ভারতের চন্দ্রাভিযান সফল। চাঁদে ঠিকভাবে নামতে পেরেছে ল্যান্ডার বিক্রম। পরে সেখান থেকে বেরিয়ে রোভার প্রজ্ঞান চাঁদে ঘুরে ঘুরে নানা তথ্য পাঠিয়েছে বিজ্ঞানীদের কাছে। দুই সপ্তাহ পরে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে দিন শেষ হয়ে ১৪ দিনের জন্য রাত নামবে।
তখন প্রজ্ঞান ও বিক্রমের কাজ শেষ হবে। কারণ, তারা সৌরশক্তিতে চলে। সৌরশক্তি না থাকায় তারা আর কাজ করতে পারবে না।
তবে ভারতের নজর এখন সূর্যের দিকেই। গত শনিবার অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে রওয়ানা হয়েছে সৌরযান আদিত্য এল ওয়ান। এটাই হলো ভারত থেকে সূর্যের দিকে যাওয়া প্রথম মহাকাশযান।
কীভাবে কাজ করবে আদিত্য এল ওয়ান?
পৃথিবী থেকে ১৫ লাখ কিলোমিটার পথ যাবে এই সৌরযান। তার জন্য ১২৫ দিন সময় লাগবে। প্রথমে ১৬ দিন তা পৃথিবীর কক্ষপথে থাকবে। তারপর পাড়ি দেবে সূর্যের দিকে। কক্ষপথ বদল করে তা গিয়ে পৌঁছাবে যে জায়গায় তার নাম ল্য়াগরেজ পয়েন্ট বা এল ওয়ান পয়েন্ট।
সেখানেই থাকবে ভারতের পাঠানো এই উপগ্রহ। সেকারণেই সৌরযানের নাম আদিত্য এল ওয়ান। আদিত্য মানে সূর্য এবং এল ওয়ান হলো সেই পয়েন্ট, যেখানে এটি অবস্থান করবে।
এই সৌরযানে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করার জন্য আছে সাতটি পে লোড। এদের প্রত্যেকের নিজস্ব কাজ আছে। সৌরযান তখনই সফল হবে, যখন এই পে লোডগুলো নিজের কাজ ঠিক করে করবে। যেমন ভিইলসি পে লোডটি সূর্যের কোরোনা স্তরের ছবি তুলবে।
এছাড়া সূর্যের বর্ণালী পর্যবেক্ষণ করে রিপোর্ট দেবে ভিএলসি। সূর্যের কোরোনা থেকে আলোর রশ্মির বিচ্ছুরণ ও তার ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক বিকিরণ সম্পর্কেও তথ্য জানাবে ভিএলসি। সোলেক্স পে লোডের কাজ হবে নক্ষত্র হিসাবে সূর্য কেমন তা বিচার করা।
আরেকটা পে লোডের নাম এসইউআইসি। তারা ক্রোমোস্ফিয়ার ও ফটোস্ফিয়ারের ছবি ও তথ্য পাঠাবে। সূর্যস্পৃষ্ঠের নাম ফটোস্ফিয়ার ও সেখান থেকে কোরোনা পর্যন্ত প্লাজমার স্তরের নাম ক্রোমোস্ফিয়ার।
অন্য পে লোডগুলো সূর্যের বায়ু, কণা ও চুম্বকক্ষেত্র সম্পর্কে খবরাখবর দেবে।
আদিত্য এল ওয়ান মিশনের দিকে শুধু ভারত নয়, তাকিয়ে আছে গোটা বিশ্ব। কারণ, সফল হলে এই সৌরযান সূর্য সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য দেবে। যা পরবর্তী বৈজ্ঞনিক গবেষণার জন্য, সূর্যকে জানার জন্য খুবই জরুরি।