ডেস্ক রিপোর্ট:
২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের ৮ মাস (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের ঘাটতির মুখোমুখি রাজস্ব আদায়ের একমাত্র প্রতিষ্ঠান জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
৮ মাসে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রতিষ্ঠানটি আদায়ে পিছিয়ে আছে ১৮ হাজার ২২১ কোটি ৭৪ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে সবশেষ ফেব্রুয়ারি মাসে ঘাটতি ১ হাজার ১১৫ কোটি ১১ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে রাজস্ব আদায়ের তাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৪৪ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা, সেখানে আদায় হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। আর চলতি অর্থবছরের সংশোধিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। সেক্ষেত্রে বাকি চার মাসে প্রতিষ্ঠানটির আদায় করতে হবে ১ লাখ ৮৩ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব।
সঙ্গে রয়েছে আইএমএফের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করার চাপ। আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী, রাজস্ব খাতে সংস্কারের পাশাপাশি প্রতিবছর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) দশমিক ৫ শতাংশ হারে বেশি রাজস্ব আদায় করতে হবে। যদিও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির প্রাক্কলন ৮২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতির মুখে পড়তে যাচ্ছে এনবিআর।
এনবিআরের সাময়িক হিসাব অনুসারে, ৮ মাসে আয়কর আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৯ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ৭২ হাজার ৩১১ কোটি টাকা। পাশাপাশি মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯২ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা। বিপরীতে আয় হয়েছে ৮৮ হাজার ৭০১ কোটি টাকা। এছাড়া শুল্ক আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৩ হাজার কোটি টাকা। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ৬৫ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা।
অর্থবছরের আট মাসে এককভাবে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে আয়কর থেকে, প্রায় ২০ শতাংশ। ঘাটতি ৬ হাজার ৮৪৩ কোটি টাকা। আর শুল্ক বিভাগে গত আট মাসে ১০ দশমিক ৭৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও এ খাতে ঘাটতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। এ খাতে কম আদায় হয়েছে ৭ হাজার ৭১১ কোটি টাকা। অন্যদিকে ভ্যাট আদায়ে ১৬ দশমিক ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আলোচ্য সময়ে ভ্যাট কম আদায় হয়েছে ৩ হাজার ৬৬৬ কোটি টাকা।
এদিকে এনবিআরের পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে রাজস্ব আদায় আগের বছরের তুলনায় ১৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আর ফেব্রুয়ারিতে রাজস্ব আদায় বেড়েছে ১৯ শতাংশের বেশি, যা বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।এ বিষয় এনবিআরের নাম প্রকাশ না শর্তে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকার গত অর্থবছর থেকেই আমদানিকে নিরুৎসাহিত করেছে। এলসি খোলার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি রয়েছে। ফলে আমদানি ঋণাত্মক হয়ে যাওয়ায় শুল্ক আদায়ও কমে গেছে। তবে আমাদের প্রত্যাশা ছিল ভ্যাট ও আয়কর থেকে বেশি রাজস্ব আদায় হবে। দুই খাতে যে প্রবৃদ্ধি সে অর্জন কম সাফল্য নয় বলে মনে করি।
তিনি আরও বলেন, চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৯১.৭৯ শতাংশ, যার মধ্যে কাস্টমস ৮৮.৯৬ শতাংশ, মূসক ৯৪.৪১ এবং আয়কর ৯১.৩৫ শতাংশ। এটাও আমাদের জন্য বড় অর্জন বলে মনে করি।