খেলারপত্র ডেস্ক:
ভারতীয় টেনিসে জনপ্রিয় এক নাম সানিয়া মির্জা। গত সপ্তাহেই পেশাদার টেনিসকে বিদায় জানান সানিয়া মির্জা। যদিও নিজের অবসরের সিদ্ধান্তের কথা আগেই জানিয়েছিলেন। তাই, দুবাই ডিউটি ফ্রি টেনিস প্রতিযোগিতাকেই ক্যারিয়ারের শেষ টুর্নামেন্ট হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন ভারতের এই টেনিস সেনসেশন। কিন্তু ৩৬ বছর বয়সী এক সময়ের নম্বর ওয়ান এই টেনিস তারকার শেষ যাত্রাটা রঙিন হয়নি। ছয়টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী এই তারকা প্রতিযোগিতার প্রথম রাউন্ডেই হেরে যান।
তবে টেনিস কোর্টকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানোর আগেই নিজের পরবর্তী ক্যারিয়ার গুছিয়ে নেন তিনি। ব্যক্তি জীবনে পাকিস্তানি তারকা ক্রিকেটার শোয়েব মালিকের স্ত্রী নিজেও বেছে নিয়েছেন ক্রিকেটকে। ভারতের মাটিতে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠেয় উইমেনস প্রিমিয়ার লিগে অন্যতম ফ্র্যাঞ্চাইজি রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর মেন্টর হিসেবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ভারতের তারকা এই টেনিস তারকা।
টুর্নামেন্ট শুরুর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটার হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও পোস্ট করে বেঙ্গালুরু। ভিডিওতে দেখা যায়, দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে আলাপচারিতায় ব্যস্ত মেন্টর সানিয়া মির্জা। এ সময় সানিয়া বলেন, আমি ক্রিকেট সম্পর্কে কিছুই জানি না। আমাকে যখন নারী আইপিএলে মেন্টর বানানো হয় তখন ভাবছিলাম, আমি কী করব? মেয়েদের সঙ্গে কী নিয়ে কথা বলব?
তার দাবি, যেকোনো খেলায় মানসিক দিকটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেটা আমি ২০ বছর ধরে সামাল দিয়েছি। ভারতের এই টেনিস সেনসেশন জানান, কিছুদিন আগে আমি অবসর নিয়েছি। ভাবছিলাম, আমার জীবনের পরবর্তী ধাপ কী? এরপর সিদ্ধান্ত নেই, ভারত ও এর বাইরের নারী অ্যাথলেটদের সাহায্য করার, যেকোনো খেলায় মানসিক দিকটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেটা আমি ২০ বছর ধরে সামাল দিয়েছি।
সানিয়ার মতে, চাপ অনুভব করা স্বাভাবিক বিষয়, কিন্তু সেটা সামাল দেওয়ার পদ্ধতি জানতে হবে। আশপাশের চেঁচামেচি থেকে দূরে থাকা শিখতে হবে। ভারতের মিডিয়া সামলানো কিন্তু কঠিন।
ছয়টি গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী সানিয়া জানান, আমি ব্যক্তিগত খেলায় ছিলাম। যে কারণে ফটোশুট, গণমাধ্যমের মনোযোগ-সবকিছু নিজেকে একা সামলাতে হতো। সেখান থেকে ভাবলাম যে এই বিষয়টায় তো মেয়েদের আমি সহায়তা করতে পারি।
২০০৩ সালে পেশাদার টেনিসে পা রেখেছিলেন সানিয়া। এরপর শুধু ভারতের নয়, হয়ে উঠেছিলেন এশিয়ান মহিলা টেনিসের মুখ। একসময় সেরেনা উইলিয়ামস, মারিয়া শারাপোভাদের মতো বিশ্বতারকাদের সঙ্গেই উচ্চারিত হতো সানিয়ার নাম। তবে বারবার চোটের আঘাতে পড়ে নিজের ইচ্ছেতেই অবসরের সময় বেছে নিয়েছেন সানিয়া।
কোনো টুর্নামেন্টের একক গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে পারেননি বিশ্ব টেনিসের আঙিনায় ভারতের একমাত্র প্রতিনিধি ছিলেন সানিয়া মির্জা। তবে সর্বোচ্চ চতুর্থ রাউন্ডে উঠতে পেরেছিলেন ইউএস ওপেনে। তবে ব্যক্তিগত ক্যারিয়ার সেরা র্যাঙ্কিংয়ে ২৭ পর্যন্ত উঠেছিলেন তিনি।
ডব্লিউটিএ ডাবলস র্যাঙ্কিংয়ে টানা ৯১ সপ্তাহ শীর্ষে ছিলেন সানিয়া। ডাবলস ও মিক্সড ডাবলসে তার গ্র্যান্ড স্ল্যামের সংখ্যা ছয়টি। গত জানুয়ারিতেই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলোয়াড় জীবনের শেষ গ্র্যান্ডস্ল্যাম খেলতে নেমেছিলেন সানিয়া। নারী ডাবলসে দ্বিতীয় রাউন্ডেই আটকে গেলেও রোহন বোপান্নাকে নিয়ে মিক্সড ডাবলসের ফাইনালে উঠেছিলেন। কিন্তু শেষবারের মতো খেতাব জয় অধরা থেকে গেছে সাবেক এই চ্যাম্পিয়নের।