শাহাদত হোসেন, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বরণে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার দিন ব্যাপী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের বলদমারা নৌকা ঘাট সংলগ্ন বাগুয়ার চর এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল কাদের সরকারসহ ব্যবসায়ীদের আয়োজনে ব্রহ্মপুত্র নদে গ্রামবাংলা ঐতিহ্যবাহী এই নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলায় সভাপতিত্ব করেন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল কাদের সরকার।
নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদা আকতার স্মৃতি (ভার), বীর মুক্তিযোদ্ধা বদিউজ্জামান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মিনু, আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম, আরএসডিএর সাবেক নির্বাহী পরিচালক ইমান আলী ইমন, ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি সামছুদ্দোহা ও আবু বক্কর মাস্টার প্রমূখ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনা করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সিএসডিকের নির্বাহী পরিচালক আবু হানিফ মাস্টার, সার্বিক সহযোগিতা করেন ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম, ইট ভাটার মালিক ও উদিয়মান সমাজসেবক ছাইফুল ইসলামসহ অনেকেই।
নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে সারা দিন নদীর তীরে হাজার হাজার শিশু, নারী ও পুরুষসহ বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ উপস্থিত হয়। নদীর দুই পাশের কিনারে মানুষ কানায় কানায় ভরে যায়। শ্যালোবোর্ড ও ছোট ছোট নৌকা নিয়ে নদীর মাঝখান থেকেও নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন দর্শক। থেমে থেমে আনন্দে উল্লাসে মেতে উঠে উৎসুক জনতা। দীর্ঘদিন থেকে করোনার কারনে সকল প্রকার খেলা-ধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় নৌকাবাইচে অংশ নিয়ে এলাকার মানুষদের আনন্দ দিতে পেরে নৌকার মাঝিরাও খুবই খুশি। তাদের নাচ ও জারিগানে মুগ্ধ হয়ে উঠে দর্শকরা। এই নৌকা প্রতিযোগিতা দেখতে পার্শবর্তী উপজেলাসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভ্যানে, রিক্সায়, অটোভ্যান ও মোটরসাইকেল দিয়ে দর্শকরা সকাল থেকেই বলদমারা নৌকা ঘাটে আসতে শুরু করে।
প্রায় ৩ কিলোমিটার জুড়ে নদীর কিনারে দর্শকরা অবস্থান করেন। তবে গেরেজ না থাকায় মোটরসাইকেলগুলো বিভিন্ন স্থানে সারিবদ্ধ করে রাখে। প্রথম দিনে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে একতাতরী, মামা ভাগনে, মায়ের দোয়া, সোনাভরি দশের তরীসহ প্রায় ২০ টি নৌকা খেলায় অংশ নেয়। ফাইনাল খেলায় একাত্তরের সৈনিক প্রথম, দুরন্ত চিতা দ্বিতীয়, সোনার বাংলা তৃতীয় ও আশার আলো চতুর্থ পুরস্কার লাভ করে ।