আইপিএলের ২০২৪ আসর চলাকালেই ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার নিয়মের বেশ বিরোধীতা দেখা গিয়েছিল। যার মাধ্যমে দ্বিতীয় ইনিংসে একজন বাড়তি বোলার কিংবা ব্যাটার খেলাতে পারে দলগুলো। কিন্তু তা নিয়ে ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা থেকে শুরু করে বিদেশি সাবেক তারকারাও সমালোচনা করেছিলেন। এই নিয়মের সঙ্গে ওভারপ্রতি দুটি বাউন্স দেওয়ার নিয়ম নিয়েও নতুন করে ভাবছে আইপিএল কর্তৃপক্ষ।
এই দুটি নিয়ম আগামী আসর থেকে থাকবে কি না সেই সিদ্ধান্ত এখনও নেয়নি বিসিসিআই। তবে দুটি নিয়মই পর্যালোচনায় রয়েছে বলে উল্লেখ করেছে ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ। এই দুটি নিয়মের কোনোটিই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নেই। দুটি নিয়মই প্রথমে চালু হয়েছিল ভারতের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে। পরে সেটি আইপিএলে আনা হয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার বা দ্বাদশ ক্রিকেটার নামানোর সুযোগ নেই, এ ছাড়া টি-টোয়েন্টিতে ওভারে সর্বোচ্চ একটি বাউন্স দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।
এর আগের আইপিএল আসরে দুই বাউন্সের নিয়ম চালু হওয়ার পর বোলাররা সেটিকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। অনেকেই ধারণা করেছিলেন ব্যাটার এবং বোলারদের মধ্যে সমতা আসতে যাচ্ছে। যদিও গত বছর দলগুলোর রান আগের সকল আসরের চেয়ে বেশি হয়েছিল। নিয়ম দুটির পরিবর্তনের বিষয়ে বিসিসিআইয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা জানি যে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার এবং দুই বাউন্সের নিয়ম নিয়ে আলোচনা চলছে। কিন্তু এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’
পর্যালোচনায় রয়েছে আইপিএলের ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার ও ওভারে দুই বাউন্সের নিয়ম
এদিকে, রঞ্জি ট্রফি এবং ওয়ানডে ক্রিকেটের সম্ভাব্য সূচি এবং প্রতিযোগিতার নিয়ম প্রকাশিত হয়েছে তিন সপ্তাহ আগে। সেখানে সৈয়দ মুস্তাক আলি কী নিয়মে খেলা হবে, তা জানানো হয়নি। এখনও সেই নিয়ম প্রকাশ করেনি বিসিসিআই। আর তাতেই মূলত জল্পনা বাড়ছে। নভেম্বর থেকে শুরু হবে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি। সেখানে আলোচনায় থাকা নিয়ম দুটি বহাল থাকবে কি না সেই বিষয়েও রাজ্য এসোসিয়েশনগুলো জানে না।
সম্প্রতি আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি লখনৌ সুপার জায়ান্টসের মেন্টরের দায়িত্ব নিয়েছেন সাবেক ভারতীয় পেসার জহির খান। এরপর বহুল আলোচিত ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার নিয়মের পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়মের কারণে বেশ কিছু ভারতীয় ক্রিকেটার খেলার সুযোগ পাচ্ছে। আমার মনে হয় এটা ভাল দিক। আর অলরাউন্ডারের প্রয়োজনীয়তা কমে যাচ্ছে বলে আমার মনে হয় না। ভালো অলরাউন্ডার হলে সে সুযোগ পাবেই। কেউ যদি অর্ধেক অলরাউন্ডার হয়, তাহলে দলে তার সুযোগ পাওয়া মুশকিল।’
প্রায় একই যুক্তি দেখিয়েছেন আরেক ভারতীয় তারকা অলরাউন্ডার রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার নিয়ম খুব একটা খারাপ নয়। এতে কৌশলগত দিক থেকে সাহায্য মেলে। অনেকেই বলেন যে অলরাউন্ডার উঠে আসছে না। কিন্তু ওদের উঠে আসতে কে নিষেধ করেছে? এই প্রজন্মের ক্রিকেটাররা অলরাউন্ড দক্ষতায় বিশ্বাসী নয়। এমন নয় যে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার নিয়মের কারণে ওরা উঠে আসছে না। একবার বেঙ্কটেশ আয়ারকে দেখুন। ল্যাঙ্কাশায়ারে (কাউন্টি টুর্নামেন্টের দল) গিয়ে কত ভাল খেলছে। যেকোনো খেলাতেই নতুনত্ব নিয়ে আসার জায়গা রয়েছে। এতে ক্রিকেটেরই মঙ্গল।’
সবমিলিয়ে এই দুটি নিয়ম আগামী আইপিএলে থাকবে কি না, সেটি ঠিক হবে বিসিসিআইয়ের সভায়। এই ইঙ্গিত দিয়ে ভারতীয় বোর্ডের সচিব ও সম্প্রতি আইসিসি সভাপতির দায়িত্ব পাওয়া জয় শাহ বলেন, একটি সভা ডাকা হবে এবং শিগগিরই আলোচনা হবে এ বিষয়ে।