স্টাফ রিপোর্টার:
দিন দিন পরিবেশের জন্য ভয়াবহ আকার ধারণ করছে ইলেক্ট্রনিক বর্জ্য বা ই-বর্জ্য। দেশে ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা থাকলেও প্রকৃতপক্ষে তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। এ সমস্যা নিরসনে আইনের প্রয়োগ ও সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) রাজধানীর শ্যামলীতে ই-বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ দাবি জানান বিশেষজ্ঞরা।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভয়েসের আয়োজিত সভায় উপস্থিত ছিলেন ইলেকট্রিক যন্ত্রাদি ব্যবহারকারী এবং ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, পরিবেশকর্মী ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বর্তমান অবস্থা এবং সার্কুলার অর্থনীতিতে এর সম্ভাবনা নিয়ে পর্যালোচনা করেন বক্তারা। ক্রমবর্ধমান ই-বর্জ্যের উপযুক্ত ব্যবস্থাপনায় আইনানুগ ব্যবস্থার সঠিক বাস্তবায়নের উপরে জোর দেন তারা।
সভায় বক্তারা বলেন, প্রতি বছর দেশে ৩০ শতাংশ হারে ই-বর্জ্য উৎপন্ন হচ্ছে। এই ধরনের বর্জ্য থেকে প্রচুর পরিমাণে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত হয়- যা মাটি, বায়ু এবং পানিতে ছড়িয়ে পড়ছে। যার সরাসরি প্রভাব ইতোমধ্যেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা গেছে।
ভয়েসের এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০২২ সালে বাংলাদেশে প্রায় ৩০ লাখ টন ই-বর্জ্য উৎপন্ন হয়েছে। যার মাত্র তিন শতাংশ সঠিক পুনর্ব্যবহার বা রিসাইকেল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়। বাকি ই-বর্জ্য ভাগাড়ে ফেলে দেয়া হয় বা পুড়িয়ে ফেলা হয় অথবা অদক্ষভাবে এই বর্জ্য থেকে পুনরায় ব্যবহার্য ধাতু নিঃসরণ করা হয়।
এ প্রসঙ্গে বক্তারা দাবি করেন, বাংলাদেশে ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা-২০২১ রয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আইনের বাস্তবায়ন করা হয় না।
ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ বলেন, প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে মোবাইল, কম্পিউটারসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রাদির ব্যবহার বেড়েছে। পর্যাপ্ত রিসাইকেল ব্যবস্থাপনা না থাকায় দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে ই-বর্জ্য যত্রতত্র নিক্ষেপ করা হচ্ছে, যা আমাদের নতুন ধরনের পরিবেশগত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করছে।
এ সমস্যা নিরসনে আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ, সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং যন্ত্র উৎপাদনকারী ও ব্যবহারকারীদের দায়িত্বপূর্ণ আচরণের উপর জোর দেন তিনি।
ভয়েসের সিভিক সেন্টারে অনুষ্ঠিত এ সভায় নেতৃত্ব দেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন- পরিবেশকর্মী ও বিশিষ্ট সাংবাদিক সেলিম সামাদ, বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের সুফল প্রকল্পের সহকারী প্রকল্প পরিচালক মো. মেহেদি হাসান খান, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পরোমা আরেফিন, ইউনাইটেড নেশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের (ইউএনইপি) পরামর্শক গোলাম সারওয়ার, ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিশেষজ্ঞ তাহের খান প্রমুখ।