ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জল নামে এক ‘ভারসাম্যহীন’ যুবককে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তিন শিক্ষার্থীকে হেফাজতে নিয়েছে শাহবাগ থানা পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ঢাবি কর্তৃপক্ষ তাদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে জানা গেছে।
তারা হলেন, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী জালাল আহমেদ, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সুমন, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মুত্তাকীন সাকিন।
ওই তিনজনকে পুলিশে সোপর্দের কথা ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম।
শাহবাগ থানার পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, তিন শিক্ষার্থীকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে শাহবাগ থানায় মামলার আবেদন জানিয়ে এজাহার দায়ের করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে আবেদনটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
জানা যায়, গতকাল (বুধবার) রাত ৮টার দিকে তোফাজ্জলকে আটক করেন ফজলুল হক হলের শিক্ষার্থীরা। রাত ১২টার দিকে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রাত ২টার দিকে তার মৃত্যুর খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
নিহত ব্যক্তির নাম তোফাজ্জল। তার বাড়ি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠাল তলি ইউনিয়নে। তার বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। জানা যায়, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন।
একটি ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপসম্পাদক জালাল আহমেদসহ হলের ৮-১০ জন শিক্ষার্থী তোফাজ্জলকে মারধর করছেন।
ভোর সাড়ে ৪টায় প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজে যান। সেখান থেকে পরে হল প্রাঙ্গণে এসে হলের পুরাতন ভবনের গেস্টরুম ও এক্সেটেনশনের গেস্টরুম ঘুরে দেখেন। এই দুটি গেস্টরুমেই তোফাজ্জলকে মারা হয়। এসময় তিনি দুটি রুম সিলগালা করে দেন।