ক্রীড়া প্রতিবেদক: নকআউট পর্ব শুরু হতেই টাইব্রেকার প্রসঙ্গও এসে যাচ্ছে। এরই মধ্যে ২০১০ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন স্পেন ভাগ্য পরীক্ষায় একটি গোলও না করে নকআউট পর্বে বিদায় নিয়েছে। জাপান ভালো খেলেও হেরেছে ক্রোয়েশিয়ার কাছে। আজ কোয়ার্টার ফাইনালে সেই ক্রোয়াটদের বিপক্ষে মাঠে নামছে ব্রাজিল। দুই দলের শক্তি বিবেচনায় ম্যাচ যদি টাইব্রেকারে গড়ায় তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। তবে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল কিন্তু ভাগ্য পরীক্ষায় সফল এক দল বলা চলে।
এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে ব্রাজিলকে চারবার ভাগ্য পরীক্ষায় বসতে হয়েছিল। তার মধ্যে তিনবারই সফল হয়েছে সেলেসাওরা। একবার শুধু ব্যর্থতা নিয়ে বিদায় নিতে হয়েছিল।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক ব্রাজিলের সেসব লড়াই
১৯৮৬ মেক্সিকো বিশ্বকাপ
১৯৮৬ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিল মুখোমুখি হয়েছিল ফ্রান্সের। মেক্সিকোর মাঠে নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল। কারেকার ১৭ মিনিটের গোলে ব্রাজিল এগিয়ে গেলে প্লাতিনি ৪০ মিনিটে সমতা ফেরায় ফ্রান্সকে। যদিও ৭৫ মিনিটে সাদা পেলে খ্যাত জিকোর স্পট কিক রুখে দিয়ে চমক দেখান গোলকিপার জোয়েল ব্যাটস।
এর পর টাইব্রেকারে ব্রাজিল আর তাদের সঙ্গে পারেনি। ৪-৩ গোলে ফ্রান্সের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়েছে। টাইব্রেকারে স্কোক্যারেটস ও হুলিও সিজারের শট রুখে দিয়ে দলকে সেমিফাইনালে নিতে অবদান রাখেন গোলকিপার স্বয়ং।
১৯৯৪ যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপ
পেলে-জিকোদের উত্তরসূরী হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মাঠে ইতালির বিপক্ষে ফাইনালে লড়েছে ব্রাজিল। নির্ধারিত সময়ের খেলা গোলশূন্য ড্র হয়েছিল। টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে জিতে অনেক দিন পর সেলেসাওরা শিরোপা ঘরে তুলতে পারে।
গোলকিপার তাফারেল বেশ ভালো খেলে দলকে ট্রফি পাইয়ে দিতে অবদান রেখেছেন। রোমারিও, ব্রাঙ্কো ও দুঙ্গা লক্ষ্যভেদ করলেও ব্যর্থ হন সান্তোস। রবার্তো ব্যাজ্জিও টুর্নামেন্ট জুড়ে ভালো খেললেও ভাগ্য পরীক্ষায় পাস করতে পারেননি। আজ্জুরিয়া মাত্র দুটি লক্ষ্যভেদ করতে পেরেছিল। সেলেসাওদের গোলকিপার তাফারেল বেশ ভালো খেলে দলকে ট্রফি পাইয়ে দিতে অবদান রেখেছেন।
১৯৯৮ ফ্রান্স বিশ্বকাপ
সেমিফাইনালে নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে অমীমাংসিত ছিল। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে রোনালদো ৪৬ মিনিটে ব্রাজিলকে এগিয়ে নিয়েছিলেন। শেষ মুহূর্তে ক্লুইভার্ট লক্ষ্যভেদ করে ডাচদের ম্যাচে বাঁচিয়ে রাখেন। কিন্তু টাইব্রেকারে আর ডাচরা পারেনি। ৪-২ গোলে ম্যাচ জিতে চতুর্থ ট্রফি নিয়ে উল্লাস করে ব্রাজিল।
রোনালদো, রিভালদো, এমারসন ও দুঙ্গা সহজেই জাল কাঁপাতে পেরেছেন। এখানেও গোলকিপার তাফারেল দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। তেকাঠির নিচে থেকে দারুণ সেভ করে দলকে ফাইনালে নিতে অবদান রাখেন।
২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপ
নিজেদের মাঠে খেলা। শেষ ষোলর লড়াইয়ে চিলির বিপক্ষে লড়তে হয়েছে। ম্যাচ ঘড়ির ১৮ মিনিটে ডেভিস লুইসের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর লিড বেশ সময় ধরে রাখা যায়নি। ৩৭ মিনিটে সানচেজ গোল করে সমতা এনে ম্যাচের গতিপথই বদলে দিয়েছেন।
নির্ধারিত সময়ের খেলাতে আর কোনও গোল না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে ৩-২ গোলে ম্যাচ জিতে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে ব্রাজিল। উইলিয়াম ও হাল্ক লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। তবে নেইমার, মার্সেলো ও লুইস গোল করে দলকে পরের ধাপে এগিয়ে নিতে অবদান রেখেছেন।