চাকরির প্রতিশ্রুতিতে নিউজিল্যান্ডে পাড়ি জমানো শতাধিক বাংলাদেশি ও ভারতীয় শ্রমিক সেখানে শোষণের শিকার হয়েছেন, এমন ঘটনা সামনে আসার পর গত মাসে নড়েচড়ে বসে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশটির অভিবাসন বিভাগ। বাংলাদেশি ও ভারতীয় অভিবাসী শ্রমিকদের শোষণের এই ঘটনায় তদন্তে নেমে আরও ২৯ ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছেন নিউজিল্যান্ডের অভিবাসন কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার রেডিও নিউজিল্যান্ডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি ও ভারতীয় অভিবাসী শ্রমিক শোষণের ঘটনার তদন্তকারী নিউজিল্যান্ডের অভিবাসন বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা শোষণের শিকার আরও ২৯ জন বাংলাদেশি ও ভারতীয় অভিবাসী শ্রমিকের খোঁজ পেয়েছেন। তারাও সেখানে শোষণের শিকার হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।
রেডিও নিউজিল্যান্ড বলছে, দেশটির কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে মোট ১৪৪ অভিবাসীকে খুঁজে পেয়েছে। যারা অকল্যান্ডের দশটি বাড়িতে আবদ্ধ ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করছিলেন। আর এই অভিবাসীদের অনেকে স্বীকৃত নিয়োগকর্তার কাছ থেকে কাজের ভিসা পাওয়ার জন্য হাজার হাজার ডলার দিয়েছেন। কিন্তু নিউজিল্যান্ডে পৌঁছানোর পর তারা কোনও কাজই পাননি অথবা খুব ছোটখাট কাজ পেয়েছেন।
অভিবাসী শ্রমিকদের বেশিরভাগই বলেছেন, কয়েক মাস ধরে তাদের কোনও আয় নেই। কিছু নিয়োগকর্তা চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভিসার ব্যবস্থা করলেও সেখানে পৌঁছানোর পর ভিন্ন ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন অভিবাসী শ্রমিকরা। এমনকি তাদের সঙ্গে এখন দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তারা। এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে নিউজিল্যান্ডের অভিবাসন বিভাগ।
বাংলাদেশি ও ভারতীয় অভিবাসী শ্রমিকদের বসবাসের স্থান পরিদর্শন করেছেন নিউজিল্যান্ডের তদন্ত কর্মকর্তারা। শ্রমিকদের অকল্যান্ডের যেসব বাসাবাড়িতে পাওয়া গেছে, সেগুলো বসবাসের অনুপযুক্ত বলে দেখতে পেয়েছেন তারা।
নিউজিল্যান্ডের অভিবাসন বিভাগ তদন্ত চলাকালীন অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশি হাইকমিশন এবং নিউজিল্যান্ডে ভারতীয় হাইকমিশনের সাথে সমন্বয় করে কাজ করছে বলে জানিয়েছে।
অভিবাসন বিভাগ বলছে, দেশটির সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়, ভুক্তভোগী সহায়তা কেন্দ্র ও পুলিশের পাশাপাশি ভারতীয় এবং বাংলাদেশি প্রতিনিধিরা অভিবাসীদের কল্যাণে সহায়তা করেছেন।
এর আগে, গত মাসে নিউজিল্যান্ডের সরকার দেশটিতে কাজের সন্ধানে যাওয়া ১১৫ বাংলাদেশি ও ভারতীয় নাগরিক শোষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠার পর এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে।