আর্জেন্টাইন কিংবদন্তী ফুটবলার দিয়োগো ম্যারাডোনার মাঠের কীর্তি নিয়ে কারোরই সন্দেহ থাকার কথা নয়। তিনি মাঠের বাইরের আচরণে সমালোচনার জন্ম দিলেও মাঠে সবসময় থাকতেন সপ্রতিভায় উজ্জ্বল। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে আকাশি-সাদাদের জন্য দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বফুটবলের সর্বোচ্চ শিরোপা এনে দেন তিনি। তবে সেখানে তার ‘হ্যান্ড অব গড’খ্যাত গোলের জন্য সৃষ্ট বিতর্ক এখনও থামেনি। তেমনি একটি ঘটনা ঘটেছে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় শ্রেণির ফুটবল লিগ চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচে। সেখানে হাত দিয়ে গোল করায় লাল কার্ড দেখেছেন অ্যান্ডি ক্যারল।
বুধবার (১৯ এপ্রিল) রাতে মুখোমুখি হয়েছিল রিডিং ও লুটন টাউন। যেখানে মাত্র চার মিনিটের ব্যবধানেই ক্যারল হিরো থেকে ভিলেন বনে যান। অথচ দলের জন্য তিনিই প্রথম লিড এনে দেন। সেই গোলেই তারা ফিরতে পারতেন জয় নিয়ে। কিন্তু যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে প্রতিপক্ষ দল গোল করে সমতায় ফিরে। তবে সব ছাপিয়ে পুরো ম্যাচের আলোচিত দৃশ্য ছিল ক্যারলের হাত দিয়ে করা গোলটি। এরপর তিনি সতীর্থদের সঙ্গে একত্রে উদযাপনও করেন।
ম্যাচের ৫১তম মিনিটে ডেডলক ভাঙা গোল করেন রিডিংয়ের স্ট্রাইকার ক্যারল। মৌসুমজুড়ে ধুঁকতে থাকা দলের পক্ষে সেই গোলের কারণে তিনি রীতিমতো নায়ক বনে যান। কিন্তু ৫৫ মিনিটেই তিনি করে বসেন মস্তবড় ভুল। তখন হয়তো তার স্মরণে এসেছিল ১৯৮৬ বিশ্বকাপে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তী দিয়েগো ম্যারাডোনার করা সেই ‘হ্যান্ড অব গডে’র কথা! যার কারণে কর্নার কিক থেকে উড়ে আসা বল হাত ছুঁয়ে তিনি জালে পাঠান। তবে তিনি রেফারির চোখ ফাঁকি দিতে পারেননি। তাকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। পরে আরও একটি কার্ড দেখায় লাল কার্ড নিয়ে ক্যারলকে মাঠ ছাড়তে হয়। এর মাধ্যমে ৩৪ বছর বয়সী সাবেক এই লিভারপুল তারকা একই ম্যাচে দুটি ভিন্ন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন।
তবে ক্যারলের প্রথম গোলটি নিয়ে ম্যাচের নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হওয়ার আগপর্যন্ত এগিয়ে ছিল রিডিং। কিন্তু যোগ করা সময়ে লুটন ১-১ ব্যবধানে সমতায় ফিরে কার্লটন মরিসের গোলে। এতে পয়েন্ট হারায় ক্যারলের রিডিং। ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে রেলিগেশন জোনে থাকা দলটি টেবিলের শেষদিক থেকে তিনে রয়েছে।
এর আগে আর্জেন্টিনার সোনালী ট্রফি জয়ের মঞ্চে শতাব্দীর সেরা গোল করে বিশ্বকে থমকে দিয়েছিলেন ম্যারাডোনা। মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে দৌড়ে পাঁচজন ফুটবলারকে কাটিয়ে গোল করেন ‘ফুটবল ঈশ্বর’। তবে উড়ে আসা বলে এরপর তিনি হাত দিয়ে গোল করেন। পরবর্তীতে তিনি নিজেই গোলটির নাম দেন ‘হ্যান্ড অব গড’। ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর এই ফুটবল সুপারস্টার মারা গেলেও ইংল্যান্ড দলটি তাকে কখনও ক্ষমা করেনি।