আরশাদ মাহমুদ:
আল্লাহ পবিত্র কোর’আনে মানবজাতিকে ঈমান আনতে বলেছেন। আল্লাহর রসুল সর্বদা ঈমানের দিকে মানুষকে ডেকেছেন। আমরা যদি পবিত্র কোর’আনে ভালোভাবে লক্ষ করি তাহলে দেখতে পাব পবিত্র কোর’আনে আল্লাহ যত আদেশ, নিষেধ, উপদেশ ইত্যাদি প্রদান করেছেন সবই মো’মেনদের জন্য, অর্থাৎ যারা ঈমান এনেছে তাদের জন্য। যেমন, আল্লাহ বলেছেন- হে ঈমানদারগণ, তোমাদের উপর যুদ্ধ ফরজ করা হলো (সুরা বাকারা ২১৬); হে ঈমানদারগণ, তোমাদের উপর সওম ফরজ করা হলো ইত্যাদি।
আভিধানিকভাবে ‘ঈমান’ অর্থ বিশ্বাস। কিন্তু যে কোনোকিছুতে বিশ্বাসই ঈমান নয়। ইসলামের কিছু সুনির্ধারিত বিষয় রয়েছে, এগুলোর প্রতি বিশ্বাস রাখাই ঈমান। যেমন- আল্লাহ (আল্লাহকে একমাত্র হুকুমদাতা, বিধানদাতা হিসেবে গ্রহণ করা) রসুল, (রিসালাত) মালায়েক, তাকদির, হাশর, জান্নাত, জাহান্নাম, কেতাবসমূহ ও নবী-রসুলগণের প্রতি বিশ্বাস।
এখন কথা হলো, আমরা অধিকাংশ মুসলিমই তো এ সবকিছু বিশ্বাস করি। তার মানে আমাদের ঈমান আছে। তারপরও আমরা মুসলমানরা এত ভাগে বিভক্ত হলাম কীভাবে? আমাদের মধ্যে এত দলাদলি, ফেরকাবাজি, মারামারি, মতভেদ কেন? একদলের সঙ্গে আরেকদলের পার্থক্য ও মতভেদ এতই বেশি যে, অমুসলিমদের চেয়েও বেশি শত্রুতা আমরা মুসলিমরাই নিজেরা নিজেদের বিরুদ্ধে পোষণ করি। এর কারণটা আসলে কী- কখনও কি ভেবে দেখেছি আমরা?
কী অদ্ভুত ব্যাপার! ঈমান এক, অথচ ঈমানদাররা এক হতে পারছে না। সবাই একই বিশ্বাস লালন করেন, অথচ একজনের পথের সঙ্গে আরেকজনের পথ মিলছে না। শুধু যে মিলছে না তাই নয়। গত ১৩০০ বছরের ইতিহাস খুলে দেখি ভয়াবহ কারবার। এক আল্লাহ, এক রসুল, এক কিতাবে বিশ্বাসী এই মানুষগুলোর হাত লাল হয়ে আছে নিজেদেরই রক্তে।
পাঠক, এই অনৈক্যের কারণ আর কিছু নয়- আকিদা হারিয়ে যাওয়া। সে এক দুঃখজনক ইতিহাস। এখানে বিস্তারিত বলার সুযোগ নেই। অন্য কোনো লেখায় এ নিয়ে বিষদ আলোচনা করা যাবে। আপাতত আকিদা শব্দটি ভালোমতো বুঝে নেওয়া যাক এবং আরও বুঝে নেওয়া যাক কীভাবে আকিদা হারিয়ে যাওয়ার পরিণামে মুসলমানরা বহু মতে ও পথে ভাগ হয়ে গেল।
আকিদা বলতে বোঝায় সামগ্রিক বা সম্যক ধারণা (ঈড়সঢ়ৎবযবহংরাব পড়হপবঢ়ঃ, ঙাবৎধষষ রফবধ)। যেমন ধরুন, একটা কলম। এটা কী, এটা দিয়ে কী হয়, কীভাবে হয় ইত্যাদি জানা বোঝার নাম হলো আকিদা। ধরুন, আপনাকে আপনার বিশ্বস্ত বড় ভাই একটা অত্যাধুনিক ও মূল্যবান কলম উপহার দিলেন। তিনি বললেন, ‘এটা হলো কলম, এটা আমি তোমার জন্য কিনে এনেছি।’ আপনিও বিশ্বাস করলেন এটা কলম এবং আপনার বড়ভাই আপনার জন্য কিনে এনেছেন। এই বিশ্বাস হলো ঈমান। কিন্তু আপনার কলম সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। আপনি জানেন না কলম দিয়ে কী করা হয়, কীভাবে এটি ব্যবহার করতে হয়। আপনি যেহেতু জানেন না, তাই এই কলমটা আপনার কাছে থেকেও কিন্তু লাভ হলো না। আপনি কিছু লিখতে পারলেন না। ঈমান অর্থহীন হয়ে গেল।
শুধু তাই নয়, আপনার একটা দুষ্টু প্রকৃতির বন্ধু আছে। সে আপনার কলমটা দেখে নেড়েচেড়ে বলল, ‘আরে বন্ধু তুমি কি জানো না এটা একটা অস্ত্র। এটা দিয়ে তো মানুষকে আঘাত করতে হয়!’ ব্যাস! আপনি এবার দুষ্ট বন্ধুর কথা শুনে কলমটা দিয়ে লোকজনকে ক্ষতবিক্ষত করতে লাগলেন আর ভাবলেন আপনার বড় ভাই আপনাকে এই উদ্দেশ্যেই কলম উপহার দিয়েছেন।
পাঠক! দেখলেন তো, আকিদা (সামগ্রিক ধারণা) সঠিক না থাকার কারণে আপনার ঈমানকে কীভাবে ভুল খাতে প্রবাহিত করা হলো? যে ঈমান মানুষের কল্যাণের কাজে লাগতে পারত, সেই ঈমান এবার মানুষের ক্ষতির কাজে ব্যয় হতে লাগল? এটাই হয়েছে আমাদের মুসলিম জনগোষ্ঠীর বেলায়।
আমরা মনেপ্রাণে আল্লাহ, রসুল, কিতাব, কেয়ামত, জান্নাত-জাহান্নাম, মালায়েক, তাকদির, হাশর ও নবী-রসুলগণে বিশ্বাস করি। কিন্তু জানি না আল্লাহ কেন নবী-রসুলদেরকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন, উম্মতে মোহাম্মদী হিসেবে আমাদের কাজ কী, আল্লাহর রসুল কেন আবির্ভূত হয়েছিলেন, কেন কোর’আন অবতীর্ণ হয়েছে ইত্যাদি। ফলে এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী লোক আমাদের ঈমানকে হাইজ্যাক করে নিয়ে যেতে পারছে বিভিন্ন দিকে।
যিনি নামাজ পড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন, তিনি এসে বলছেন- আরে ভাই, নামাজ পড়েন, নামাজ বেহেশতের চাবি। ব্যস, আমরা নামাজই পড়ে যাচ্ছি। আর কোনোদিকে খেয়াল নাই। নামাজ যে আল্লাহ কেন পড়তে বলেছেন, কী উদ্দেশ্যে বলেছেন, এখান থেকে আমার ইহকালে কী লাভ, পরকালে কী লাভ, মো’মেনের জীবনে নামাজের গুরুত্ব কোথায়, দীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের সঙ্গে নামাজের সম্পর্ক কী তা আমাদের মাথায় নাই। আমাদের চোখের সামনে অন্যায় হয়, অবিচার হয়, লুটপাট হয়, আমরা দু’চোখ বন্ধ করে মসজিদে যাই, আবার মসজিদ থেকে বেরিয়ে দুচোখ বন্ধ করে বাড়ি ফিরে আসি। ইসলামের উদ্দেশ্য যে এ সকল অন্যায় অবিচার লুটপাট বন্ধ করা সেটা আমরা জানিই না।
আরেক শ্রেণির হুজুর মাদ্রাসায় আরবি শিখে এসে ওয়াজ করেন, ‘আরে ভাই, কোর’আন তেলাওয়াত করেন, হাশরের দিন কিছু থাকবে না, সেদিন কোর’আনের জবান খুলে যাবে, কোর’আন আপনার পক্ষে সাক্ষী দিবে।’ ব্যাস! আমরা হুজুরের কাছে ছুটে যাই, হাদিয়া যতই লাগুক আমাদেরকে কোর’আন তেলাওয়াত শেখাতে হবে। যে কোর’আন আরব সমাজের চেহারা পাল্টে দিয়েছিল, যে কোর’আনের হুকুম প্রতিষ্ঠা হওয়ায় সমাজ থেকে যাবতীয় অন্যায়, অবিচার, শোষণ, বঞ্চনা, মাদক, ধর্ষণ ইত্যাদি মুছে গিয়েছিল, সেই কোর’আন এখন আমাদের ঘরে ঘরে রয়েছে, কিন্তু আমাদের সমাজ ডুবে আছে অন্যায় অবিচারের সাগরে। কেননা আমরা পবিত্র কোর’আন তেলাওয়াত করি সওয়াব কামাই করার জন্য, কোর’আনের হুকুম প্রতিষ্ঠার জন্য নয়। কোর’আন সম্পর্কে আমাদের আকিদা হলো- প্রতি হরফের জন্য দশ নেকি পাব এবং এভাবে প্রচুর নেকি কামাই করতে করতে আসমান জমিন ভরিয়ে ফেলব, আর তা দেখে আল্লাহ আমাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন। আমাদের সমাজে কোর’আনের ঐ আয়াত আদৌ কার্যকর কিনা সেটা ভেবে দেখি না।
আরেক হুজুর এসে সরাসরি ইতিহাস থেকে দেখিয়ে দিলেন- ‘ভাইসব, এই দেখেন আল্লাহর রসুল রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন, বিচার ফয়সালা করেছেন। কাজেই রাজনীতি করতে হবে। ভোট দিতে হবে। আমাদেরকে ভোট দেন, এই ব্যালট পেপার জান্নাতের টিকিট হবে।’ ব্যাস- পরকালে জান্নাতের আশায় বুঝে না বুঝে একদল মানুষের ঈমান একটি গোষ্ঠীর ক্ষমতায় যাবার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে। তারা জানেই না যে ব্রিটিশদের তৈরি করা ধান্ধাবাজির রাজনীতির সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই।
ওদিকে পীরসাহেব এসে বলেন, ‘বাবারা! আমার হাতে হাত রাইখা বাইয়াত নাও (নজরানা প্রদানপূর্বক), হাশরের দিনে যখন কিছু থাকবে না, তখন তোমার পীর তোমারে জাহাজে করে জান্নাতে পৌঁছে দিবে।’
লক্ষ লক্ষ মানুষ পীরের জাহাজে ওঠার লোভে গাছের ফল, গরু, ছাগল, হাস, মুরগী, ডিম নিয়ে হাজির হয় পীরসাহেবের আস্তানায়। তারা ভুলে যায় আল্লাহ স্বয়ং তাঁর নবীকে বলছেন, তার কী হবে যার জন্য শাস্তির হুকুম অবধারিত হয়ে গেছে? তুমি (মোহাম্মদ) কি তাদেরকে বাঁচাতে পারবে যারা ইতোমধ্যেই আগুনে নিমজ্জিত? [সুরা যুমার ১৯]। তারা ভুলে যায় আল্লাহর সেই ঘোষণা যেখানে আল্লাহ বলেন, অধিকাংশ আলেম ও সুফিবাদীরা (পীর) মানুষের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ করে এবং মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে নিবৃত্ত করে। তারা যে সোনা রূপা সঞ্চয় করে, হাশরের দিন সেগুলো উত্তপ্ত করে তাদের ললাটে ও পার্শ্বদেশে ছ্যাঁকা দেওয়া হবে। - সুরা তওবা ৩৪
আরেকজন চুপি চুপি এসে বলেন, ‘এই ছেলে! জিহাদ-কিতাল ছাড়া কি ইসলাম হয়? আল্লাহর রসুল জিহাদ করেছেন, কিতাল করেছেন, কোর’আনে এই যে দেখো জিহাদের নির্দেশ, কিতালের নির্দেশ, এই যে দেখ হাদিসে জিহাদের ঘটনা, এই যে ইতিহাসে সাহাবীদের জিহাদের বর্ণনা, তুমি জিহাদ না করে কেমনে জান্নাতে যাবা? ওই দেখ ইসলামের দুশমন, চাপাতি মেরে ওকে খতম করে দাও, যদি শহীদ হও রক্তের ফোটা মাটিতে পড়ার আগেই জান্নাতে দাখিল হয়ে যাবা।’ তারুণ্যের রক্ত গরম হয়ে ওঠে ইসলামের দুশমনের কল্লা ফেলে দেওয়ার জন্য। কিন্তু সে ভাবে না- যাকে তাকে ইসলামের দুশমন আখ্যা দিয়ে হামলার নির্দেশ দেওয়ার অধিকার সাধারণ মানুষের নেই। ইসলামের কিতাল রাষ্ট্রীয় বিষয়, রাষ্ট্রপ্রধান বা জাতির ইমামের সিদ্ধান্ত মোতাবেক কিতাল ঘোষণা ও পরিচালনা হবার কথা। যাদের ইমাম নাই, রাষ্ট্রশক্তি নাই, তাদের আবার কিতাল কিসের? এই বুঝ পাওয়ার আগেই সে খুনোখুনিতে মেতে ওঠে, যেই জীবন থেকে আর ফেরত আসা সম্ভব হয় না। নিখাদ বিশ্বাস (কারণ দৃঢ় বিশ্বাস না থাকলে কখনও কেউ জীবন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে না) থাকার পরও এই উগ্রবাদী তরুণদের ঈমান ব্যয় হচ্ছে মানবতার বিরুদ্ধে, ইসলামের বিরুদ্ধে।
এর বাইরেও কোটি কোটি মানুষ রয়ে যায়, যারা হয়ত ঠিকমত নামাজ রোজা করে না, দাড়ি রাখে না, টুপি পরে না, দোয়া দরুদও বলতে পারে না, কিন্তু বিশ্বাস আছে। যত অপকর্মই করুক, দিনশেষে তারাও বিশ্বাস করে আল্লাহ, রসুল, কিতাব, হাশর, কেয়ামত, জান্নাত-জাহান্নাম সবকিছুতেই। এই সর্বধারণের বিশ্বাসও কি রেহাই পায়? না পায় না। এদের ঈমান কীভাবে ভুল খাতে প্রবাহিত হয় একটি উদাহরণ দিচ্ছি। নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার পোরকরা গ্রামে ২০১৬ সালে ১৪ই মার্চ সংঘটিত হয় দুঃখজনক এক হৃদয়বিদারী ঘটনা। হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিমের বাড়িতে মসজিদ নির্মাণকার্য চলছিল- এমন সময় একটি মহল গুজব রটিয়ে দেয় এখানে মসজিদ নয়, গির্জা বানানো হচ্ছে। মসজিদের মাইকে এই গুজব প্রচার করে, আশপাশের বহু মানুষকে উত্তেজিত করে লেলিয়ে দেওয়া হয় হেযবুত তওহীদের সদস্যদের উপর হামলার জন্য। যদিও পূর্ব-পরিকল্পিত এই হামলার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে পূর্বেই সন্ত্রাসী ভাড়া করে এনেছিল হামলাকারীরা, তারপরও খ্রিস্টান গুজব রটনা করায় বহু মানুষ ছুটে এসেছিল খ্রিস্টান হত্যা করে সওয়াব পাওয়ার জন্য। হেযবুত তওহীদের সম্পূর্ণ নির্দোষ দুজন কর্মীকে সেদিন জবাই করে হত্যা করা হয়। মানুষের ঈমানকে হাইজ্যাক করে সেদিন যে বর্বরতা নোয়াখালীর মাটিতে সংঘটিত হয়েছিল, তা বাংলাদেশের ইতিহাসে কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে চিরদিন। অথচ সেই মসজিদে এখন হাজার হাজার মুসল্লি নিয়মিত সালাত আদায় করছেন। হেযবুত তওহীদ যে খ্রিষ্টান নয়- মোমেন, নির্মাণাধীন ভবনটি যে গির্জা নয়, মসজিদ তা সকলের সামনেই সুস্পষ্ট হয়েছে।
এভাবে কখনও হিন্দুদের মন্দির ভাঙার হুজুগ, কখনও ইসলাম অবমাননার প্রতিবাদের নামে সন্ত্রাস সৃষ্টিতে সাধারণ ধর্মবিশ্বাসী মানুষের বিশ্বাসকে হাইজ্যাক করে আতঙ্কময় পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়, ঘটানো হয় জাতিবিনাশী ঘটনা। এটা সম্ভব হচ্ছে কারণ- আমাদের আকিদা জানা নাই। ফলে যার যেটা ইচ্ছা আমাদেরকে বোঝাতে পারছে, যার যেদিকে ইচ্ছা আমাদেরকে নিয়ে যেতে পারছে এবং যার যেটা ইচ্ছা আমাদেরকে দিয়ে করাতে পারছে। আমরা ছোটবেলায় অন্ধের হাতি দর্শনের ঘটনাটি পড়েছি। কয়েকজন অন্ধ ব্যক্তি হাতির বিভিন্ন অঙ্গ স্পর্শ করে বোঝার চেষ্টা করল হাতি দেখতে কী রকম! তারা কেউ হাতির পা ধরে ভাবল হাতি খাম্বার মত। কেউ হাতির কান ধরে ভাবল হাতি কুলার মত। কেউ হাতির লেজ ধরে ভাবল হাতি রশির মত। তারা যদিও হাত দিয়ে স্পর্শ করেই মন্তব্য করল, কিন্তু তাদের ধারণা হলো ভুল, কারণ একনজরে পুরো হাতিটি তারা দেখতে পায়নি। কারণ তাদের দৃষ্টিশক্তি নেই। আকিদা হচ্ছে ওই দৃষ্টিশক্তির মত, যা দিয়ে কোনো বস্তু বা বিষয়কে সামগ্রিকভাবে এক নজরে দেখতে ও বুঝতে পারা যায়। এই আকিদা না থাকার কারণে অর্থাৎ ইসলামকে এক নজরে দেখতে না পারার কারণে আমাদের ঈমান হয়ে যাচ্ছে বিভক্ত। একই ঈমান থাকার পরও আমরা কেউ হয়ে যাচ্ছি শিয়া, কেউ সুন্নি, কেউ হানাফি কেউ হাম্বলি, কেউ মাজহাবি লা মাজহাবি, কেউ সুফিবাদী কেউ উগ্রবাদী, কেউ আহলে কোর’আন কেউ আহলে হাদিস।
আল্লাহর রসুল বলেছিলেন, ‘শেষ যুগে ঈমান ধরে রাখা হাতে জ্বলন্ত কয়লা ধরে রাখার চেয়ে কঠিন হবে।’ -তিরমিজি-২২৬০। এখন বুঝতে পারছি কেন রসুল (সা.) একথা বলেছেন। কারণ, এখানে আকিদা থাকবে না। ফলে যে কেউ আমাদের ঈমানকে হাইজ্যাক করে নিয়ে যেতে পারবে ও অপব্যবহার করতে পারবে।
[মতামতের জন্য যোগাযোগ: ০১৬৭০-১৭৪৬৪৩, ০১৭১১-০০৫০২৫, ০১৭১১-৫৭১৫৮১]