যারা মহান মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র নিয়ে অংশ নিয়েছিলেন তাদের খুঁজে বের করে তাদের কল্যাণে সব ধরনের ব্যবস্থা আওয়ামী লীগ সরকার নিচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান কখনও ভুলবে না।
সোমবার (২১ নভেম্বর) ঢাকা সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২২ উপলক্ষে সশস্ত্র বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা একেবারে অবহেলিত হয়ে পড়েছিলেন তখন আমরা খুঁজে খুঁজে বের করে তাদের (কল্যাণে) সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছি। তাদের ভাতার ব্যবস্থা করা, কোনো মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুবরণ করলে তিনি যেন রাষ্ট্রীয় সম্মান পান সেই ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। এমনকি তাদের দাফন কাফনের ব্যবস্থাটাও যাতে হয় সেটাও আমরা করে দিয়েছি।
সরকারপ্রধান বলেন, এটাই আমার চেষ্টা, যারা আমার বাবার ডাকে সাড়া দিয়ে অস্ত্র তুলে নিয়ে এদেশ স্বাধীন করেছেন তাদের সম্মান করা, তাদের মর্যাদা দেওয়া এটাই তো আমাদের কাজ। দল, মত পৃথক থাকতে পারে, কিন্তু তাদের অবদানটা কখনও ছোট করে দেখিনি, আমি কখনও এটা নিয়ে অবহেলা করিনি। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।
শেখ হাসিনা বলেন, আপনাদের যে অবদান, মুক্তিযোদ্ধাদের যে অবদান সেটা কখনও আমরা ভুলি না এবং সেই থেকে আমরা এই বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে গড়ে তোলারই পদক্ষেপ নিয়েছি এবং যেটা এখন..ভিত্তিটা তৈরি করে সামনের দিকে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়, জাতির পিতার নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়, জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। মনে হলো যেন আমরা স্বাধীন বাংলাদেশে নাই। এটাকে যেন পাকিস্তানের আরেকটা প্রদেশে রুপান্তর করার অপচেষ্টা।
৭৫ এর ১৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ৭৫ এর পর কেউ মুক্তিযুদ্ধ করেছেন এই কথাটা বলবার মতো কারো মনোবলই ছিল না। আর বললে পরে..হ্যাঁ,যারা ক্ষমতাশীন অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে যারা ক্ষমতা দখল করেছিল তাদের সঙ্গে যারা হাত মিলিয়েছিল তারা ভালো ছিল। সবার তো এভাবে থাকতে পারে না। তাদের মতো পারে না। অনেকের মধ্যে তো একটা আত্মমর্যাদাবোধ থাকে, আত্মসম্মানবোধ থাকে। কাজেই তাদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে গিয়েছিল।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও স্মৃতি সংরক্ষণে সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেকটা উপজেলায় আমরা জায়গা দিয়েছি সেখানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিগুলো যেন থাকে এবং ওই অঞ্চলে যে যুদ্ধ হয়েছে তার ইতিহাসটা যেন আমাদের ছেলেমেয়েরা জানতে পারে। কারণ আমাদের বিজয়ের ইতিহাস জানলে আমাদের ছেলেমেয়েদের ভেতরেও সেই ধরনের একটা উদ্দীপনা আসবে। তারাও দেশটাকে ভালোবাসতে শিখবে। দেশের উন্নয়নে কাজ করতে পারবে। মানুষের জন্য কাজ করতে পারবে।
গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে মন্তব্য করে টানা তিনবারের সরকারপ্রধান বলেন, আমরা ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করতে পেরেছি, ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন যখন করেছি তখনই আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। উন্নত দেশে এদেশকে উন্নীত করতে হবে।