নিউজিল্যান্ডের বিচারমন্ত্রী কিরি অ্যালান পদত্যাগ করেছেন। গাড়ি দুর্ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর সোমবার (২৪ জুলাই) তিনি পদত্যাগ করেন। গতকাল রোববার ওই গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটেছিল।
সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাড়ি দুর্ঘটনার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর সোমবার পদত্যাগ করেছেন নিউজিল্যান্ডের বিচারমন্ত্রী কিরি অ্যালান। আর এর মাধ্যমে নির্বাচনী বছরে ভোটের আগে মন্ত্রিসভা ছেড়ে দেওয়া চতুর্থ মন্ত্রী হলেন তিনি।
রয়টার্স বলছে, রোববার নিউজিল্যান্ডের জাতীয় রাজধানী ওয়েলিংটনে একটি সড়ক দুর্ঘটনার জন্য বিচারমন্ত্রী কিরি অ্যালানকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। আর এর পরই দেশটির প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স বলেন, কিরি অ্যালান তাৎক্ষণিকভাবে তার সমস্ত দপ্তর থেকে পদত্যাগ করেছেন।
হিপকিন্স এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অ্যালানের বিরুদ্ধে মোটর গাড়ির বেপরোয়া ব্যবহার এবং একজন পুলিশ অফিসারের সাথে যেতে অস্বীকার করার অভিযোগ আনা হয়েছে। একইসঙ্গে নিঃশ্বাসে অতিরিক্ত অ্যালকোহলের রিডিং ফিরিয়ে দেওয়া সংক্রান্ত একটি লঙ্ঘন নোটিশও জারি করা হয়েছে।
অ্যালান হলেন চতুর্থ মন্ত্রী যিনি চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে মধ্য-বাম লেবার সরকার থেকে পদত্যাগ করেছেন। চলতি বছরের অক্টোবরে দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে এবং জনমত জরিপে প্রধান বিরোধী দল ন্যাশনাল পার্টির সঙ্গে ওই দলের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
হিপকিন্স বলেন, অ্যালানের ‘মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সাম্প্রতিক ব্যক্তিগত সংগ্রাম ভালোভাবে নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং দেখা যাচ্ছে যে, এই সমস্যাগুলোর মধ্যে কিছু গতকাল সংকটে পৌঁছায়।’
রয়টার্স বলছে, নিউজিল্যান্ডের বিচারমন্ত্রীর পাশাপাশি আঞ্চলিক উন্নয়ন মন্ত্রী, সংরক্ষণ মন্ত্রী এবং জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্বপালন করছিলেন কিরি অ্যালান। মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে কিছু দিন ছুটি কাটিয়ে গত সোমবার সংসদীয় দায়িত্বে ফিরে আসেন তিনি।
কিরি অ্যালানকে অবশ্য একবার পূর্ববর্তী প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্নের সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছিল। তবে অ্যালান সেসময় বলেছিলেন, রাজনীতিতে নিজের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ভাবতে তিনি কিছুটা সময় নেবেন।
অ্যালান এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে, আমি বেশ কয়েকটি ব্যক্তিগত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। আমি সেগুলো ঠিকমতো মোকাবিলা করার জন্য সময় নিয়েছিলাম। আমার বিশ্বাস ছিল, একজন মন্ত্রী হওয়ার চাপের পাশাপাশি আমি সেই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে পারব। তবে আমার গতকালের কর্মকাণ্ড এটিই দেখিয়েছে যে, আমি ঠিক নেই।’
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারিতে জেসিন্ডা আরডার্ন সরে দাঁড়ানোর পর ক্রিস হিপকিন্স নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হন। আগামী ১৪ অক্টোবর দেশটিতে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।