নিজস্ব প্রতিবেদক:
হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘ধর্মব্যবসায়ীরা থেমে নেই। তারা সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে। তাই তাদের ব্যাপারে সকলকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।’ আজ নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে শহীদী জামে মসজিদের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
অপপ্রচার ও গুজব সৃষ্টি করে ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহার করে জ্বালাও-পোড়াও, হত্যাকাণ্ড ও লুটপাটের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে নোয়াখালী জেলা হেযবুত তওহীদ। সভায় স্থানীয় সামাজিক নেতৃবৃন্দ ও এলাকার সর্বসাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন। হেযবুত তওহীদের চট্টগ্রাম বিভাগীয় আমির মো. নিজাম উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, এক শ্রেণির ধর্মব্যবসায়ী ধর্মকে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছে। তারা ওয়াজ মাহফিল করে, বিভিন্নরকম ফতোয়া দিয়ে জাতির অর্ধেক জনসংখ্যা নারীকে জাতীয় অঙ্গন থেকে বহিষ্কার করতে চেষ্টা করেছে। কেউ তাদের স্বার্থবিরোধী কাজ করলেই এই ধর্মজীবীরা তার বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট গড়ে তাকে নাস্তিক, কাফের বলে ফতোয়া প্রদান করে। সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষ জান্নাত, আখেরাত ইত্যাদি ধর্মীয় কথায় বিভ্রান্ত হয়ে ধর্মব্যবসায়ীদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সাহায্য করে। ধর্মের কথা বলে অধর্ম করার সুযোগ পেয়ে যায় ধর্মব্যবসায়ীরা। এই মুহূর্তে আমরা যদি যাবতীয় ধর্মব্যবসা, ধর্ম নিয়ে অপরাজনীতি ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে দেশের ১৬ কোটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে না পারি, তাহোলে ধর্মব্যবসায়ীরা আবারও একটি বানোয়াট ইস্যু সৃষ্টি কোরে দেশের পরিস্থিতিকে সঙ্কটাপন্ন কোরে ফেলতে পারে।
তিনি আরো বলেন, আজকে প্রকৃত ইসলামের বিপরীত শিক্ষাসংবলিত ধর্মব্যবসায়ীদের চালু করে রাখা বিকৃত ইসলাম মৃত্যুভয়ে ভীত কাপুরুষ তৈরি করছে। ইসলাম এমন একটা প্রগতিশীল, এমন একটা প্রাণবন্ত, এমন একটা যুক্তিশীল জীবনব্যবস্থা, যেখানে সকল দুনিয়াবী সঙ্কটের সমাধান রয়েছে, পরকালীন সঙ্কটের সমাধানও রয়েছে। তবে সেটা জঙ্গিবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের চালু করে রাখা মনগড়া বিকৃত ইসলাম নয়, সেটা হলো আল্লাহ-রসুলের প্রকৃত ইসলাম। সেই প্রকৃত ইসলামের ধারক হওয়ায় হেযবুত তওহীদ বরাবরই বিভিন্ন সঙ্কটের সমাধান নিয়ে হাজির হয়েছে । হেযবুত তওহীদ পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বর্তমান সঙ্কট ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কাজ করতে আহ্বান জানাচ্ছে।
তিনি জানান, ২০১৬ সালের ১৪ মার্চে নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে হেযবুত তওহীদের এমামের নিজ বাড়িতে নির্মাণাধীন একটি মসজিদকে গীর্জা আখ্যা দিয়ে হামলা চালায় একটি ধর্মীয় উগ্রগোষ্ঠী। হামলাকারীরা মসজিদ নির্মাণে স্বেচ্ছায় শ্রম দিতে আসা হেযবুত তওহীদের দুই কর্মীকে পৈশাচিকভাবে জবাই করে হত্যা করে। সাম্প্রদায়িক ওই হামলায় হেযবুত তওহীদের শতাধিক কর্মী-সমর্থক গুরুতর আহত হয় এবং বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। সেই ধর্মীয় উগ্রগোষ্ঠী বসে নেই। তারা হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তারা সাধারণ মানুষের ইমানকে হাইজ্যাক করে জাতিবিনাশী কর্মকাণ্ড ঘটানোর পাঁয়তারা করছে। তাই তিনি সভায় উপস্থিত সকল রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও সমাজের গণ্যমান্য মানুষকে ২০১৬ সালের ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ও সমাজের গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে আহ্বান জানান।