আত্মসম্মানের সঙ্গে আপস করবেন না, তাই এজলাসেই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের বোম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি রোহিত দেও। তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেয়ার পর সাংবাদিকদের বলেন, ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছেন। শুক্রবার (৪ আগস্ট) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিচারপতি দেও বলেন, ‘আদালতে যারা উপস্থিত আছেন, আমি আপনাদের প্রত্যেকের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।
আমি আপনাদের অনেক সময় কটু কথা বলেছি। কারণ, আমি আপনাদের উন্নতি চেয়েছি। আমি আপনাদের কারও মনে আঘাত দিতে চাই না। কারণ, আপনারা সবাই আমার পরিবারের মতো। আপনাদের এটা বলতে হচ্ছে বলে দুঃখিত যে আমার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। আমি আমার আত্মসম্মানের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারি না। আপনারা সবাই কঠোর পরিশ্রম করেন। ’
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বিচারপতি বলেন, তিনি ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছেন। ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছে এরই মধ্যে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন।
২০২২ সালে বিচারপতি দেও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক জি এন সাইবাবাকে কথিত মাওবাদী সম্পৃক্ততার একটি মামলায় খালাস দিয়েছিলেন, যেখানে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়ার কথা তখন বলা হচ্ছিল। ওই রায়ে বিচারপতি দেও উল্লেখ করেছিলেন, এই বিচারিক প্রক্রিয়া সঠিক ছিল না। বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের অধীনে অভিযোগটির কোনো ভিত্তি নেই।
পরে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সেই আদেশ স্থগিত করে এবং হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চকে নতুন করে শুনানির নির্দেশ দেয়।
গত সপ্তাহে বিচারপতি দেও ৩ জানুয়ারি মহারাষ্ট্র সরকারের দেওয়া একটি নির্দেশনা স্থগিত করেন। এই নির্দেশবলে রাজ্য সরকার নিযুক্ত ঠিকাদারদের অবৈধ খননের অপরাধে শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা রাজস্ব বিভাগের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়। নাগপুর-মুম্বাই সমৃদ্ধি এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের ঠিকাদারেরাই অবৈধভাবে খনিজ উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিল রাজস্ব বিভাগ। কিন্তু সরকার রাজস্ব বিভাগের এই ক্ষমতা প্রত্যাহার করলে বিচারপতি রোহিত দেও তা স্থগিত করেন।
বিচারপতি দেও ২০১৭ সালের জুনে বোম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত হন। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে তার অবসর নেওয়ার কথা ছিল। ২০১৬ সালে মহারাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন রোহিত দেও।