের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও সেই রিটের নিষ্পত্তি আজ পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। তবে শুনানী শেষ না হওয়া পর্যন্ত ১৯৯১ সালের বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩ ধারা অনুযায়ী প্রতিটি ওয়ার্ডে বাড়িভাড়া সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য একজন করে নিয়ন্ত্রক, অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রক ও উপনিয়ন্ত্রক নিয়োগের উদ্যোগ নিতে হবে। কিন্তু সাড়ে তিন বছরেও এমন কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে ১৯৯১ সালের আইনের প্রয়োগ যথাযথভাবে করা গেলেও বিষয়টি নিষ্পত্তি হতে পারে। কিন্তু আইনের প্রয়োগ ও যথাযথ উদ্যোগ ছাড়া এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ সম্ভব নয়।
অতএব বাড়িভাড়ার ব্যাপারে আইনের যথাযথ প্রয়োগ এখনই বাস্তাবায়ন করুন। রাজধানীতে বর্ধনশীল বাড়িভাড়ার জন্য একজন মানুষের পরিবার নিয়ে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকাটা বেশ মুশকিল পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এছাড়াও বাড়ি ভাড়ার ব্যাপারে সরকারী নীতিমালা থাকলেও সে সম্পর্কে সচেতন নয় অধিকাংশ মানুষ। তাই আইনের যথাযথ প্রয়োগের পাশাপাশি সরকারকে এ সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে হবে। আইনের প্রয়োগ ও সচেতনাই এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায়।