৭০ এর দশকের টলিউডের সেরা অভিনেত্রী বললে সকলেই এক বাক্যে সুচিত্রা সেনেরই নাম নেবেন। বাংলার মহানায়িকার সঙ্গে তখন কাজ করার জন্য মুখিয়ে থাকতেন পরিচালকরা। সেসময় উত্তম কুমার ও সুচিত্রা সেনের জুটি ছিল সবার পছন্দের। শুধু বাংলাতে নয়, বলিউডের পরিচালকরাও সুচিত্রা সেনের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী ছিলেন।
সুচিত্রাও বাংলা ছবির পাশাপাশি বেশ কিছু হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করেন। কিন্তু পায়ে ধরে সাধলেও তিনি রাজ কাপুরের ছবিতে কখনও অভিনয় করেননি।
সুচিত্রা সেনকে যারা ব্যক্তিগতভাবে চেনেন তারা সবাই তার ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে জানেন। সেই সঙ্গে সিনেমায় সই করার ব্যাপারে তিনি ছিলেন প্রচণ্ড খুতখুঁতে। বাংলা হোক বা হিন্দি, অনেক বেছে বেছে সিনেমায় কাজ করেছিলেন সুচিত্রা সেন। তাকে নিজের সিনেমায় নেওয়ার জন্য মুম্বাই থেকে কলকাতা এসে পৌঁছেছিলেন স্বয়ং রাজ কাপুর।
রাজ কাপুরের ব্যক্তিত্ব পছন্দ ছিল না অভিনেত্রার
‘আমার বন্ধু সুচিত্রা সেন’ বইতে রাজ কাপুরের সঙ্গে সুচিত্রা সেনের যোগাযোগের এই বিষয়টির উল্লেখ আছে। লেখক অমিতাভ চৌধুরী সঙ্গে আলাপচারিতার সময় সুচিত্রা নিজেই জানিয়েছিলেন কেন তিনি রাজ কাপুরের সিনেমায় অভিনয় করতে রাজি ছিলেন না।
একটাই কারণ ছিল, রাজ কাপুরের ব্যক্তিত্ব নাকি তার পছন্দ হয়নি। বলিউডের সেরা পরিচালক তথা অভিনেতা সুচিত্রাকে তার সিনেমায় প্রস্তাব দিতেই তা ফিরিয়ে দেন মহানায়িকা। তার কথায়, পুরুষদের মধ্যে আমি রূপের খোঁজ করি না। আমি বুদ্ধিমত্তা এবং তীক্ষ্ণ বার্তালাপ পছন্দ করি। আমি তখনই রাজ কাপুরের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। তিনি নায়িকার চরিত্রের প্রস্তাব নিয়ে আমার বাড়ি এসেছিলেন।
সত্যজিৎ রায়ের সিনেমাতে অভিনয়ের প্রস্তাব ফেরান মহানায়িকা
‘আমার বন্ধু সুচিত্রা সেন’ বইতে সুচিত্রা আরও বলেছিলেন, আমি বসামাত্রই উনি আচমকা আমার পায়ের সামনে এসে বসেন ও আমায় গোলাপের তোড়া উপহার করেন। আমি তাও প্রস্তাব ফিরিয়ে দেই। আমার ওনার ব্যক্তিত্বটা ভালো লাগেনি। যেভাবে উনি আচরণ করেছিলেন, আমার পায়ের সামনে বসেছিলেন, একজন পুরুষকে তা শোভা দেয় না। তবে শুধু রাজ কাপুর নয়, শোনা যায় খোদ সত্যজিৎ রায়ের সিনেমার প্রস্তাবও ফিরিয়ে দেন সুচিত্রা।
সত্যজিৎ রায় তার কাছে যখন সিনেমার অফার নিয়ে এসেছিলেন তখন তিনি চেয়েছিলেন মহানায়িকা শুধু তার সিনেমাতেই কাজ করবেন। কিন্তু সুচিত্রার আরও অনেক জায়গাতে কথা দেওয়া ছিল। তাই তিনি সত্যজিৎ রায়ের মত পরিচালকের ছবির অফার ফিরিয়ে দেন। তবে বলিউডের সঞ্জীব কুমারের সঙ্গে তার বেশ ভালো বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। দুজনে একসঙ্গে ‘আঁধি’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন।