ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে যখন গোটা বিশ্ব উত্তাল, তখন বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইসরায়েলি পণ্য বয়কটের ডাক উঠেছে। বিশেষ করে কোমলপানীয় ব্র্যান্ড ‘কোকাকোলা’র বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে সাধারণ শ্রেণি পেশার মানুষ।
কোকাকোলা বিরোধী এই প্রচারণা বন্ধের জন্য সম্প্রতি একটি বিজ্ঞাপন প্রচার করেছে প্রতিষ্ঠানটি। যেখানে দাবি করা হয়েছে, কোকাকোলা ইসরায়েলি পণ্য নয়।
সেই বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেছেন ব্যাচেলর পয়েন্ট খ্যাত অভিনেতা শরাফ আহমেদ জীবন, শিমুল শর্মা, আব্দুল্লাহ আল সেন্টু প্রমুখ।
‘কোকাকোলা’র এই বিজ্ঞাপনটি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই কঠোর সমালোচনা শুরু হয়েছে। সাধারণ মানুষের তোপের মুখে ক্ষমা চেয়েছেন অভিনেতা শিমুল শর্মা। অন্যদিকে শরাফ আহমেদ জীবন নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন।
তবুও সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া থামেনি। সামাজিক মাধ্যমে কোকাকোলার পাশাপাশি বিজ্ঞাপনের অভিনেতাদেরও বয়কটের ডাক উঠেছে। যার প্রভাব পড়েছে ব্যাচেলর পয়েন্ট খ্যাত নির্মাতা কাজল আরেফিন অমির উপরে।
কোকাকোলা বা বিজ্ঞাপন সংশ্লিষ্ট না থাকার পরেও তোপের মুখে পড়েছেন অমি। কারণ অভিনেতা শিমুল ও জীবন অমির বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করেছেন। এছাড়াও শিমুল কাজল আরেফিন অমির সহকারী পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন। যে কারণে অনেকেই এই অভিনেতাদের পাশাপাশি অমিকেও বয়কটের ডাক দিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা বলেছেন কাজল আরেফিন অমি। তিনি বলেন, বিজ্ঞাপন নিয়ে যেই আলোচনা হচ্ছে, সেসব আমি দেখেছি। মানুষ আমাকে ভুল বুঝছে। নানা প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে। তবে আমি কিন্তু এই বিজ্ঞাপনের সঙ্গে জড়িত নই।
অমি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই বয়কটের ডাক তুলেছে। এর প্রভাব আমার কাজের উপরও পড়ছে। তবে আমি মনে করি, সকলের উচিত সেই বিজ্ঞাপন সংস্থার উদ্দেশে প্রতিক্রিয়া জানানো। যারা আমাকে পছন্দ করেন তারা জানেন- আমি মানুষের মূল্যবোধ, পছন্দ-অপছন্দ বিবেচনায় রেখেই কাজ করি।’
শিমুল ও জীবনের কাজের দায় আপনি এড়াতে পারেন কিনা— এমন প্রশ্নে এই নির্মাতা বলেন, ‘আমি তাদের পরিচালক। অভিভাবক নই। দু’জনের সঙ্গেই আমার কাজের সম্পর্ক। তাদেরকে আমি পরামর্শ দিতে পারি। তবে কী করবে কী করবে না, সেই আদেশ দিতে পারি না। আর এই বিজ্ঞাপন তো আমি নির্মাণ করিনি।’
অমি বলেন, ‘শিমুল আমার সহকারী পরিচালক। সে আমাকে বলেছিল, জীবন ভাইয়ের সঙ্গে একটি বিজ্ঞাপনে কাজ করবে। তবে আমি গল্পটা তখনও শুনিনি। কারণ ফিমেল ৪-এর এডিটিং নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছি। পরে যখন আমি বিজ্ঞাপনটি দেখলাম তখনই মনে হয়েছে, এটা মানুষ ভালোভাবে নিবে না।’
বিজ্ঞাপন দেখার পরে শিমুলের সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও জানালেন এই নির্মাতা। কাজল আরেফিন অমি বলেন, ‘বিজ্ঞাপনটি দেখার পরপরই আমি শিমুলের সঙ্গে কথা বলি। তাকে বললাম- তোর এই কাজটা ঠিক হয়নি। মানুষ ভালোভাবে নেয়নি। তোর উচিত সকলের উদ্দেশে ক্ষমা চাওয়া। নিজের অবস্থান পরিষ্কার করা।’
শিমুলের বয়স খুব কম। সে হয়তো বুঝে কাজটি করতে পারেনি। তবে পুরো বিষয়টি নিয়ে সে খুব অনুতপ্ত বোধ করছে। আশা করি, সাধারণ মানুষ বিষয়টি বুঝতে পারবে- যোগ করেন অমি।
এবারের ঈদে মুক্তি পাবে কাজল আরেফিন অমির ফিমেল- ৪ নাটক। অমি মনে করেন, দর্শক যারা আমার কাজ পছন্দ করেন তারা অবশ্যই পাশে থাকবেন। সকলে কাজ দিয়েই আমাকে বিচার করবেন।