পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটের পাটগ্রামে একই লাল মুক্তিবার্তা নম্বর ব্যবহার করে দুই মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ভাতা ও লোন উত্তোলন এর অভিযোগ ওঠেছে। বুধবার দুপুর ১২টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জহির উদ্দিনের স্ত্রী ছামিনা বেগম এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জহির উদ্দিনের লাল মুক্তিবার্তা নম্বর ব্যবহার করে অপর এক জহির উদ্দিন (তেলি) এর সন্তানেরা নামের সাথে মিল থাকায় সুকৌশল অবলম্বন করে মৃত বাবাকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে নিয়মিত ভাতাসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে আসছেন। বিষয়টি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটির নজরে আসলে এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। সেই সূত্র ধরে ভুক্তভোগীরা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেও সমাধান না পাওয়ার ফলশ্রুতিতে আজকের সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ছামিনা খাতুন আরও বলেন, আমার স্বামী একজন প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি কালিগঞ্জ ভেরাবাড়ি এলাকায় থেকে ৬নং সেক্টরের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধ শেষে তিনি কর্মসংস্থানের জন্য পাটগ্রাম রসুলগঞ্জ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করেন। পরে আমার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। যেকারণে আমরা দুজনেই ধবলসতী এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করি। তিনি রসুলগঞ্জে দীর্ঘদিন বসবাস করার কারণে লাল মুক্তিবার্তায় তার ঠিকানা রসুলগঞ্জ হয়ে যায়। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নামের সাদৃশ্যের মিল থাকার কারণে আমার স্বামীর মুক্তিবার্তা নম্বর (০৩১৪০৩০৩৫৫) ব্যবহার করে ভিন্ন জহির উদ্দিনের সন্তানেরা নিয়মিত ভাতা উত্তোলন করছেন, যা আইনতভাবে অপরাধ ও প্রতারণার সামিল। আমি এটার স্থায়ী সমাধান চাই। আমার স্বামীর এমআইএস তালিকায় শুধুমাত্র বেসামরিক গেজেট নম্বর (১৪০৬) দিয়ে ভাতা অন্তর্ভুক্ত হয়। কিন্তু আমার স্বামীর ভারতীয় তালিকা নম্বর (৪৩৯৩৭) এবং লাল মুক্তিবার্তা নম্বর (০৩১৪০৩০৩৫৫) এর উল্লেখ না থাকায় অপর জহির উদ্দিনের সন্তানেরা আমার স্বামীর মুক্তিবার্তা নম্বর ব্যবহার করে দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে সুকৌশলে ভাতা উত্তোলনসহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ছামিনা খাতুন তার স্বামীর ভারতীয় তালিকার নম্বর ও লাল মুক্তিবার্তা নম্বর এমআইএস তালিকায় সংযুক্ত করে তদন্ত সাপেক্ষে নামধারী অপর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিনের যাবতীয় নথিপত্র বাতিলের দাবি জানান এবং এই চক্রান্তের সাথে জড়িত তার সন্তানদের ও স্বাক্ষীগণের বিচারের দাবি জানান। স্থানীয়ভাবে এটার সমাধান না পেলে প্রধানমন্ত্রীর শরণাপন্ন হবেন বলেও জানান তিনি।