প্রথম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনের ঐতিহাসিক ঘটনা বাঙালির স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠনের ইঙ্গিত দিয়েছিল। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে পাকিস্তানিদের হাত থেকে বাঙালি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর।
তবে একটি দেশের স্বাধীনতার প্রতীক জাতীয় পতাকা তৈরি হয় তারও আগে।
১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করায় শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন। ৩ মার্চ আসন্ন জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত হলে পূর্ব পাকিস্তানের সর্বস্তরের জনতা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে অনেকে নিহত হন। সেই সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় গঠিত হয় স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। যেখানে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন ছাত্রলীগ সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ, ডাকসুর ভিপি আ স ম আবদুর রব, জিএস আবদুল কুদ্দুস মাখন।
এই সংগঠনের ব্যানারে দেশব্যাপী আন্দোলন শুরু হয়। একইসঙ্গে তারা পাকিস্তানকে বর্জন করার প্রতীক হিসেবে পতাকা তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জহরুল হক হলে সবকিছু প্রস্তত করা হয়। সবুজের মাঝে লাল, সঙ্গে মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত হয়। বঙ্গবন্ধুর অনুমোদন নিয়ে পল্টনের জনসভায় এটি উপস্থাপিত হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় কয়েক লাখ লোকের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন আ স ম আবদুর রব।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ মার্চ (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০টায় কলাভবন সংলগ্ন ঐতিহাসিক বটতলায় ‘পতাকা উত্তোলন দিবস’ উদযাপন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।