ডেস্ক রিপোর্ট:
ডিম ও আলুর দাম কমাতেই আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। সোমবার (১৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ে ‘বর্তমান দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি’ নিয়ে আলোচনাকালে তিনি এ কথা বলেন।
সচিব বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন ও পামওয়েলের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় গত বছরে সয়াবিন তেলের দাম একপর্যায়ে প্রতি লিটার ২০৫ টাকা হয়ে যায়। সেটা আমরা ধাপে ধাপে কমিয়েছি। সর্বশেষ এক লিটারের বোতল ১৭৯ টাকা নির্ধারণ করা দামে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারের দাম ওঠানামার সঙ্গে মিল রেখে তেল-চিনির দাম সমন্বয় করা হয়।
‘সবসময় আলু রপ্তানি করা হতো। আর ডিম আমদানি বন্ধ ছিল। কিন্তু আমরা জানি, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে দাম নির্ধারিত হয় চাহিদা ও যোগানের ভিত্তিতে। সেই জোগানটা হলো দেশের উৎপাদন ও আমদানি। যেহেতু আমদানি বন্ধ ছিল, আমরা দেখলাম দাম অনেক বেড়ে গেছে, যে কারণে প্রথমে আমরা দাম নির্ধারণ করে দিই কিন্তু তাতে সফল না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ করে ডিম ও আলু আমদানির জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছি।’ তপন কান্তি ঘোষ বলেন, গতকাল (রোববার) পর্যন্ত ১০ হাজার ৯৫ টনের বেশি আলু আমদানি হয়েছে। আর ডিম আমদানি হয়েছে ৬২ হাজার পিস। কিন্তু ডিম আমদানির অনুমতি আমরা দিয়েছি ২৫ কোটি।
‘আমদানি শুরু হতে দেরি হয়েছে। কারণ এখানে রপ্তানিকারকের দেশের দুটি সার্টিফিকেট লাগে। একটা হচ্ছে, যে চালানটি আসছে সেটি বার্ডফ্লু মুক্ত হতে হবে, অন্যটি যে দেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে, সেটি অ্যাভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা কিংবা বার্ড ফ্লুমুক্ত হতে হবে।’ তিনি বলেন, বিশ্ব প্রাণি স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করে জেনেছি, তাদের কাছে এভাবে কোনো দেশকে বার্ডফ্লু কিংবা অ্যাভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা মুক্ত ঘোষণার কোনো তালিকা নেই। তখন এটি সংশোধন করে আইপিও দিয়েছি, একটি অঞ্চল যদি বার্ডফ্লু মুক্ত থাকে, সেখান থেকেও আমদানি করা যাবে। এ কারণে ডিম আমদানি সম্ভব হচ্ছে, আরও আমদানি করা যাবে।
সচিব বলেন, আমরা ডিম ও আলু আমদানি উন্মুক্ত করার পর জেলা ও উপজেলা প্রশাসন সরকার নির্ধারিত দাম বাস্তবায়নের চেষ্টা করায় এ দুটি পণ্যের দাম উল্লেখযোগ্য কমেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয় থেকে গতকাল নির্দেশনা গেছে, সরকার নির্ধারিত আলুর দাম– এটা বাস্তবায়ন করতে জেলা প্রশাসকরা আজ থেকে প্রতিটি কোল্ড স্টোরেজে কর্মকর্তা নিয়োগ করে দিয়েছেন। তাদের উপস্থিতিতেই কেবল ২৭ টাকা দামে আলু বিক্রি হবে। এরপর ভোক্তা পর্যায়ে ৩৬ টাকায় যাতে বিক্রি হয়, সেজন্য তদারকি থাকবে।
‘২৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য ডিম আমদানি নয়, দাম কমানো। সেক্ষেত্রে যদি দেখা যায়, আমদানি কম হচ্ছে, কেননা ডিমের দাম এমন পর্যায়ে কমে গেছে যে আমদানিকারকরা আনতে চাইবে না। কিন্তু ডিমের দাম কমে গেলে আমদানি কম হলেও ক্ষতি নেই।’ তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আলুর ক্ষেত্রে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে দুই লাখ আইপি দেওয়া হয়েছে। ঋণপত্র খোলা হয়েছে হয়ত আরও অনেক কম। কিন্তু এটা অব্যাহত প্রক্রিয়া, যতদিন দাম স্থিতিশীল না থাকবে। অন্যান্য পণ্যের আমদানি বাড়াতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যাতে খাদ্যপণ্য যেমন– তেল, চিনি, আলু ও ডাল এসব পণ্যে ঋণপত্র খুলতে কোনো সমস্যা না হয়, যাতে ডলারের কোনো সমস্যা না হয়, সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।