Date: November 23, 2024

দৈনিক বজ্রশক্তি

Header
collapse
...
Home / জাতীয় / বন্যহাতির তাণ্ডব, নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন ৪ গ্রামের মানুষ

বন্যহাতির তাণ্ডব, নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন ৪ গ্রামের মানুষ

December 12, 2022 01:27:04 AM   স্টাফ রিপোর্টার
বন্যহাতির তাণ্ডব, নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন ৪ গ্রামের মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার: নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় বেড়েছে বন্যহাতির তাণ্ডব। প্রতিরাতে হাতির আক্রমণে স্থানীয়দের মধ্যে বেড়েছে আতঙ্ক। গত শনিবার রাতেও জেলার দুর্গাপুর উপজেলার পশ্চিম বিজয়পুর, আড়াপাড়া গ্রামে তাণ্ডব চালিয়েছে পাহাড়ি বন্যহাতির দল।
এ সময় অন্তত ২০টি বসতবাড়িতে আক্রমণ করে। এতে ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় বাসিন্দারা। ঘরে সংরক্ষিত ধান চাল খেয়ে যায় বন্যহাতিরা। এ ছাড়া সীমান্তবর্তী অঞ্চলের কুল্লাগড়া সদর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে বন্য হাতির দল তাণ্ডব চালিয়ে ফসল ও ঘর-বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে। ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর থেকে ভারত থেকে নেমে আসা হাতির দল গত ৩-৪ দিনে ২০-২৫ টি ঘর-বাড়ির গুড়িয়ে দিয়েছে। সীমান্ত অঞ্চলের জমির ফসল ও বাড়িতে গোলায় রাখা ধান খেয়ে সাবাড় করে দিয়েছে। হাতির তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে কেউ খোলা আকাশের নিচে, আবার কেউ কেউ ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। এরইমধ্যে হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে মারা গেছেন পশ্চিম বিজয়পুর গ্রামের এক কৃষক।
জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে বন্য হাতির দল সীমান্ত অঞ্চলে অবস্থান করছে। সন্ধ্যা হলেই নেমে আসে লোকালয়ে। বন্য হাতির ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে সীমান্তবর্তী মানুষেরা। না পারছে তাদের ফসল রক্ষা করতে না পারছে ঘরবাড়ি রক্ষা করতে। বর্তমানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মশাল জ¦ালিয়ে ফসল ও বাড়ি ঘর রক্ষার চেষ্টা করছে কিন্তু বন্য হাতির আক্রমণের সামনে দারতে পারছে না। পেটে ক্ষুধা ও আশ্রয়স্থল হারিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছে ক্ষতিগ্রস্তরা। একই সঙ্গে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে ৪ গ্রামের মানুষ। এর মধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে নগদ অর্থসহ কম্বল বিতরণ করেছেন ও সহযোগিতার আশ্বাস দেন। ক্ষতিগ্রস্ত আড়াপাড়া গ্রামের মনোয়ারা বেগম জানান, রাতে হঠাৎ বন্যহাতির একটি দল আমার বাড়িতে প্রবেশ করে। হাতিগুলো আমার বসত ঘরের খুঁটি, বেড়া, ভেঙে তছনছ করে ফেলে। বসতঘরে থাকা হাঁড়ি-পাতিল, জামা-কাপড়সহ যাবতীয় আসবাবপত্র পিষে নষ্ট করে। তখন জীবন বাঁচাতে তিন সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যাই।
প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালিয়েছে হাতির দল। শুধু তাই নয় ঘরে রাখা চাল ও ধান নষ্ট করেছে ক্ষুধার্ত হাতির দলটি। বর্তমানে আমাদের মাথা গোঁজার জায়গাটুকু নেই।
কুল্লাগড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ইউপি সদস্য আবদুল হামেদ বলেন, হাতিগুলো বাংলাদেশ সীমান্তের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। রাত হলেই হামলা করছে লোকালয়ে। এতে স্থানীয়া রয়েছে আতঙ্কে। বন্যহাতির দল লোকালয়ে প্রবেশ করে ধান, সবজি, গাছপালাসহ মানুষের ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করছে। দুর্গাপুর সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাদেকুল ইসলাম বলেন, বন্য হাতির দল ভবানীপুর গ্রামে হানা দিয়েছে।এসময় প্রায় ২০০-২৫০ মণ ধানের ক্ষতি করেছে। বন কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলাম  বলেন, প্রতি বছরই বন্যহাতি খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে প্রবেশ করে জানমালের ক্ষতি করে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের বন বিভাগের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়। বন বিভাগের আইন অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহযোগিতা করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান বলেন, ভারতীয় বন্য হাতির দল লোকালয়ে প্রবেশ করে আড়াপাড়া ও পশ্চিম বিজয়পুর, ভবানীপুরসহ কয়েকটি গ্রামের ফসল, বাড়ি-ঘর ভাঙচুরসহ ব্যাপক ক্ষতি করেছে। তাৎক্ষণিক ভাবে তাদের ভেঙে যাওয়া ঘর মেরামতের জন্য দুই হাজার টাকা ও শীতবস্ত্র দিয়েছি। পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্তদের আবেদনের মাধ্যমে সহায়তা দেওয়া হবে।