ডেস্ক রিপোর্ট:
ভারতের জাতীয় গ্রিড ব্যবহার করে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানি করতে চায় বাংলাদেশ। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) এই বিদ্যুৎ আমদানির নীতিগত সিদ্ধান্ত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ভারতীয় গ্রিড ব্যবহার করে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে আমদানির নীতিগত সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।জানা গেছে, নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করতে বছরে ব্যয় হবে ১৩০ কোটি টাকা। এই বিদ্যুৎ আনতে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার এইচভিডিসি সাব স্টেশন ব্যবহার করা হবে। এই সাব স্টেশনের এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করার সক্ষমতা রয়েছে। তবে বর্তমানে এ সাব স্টেশনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৯৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে। সাব স্টেশনটির অব্যবহৃত ক্ষমতা ব্যবহার করে নেপাল থেকে ভারতের সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানি করা সম্ভব। বর্তমানে ভারত থেকে তিনটি সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে দুই হাজার ৬৫৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে বাংলাদেশ।
বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে গত মে মাসে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী, নেপালের ত্রিশুলি প্রকল্প থেকে ২৪ মেগাওয়াট এবং অন্য একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১৬ মেগাওয়াটসহ মোট ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসার কথা। বাংলাদেশের ভেড়ামারায় জাতীয় গ্রিডে এই বিদ্যুৎ আসবে ভারতের বহরমপুর সঞ্চালন লাইন দিয়ে। এই বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তির মেয়াদ পাঁচ বছর হলেও নেপালের পক্ষ থেকে ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ আমদানির লক্ষ্যে গত ১০ সেপ্টেম্বর বৈঠকে বসে ‘বিদ্যুৎ খাত উন্নয়ন ও আমদানি’ সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। কমিটির প্রধান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম চূড়ান্ত করে দ্রুত বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়। ওই বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির ট্যারিফ জানতে চাইলে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, নেপাল থেকে আমদানি করা বিদ্যুতের দাম দেশে উৎপাদিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেয়ে কম পড়বে। বৈঠকের আলোচনায় উঠে আসে, নেপাল শীতকালে বাংলাদেশ থেকে বিদ্যুৎ নিতে আগ্রহী। শীতে নেপালে বিদ্যুতের চাহিদা বেশি থাকে, অপরদিকে বাংলাদেশে চাহিদা কম থাকে। এ কারণে বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে।