বিভিন্ন কারণে যারা ঈদুল আজহার আগে বাড়ি যেতে পারেননি তারা আজ ঢাকা ছাড়ছেন। ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে বাড়ির উদ্দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন তারা। তবে এই সংখ্যা খুবই কম।
আজ মঙ্গলবার (১৮ জুন) ঈদের দ্বিতীয় দিন রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল এবং চিটাগাং রোডের সাইনবোর্ড বাস স্ট্যান্ডে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, অন্যান্য সময় এসব এলাকায় যে পরিমাণ কর্মব্যস্ততা, হাঁক-ডাক এবং যাত্রীদের উপস্থিতি ছিল আজ তেমনটি নেই। ঈদের ছুটির কারণে যাত্রী না থাকায় অধিকাংশ কাউন্টারই ছিল বন্ধ। আর বিভিন্ন কোম্পানির শিডিউলভুক্ত বাসের সংখ্যাও ছিল একেবারেই কম। মোটামুটি যাত্রী হলে অনেকক্ষণ পর-পর টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাচ্ছিল একটি করে বাস।
তবে রাজধানীর কল্যাণপুরের বাস কাউন্টারে ঘরমুখো মানুষের চাপ দেখা গেছে। আল-হামরা বাসের টিকিট বিক্রেতা আমিরুল ইসলাম জানান, দুপুরের আগ পর্যন্ত আগের মতোই ভিড় ছিল। সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে অনেক টিকিট বিক্রি হয়েছে। যাত্রীর চাপে বিকেল পর্যন্ত সব বাসের সিট বুকিং হয়েছে। তবে বিকেল এবং সন্ধ্যার পর ঢাকা থেকে বাইরে যাওয়ার টিকিটের চাহিদা নেই।
অপরদিকে সেলফি পরিবহনের সহকারী নূর হোসেন বলেন, ফজরের পর থেকে দুপুর পর্যন্ত মানুষের চাপ ছিল বেশি। দুপুরের পর কিছুটা কমেছে। এখন আবার ঢাকায় ফিরতি বাসে যাত্রীদের চাপ বাড়বে। কালকে থেকে তো অফিস খোলা। আজ রাত থেকেই ঢাকায় ফেরত আসা বাসগুলো চাকরিজীবীদের নিয়ে আসবে।
রাজধানীর সাইনবোর্ড এলাকায় বাসস্ট্যান্ডে কুমিল্লাগামী বাসের সংখ্যা কিছুটা বেশি দেখা গেছে।
তিশা পরিবহনের সহকারী সঞ্জয় দাস বলেন, সকালে কুমিল্লা থেকে আসার সময় ফাঁকা বাস নিয়ে এসেছি। কিন্তু যাওয়ার সময় এখন ভালো যাত্রী পেয়েছি। ভাড়া আগের মতোই রাখা হচ্ছে। অতিরিক্ত নিচ্ছি না।
সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ডে সস্ত্রীক বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন ঢাকার একটি কওমি মাদরাসার শিক্ষক ও মসজিদের ইমাম মাওলানা আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ঈদের নামাজ পড়ানো, কোরবানি করার দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। সেজন্য বাড়ি যেতে পারিনি। এখন বাড়িতে যাচ্ছি। বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ১০০ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। প্রতিবছরই আমার ঢাকায় ঈদ করতে হয়। যত কিছুই বলেন না কেন ঈদের সময় অতিরিক্ত ভাড়া নেবেই। এটা দেখে এসেছি অনেক বছর ধরে।
শামীমা আক্তার নামে আরেক যাত্রী বলেন, কোরবানি ঢাকাতেই করেছি। সেজন্য বাড়ি যেতে পারিনি। এখন বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে কুমিল্লায় গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি।
অপরদিকে পবিত্র ঈদুল আজহা ও সাপ্তাহিকসহ টানা পাঁচ দিনের ছুটি শেষ আগামীকাল বুধবার (১৯ জুন) খুলছে অফিস-আদালত। সঙ্গে খুলছে ব্যাংক বিমা ও শেয়ারবাজার।
ত্যাগের মহিমায় সারা দেশে গতকাল সোমবার (১৭ জুন) পালিত হয়েছে মুসলমানদের অন্যতম বড় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদ উপলক্ষ্যে ১৬, ১৭ ও ১৮ জুন (রবি, সোম ও মঙ্গলবার) তিনদিন ছুটি। এর আগে ১৪ ও ১৫ জুন (শুক্র ও শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। এ কারণে এবারের ঈদের ছুটি পড়েছে পাঁচদিন। ফলে টানা পাঁচদিন ঈদের ছুটি শেষে বুধবার অফিসপাড়ায় যোগ দেবেন কর্মজীবীরা। খুলবে ব্যাংক-বিমা, শেয়ারবাজার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।