বেলাল হোসাইন তাওসান:
সত্য নিয়ে দাঁড়ালে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যার ব্যাপারীরা ষড়যন্ত্র করবেই, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু যারা সত্য নিয়ে দাঁড়ায় তাদের সাথে আল্লাহ থাকেন, তাদের বিজয়রথ কেউ থামাতে পারে না। তবে সমস্ত ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় ইসপাত-কঠিন ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগ্রাম করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। গতকাল দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হেযবুত তওহীদের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কর্মী সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার পোরকরা শহীদী জামে মসজিদের তৃতীয় তলায় কনফারেন্স হলরুমে এ কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হেযবুত তওহীদের এমাম বলেন, বর্তমানে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বেড়ে গেছে। এর অর্থ হচ্ছে আমাদের আন্দোলন, সংগ্রাম বেগবান হয়েছে, অনেক শক্তিশালী হয়েছে। এজন্যই শত্রুও বেড়েছে। প্রধানত হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে ধর্মব্যবসায়ী ও জঙ্গিবাদী একটা শ্রেণি। যেহেতু এ আন্দোলন ধর্মব্যবসা, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, মাদক, নারী নির্যাতন, অপরাজনীতি ইত্যাদি যাবতীয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলে এজন্য এই ষড়যন্ত্র, এই শত্রুতা চলছে। কিন্তু সত্যের মোকাবেলায় শত্রুপক্ষ যত বড়ই হোক তারা পরাজিত হবে। সত্যের বিজয় অবশ্যম্ভাবী। মহান আল্লাহ সত্যের পক্ষে আছেন, ন্যায়ের পক্ষে আছেন। তিনি কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “তোমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হলো রসুলাল্লাহ (সা.) এর সাহাবাদের মতো পুত-পবিত্র চরিত্র নির্মাণ করা। কোনোভাবেই তোমরা মিথ্যা, প্রতারণার আশ্রয় নেবে না। কাউকে কথা দিলে কোনোভাবেই কথার বরখেলাফ করবে না। আমানত রক্ষার আত্মবিশ্বাস যদি না থাকে তাহলে আমান নিও না, যদি কেউ তোমাদের কাছে কিছু আমানত রাখে তবে জীবনের ঝুঁকি থাকলেও আমানত ফিরিয়ে দিও। সর্বাবস্থায় আল্লাহর উপর ভরসা করবে। ব্যবসায় সততা অবলম্বন করবে যেন তোমাদেরকে মানুষ কলুষিত এ সমাজ থেকে আলাদাভাবে চেনে। কোনো ধরনের অশ্লীল কর্মকাণ্ডে জড়িত হবে না, মাদক ও অবৈধ অস্ত্রের সংস্পর্শেও যেও না। যে কোনো সমস্যা হলেও আমাকে জানিও। সর্বাবস্থায় ঐক্যবদ্ধ থাকবে, কোনোভাবেই কারও গীবত, পরচর্চা করবে না। কোনো ভাই-বোনের মনে কষ্ট দিও না। যে কোনো পরিস্থিতিতে আমিরের ডাকে সাড়া দেবে। যে কোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন সকলে একত্রিত হতে পারো সেই প্রস্তুতি রাখবে।”
তিনি ইতিহাস থেকে উদাহরণ তুলে ধরে কর্মীদের বলেন, রসুলাল্লাহ (সা.) যে সত্য নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, যে তওহীদ নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, যে ইসলাম নিয়ে দাড়িয়েছিলেন তোমরাও সেই ইসলাম নিয়ে দাঁড়িয়েছ, কাজেই তোমাদের বিরুদ্ধেও একই রকম ষড়যন্ত্র হবে, এটা রসুলাল্লাহর সুন্নাহ। তোমাদের ধৈর্য ধারণ করতে হবে, আল্লাহর উপর তাওয়াক্কল করতে হবে। কোনোকিছুতেই হতাশ হওয়া যাবে না, ভীতসন্ত্রস্ত হওয়া যাবে না। অনর্থক কারও সাথে শত্রুতা করা যাবে না। ব্যক্তিগত কিছু ক্ষতি শিকার করে হলেও তোমরা অহেতুক সংঘর্ষ এড়িয়ে চলবে। মনে রাখবে মানুষকে কষ্ট দেওয়ার জন্য বা মানুষের মাঝে ত্রাস সৃষ্টি করার জন্য ইসলাম আসেনি, ইসলাম এসেছে মানুষের মাঝে ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠা করতে, শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে। কাজেই মানুষের সাথে এমন আচরণ করবে যেন তারা এই আস্থা পায় যে তোমরা আসলেই শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, হেযবুত তওহীদের চট্টগ্রাম বিভাগীয় আমীর নিজাম উদ্দিন। সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী জেলা হেযবুত তওহীদের সভাপতি মো. গোলাম কবির, চট্টগ্রাম জেলা হেযবুত তওহীদের সভাপতি মো. তানভীর উল আলম, ফেনি জেলা হেযবুত তওহীদের সভাপতি মো. নুরুল আফসার সোহাগ, কুমিল্লা জেলা হেযবুত তওহীদের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম, চাঁদপুর জেলা হেযবুত তওহীদের সভাপতি মো. মঈন উদ্দিন, লক্ষীপুর জেলা হেযবুত তওহীদের সভাপতি মো. জামাল হোসেন সোহাগ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন, হেযবুত তওহীদের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহকারী আমীর রাজু আহমেদ।