ক্রিকেটকে যদি রং তুলির আর্ট স্কুলের সঙ্গে তুলনা করা হয় তবে সেই স্কুলের হেডমাস্টার বলা যেতে পারে লিটন দাসকে। তার দৃষ্টিনন্দন কাভার ড্রাইভ, পুল কিংবা কাট শর্ট উপেক্ষা করার ক্ষমতা কারোরই নেই। সাবেক উইন্ডিজ ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার ইয়ান বিশপ তো ক্রিকেটের মোনালিসা উপাধিও দিয়ে দিয়েছেন লিটনকে। আরেক জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলেও লিটনকে প্রশংসায় ভাসান কোনো দ্বিধা ছাড়াই।
লিটন নিজেকে প্রমাণ করেছেন অসংখ্যবার। বাইশগজ মাতিয়েছেন। তবে সবশেষ ঘরের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাট হাতে রান পাচ্ছিলেন না টাইগার এই তারকা ক্রিকেটার। ওয়ানডে সিরিজে ছন্দহীন থাকার পর প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতেও রান খরা। তবে শেষ ম্যাচেই নিজেকে ফিরে পেয়েছেন লিটন। করেছেন ক্যারিয়ার সেরা ৭৩ রান। ম্যাচ শেষে একটি গণমাধ্যমকে নিজের ছন্দে ফেরার রহস্য জানালেন উইকেটকিপার এই ব্যাটার।
লিটন বলেন, ‘বিগত কয়েকদিন ধরে আমি যখন নকিং করছিলাম, আত্মবিশ্বাস পাচ্ছিলাম না। আজকে যখন ম্যাচের আগে নকিং করলাম, তখন দেখলাম শেপ থেকে শুরু করে আমার ভালো অনুভূতি কাজ করছিল। একটা ব্যাটারের ভালো অনুভূতিটাই মূল বিষয়। আমার কাছে মনে হয় এই ফিলটার জন্যই আমার আত্মবিশ্বাস বেশি ছিল।’
dhakapost
লিটন যোগ করেন, ‘যখন একটা ক্রিকেটারের আত্মবিশ্বাস ভালো থাকবে তখন আপনি বল ভালো দেখবেন। আমার কাছে মনে হয় এতোদিন যত অনুশীলন করেছি, নকিং করেছি...তার চেয়ে বেশি কাজে দিয়েছে আজকে সকালে ৫-৭ মিনিট নকিং করে। নকিং করে আসলে খুব বড় কিছু হয়ে যায় না। তবে আমার মনে হয়, আমি ওখান থেকে অনেক বড় কিছু পেয়েছি।’
বিপিএলে একটানা টি-টোয়েন্টি ম্যাচের মধ্যে থাকায় মূলত ওয়ানডে ফরম্যাটে ছন্দ হারান লিটন, ‘দেখেন এটা বললে অন্য কিছু মনে হতে পারে। আমি শেষ যে বিপিএল খেলেছি সেখানে একটানা ১২-১৪ টা (১৩ ইনিংস) ম্যাচ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে খেলেছি। তো এতগুলো ম্যাচ খেলার কারণে আমার ব্যাটিংয়ের শেপ নষ্ট হয়ে গেছে। যেটার প্রভাব পড়েছে ওয়ানডেতে। আমি যে জিনিসগুলো অনুসরণ করে আসছিলাম শেষ দেড়-দুই বছর.. আমি চেষ্টা করছিলাম কিন্তু বুঝে উঠতে পারিনি সে জিনিসগুলো। শেষ দুই ম্যাচেও আমি যেভাবে খেলি বা অনুশীলন করি.. কিছুই মেলাতে পারছিলাম না।’
লিটন যোগ করেন, ‘কিছু ব্যাপার থাকে ব্যাটিংয়ে, একেক জনের একেকটা ফিল থাকে। কেউ একটা পুল শট মেরে, কেউ একটা কাভার ড্রাইভ মেরে সেই ফিলটা পায়। আজকে যখন আমি নকিং করছিলাম আমার ফিলটা ভালো কাজ করেছে। আমি অনুভব করেছি আমার পায়ের পজিশন। আমার মূল জিনিস হচ্ছে ট্রিগার। এটা ঠিক থাকলে আমি যেকোনো বোলারকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব। এই একই জিনিসটাই আমি ফাইন্ড আউট করতে পারিনি শেষ পাঁচটা ম্যাচে।’