ডেস্ক রিপোর্ট:
হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের কঠোর সমালোচনা করে ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠী আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি বলেছেন, হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট ভুল তথ্যে ভরা নথি আর অহেতুক কতগুলো অভিযোগ ছাড়া কিছুই নয়। সম্প্রতি আদানি গ্রুপের বার্ষিক সাধারণ সভায় মার্কিন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে আনা জালিয়াতির অভিযোগের নিন্দা জানান এ ভারতীয় ধনকুবের। গৌতম আদানির দাবি, তার ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচেষ্টা ছিল এ রিপোর্ট।
ভারতের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ এফপিও ছাড়ার প্রাক্কালে এমন পরিস্থিতি আদানির বিরুদ্ধে ‘চক্রান্ত’ বলে মনে করেন গৌতম আদানি। তার মতে, আদানির বিরুদ্ধে যেসব বিষয়ে এ রিপোর্টে অভিযোগ করা হয়েছে, তার অধিকাংশই ২০০৪ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ঘটেছে। এসব ইস্যু তখনই সমাধান করা হয়েছে।
গ্রুপের চেয়ারম্যান আরও বলেন, এমনকি সম্পূর্ণভাবে সাবস্ক্রাইব করা এফপিও থাকা সত্ত্বেও আদানি গ্রুপ সব বিনিয়োগকারীকে সুদসহ টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মূলত আদানি গ্রুপের সম্মানহানি করার জন্যই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রিপোর্টটি তৈরি করা হয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। এছাড়া এ কাজের পেছনে গ্রুপের স্টক-শেয়ার থেকে স্বল্পমেয়াদি আর্থিক লাভের আশাও রাখা হচ্ছে বলে ধারণা তার।
এ বিষয়ে তদন্তের জন্য ভারতের সুপ্রিম কোর্ট থেকে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির কার্যক্রম অনুযায়ী, আদানির বিরুদ্ধে কোনোরূপ তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এছাড়া দেশ-বিদেশে কোনো ক্রেডিট এজেন্সিই গ্রুপের রেটিং কমানোর পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে এ বিরূপ পরিস্থিতি আদানি অনেকটাই সামাল দিয়ে উঠেছে।
এ ধরনের বাধা-বিপত্তি আসায় আদানি গ্রুপ আগের চেয়েও বেশি সক্রিয় হতে পারছে জানিয়ে গৌতম আদানি বলেন, আমাদের ব্যালেন্স শিট, আমাদের সম্পদ এবং আমাদের ‘অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো’ আগের চেয়ে এখন আরও বেশি শক্তিশালী।
এসময় তিনি ও তার প্রতিষ্ঠানের ওপর বিশ্বাস ধরে রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করার কথা দেন গৌতম আদানি। এছাড়া দীর্ঘ ৩০ বছরের পথচলা স্মরণ করে তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিজ নিজ ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
গত জানুয়ারি মাসে আদানি গ্রুপকে নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। সেখানে ভারতীয় এ শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে কারচুপি, হিসাবে প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়। ওই রিপোর্ট প্রকাশের পর ভারতজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। রাতারাতি ধনীতম ব্যক্তিদের তালিকা থেকে ছিটকে যান গৌতম আদানি। হু হু করে কমতে থাকে তার সম্পদের পরিমাণ। তবে গত মে মাসে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা মেলেনি বলে জানায় সুপ্রিম কোর্ট।