স্টাফ রিপোর্টার:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে রাজু ভাস্কর্যের নারী প্রতিকৃতির মুখমণ্ডলে হিজাব সদৃশ কালো কাপড় পরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ সোমবার সকালে বলেন, "এ কাজটি কারা কেন করেছে, সেটা খুঁজে বের করতে আমাদের একটি তদন্ত কমিটি করা হবে।“
বিকালের মধ্যেই এ কমিটি করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এর আগে প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও তারা কথা বলবেন।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে ২৭ বছর আগে এই ভাস্কর্যটি তৈরি করা হয়। রোববার রাতে ভাস্কর্যের নারী প্রতিকৃতির মাথা ও মুখ কাপড়ে ঢাকা অবস্থায় দেখা যায়।
পরে একদল শিক্ষার্থী ওই কাপড় সরিয়ে নিলেও সেই ছবি ছড়িয়ে পড়ে সোশাল মিডিয়ায়, যা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা চলছে।
প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, "রাতে আমাদের টিম গেছে, এর আগেই হিজাবটি সরিয়ে ফেলেছে শিক্ষার্থীরা। তবে ঠিক কখন কাপড়টি পরানো হল এবং খোলা হল সেটা এখনো নিশ্চিত নই।"
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, কয়েকজন যুবক মুখে মাস্ক পরে বাইকে করে এসে ভাস্কর্যে হিজাব পরিয়ে পালিয়ে যায়।
বিষয়টি জানতে পেরে প্রক্টরিয়াল টিম সেখানে উপস্থিত হয়। তবে তার আগেই শিক্ষার্থীরা কাপড়টি খুলে ফেলেন।
ভারতে বসবাসরত বাংলাদেশের নির্বাসিত লেখক তসলিমা নাসরিন ফেইসবুকে রাজু ভাস্কর্যের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, "পাথরের নারীমূর্তিকে যারা আজ হিজাব পরিয়েছে, তারা কাল রক্তমাংসের বেহিজাবি নারীকে হিজাব পরাবে।"
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম, আরেক সমন্বয়ক মাহিন সরকারকে সঙ্গে নিয়ে রাত দেড়টার দিকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে দাঁড়িয়ে নিজেদের ছবি পোস্ট করেন ফেইসবুকে।
ওই পোস্টে তারিকুল বলেন, "আওয়ামী ফ্যাসিস্ট ষড়যন্ত্রের বিষয়ে বিপ্লবী ছাত্রজনতাকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। গণঅভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করার জন্য ফ্যাসিস্ট শক্তি গুলো চতুর্মুখি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
“রাজু ভাস্কর্যে কালো কাপড় পরিয়ে সাম্প্রদায়িক উসকানি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। তাৎক্ষণিকভাবে সেই কালো কাপড় সরিয়ে ফেলা হয়েছে।”