এবার বেরিয়ে এসেছে প্রেস ইন্সটিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) নানা অনিয়ম দুর্নীতির ফিরিস্তি। মহাপরিচালকের যোগসাজসে নিয়মবহির্ভূতভাবে পরিচালক পদে আসীন হয়ে ছিলেন পরিচালক জাকির হোসেন। এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ১১ আগস্ট ২০২৪ ইং পিআইপির পরিচালক জাকির হোসেনের নিয়মবহির্ভূত পদগ্রহণ ও নানা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরে তদন্তপূর্বক তাকে বরখাস্ত অথবা অপসারণ অথবা অব্যাহতি প্রদানের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং অন্তর্বর্তী সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন জানায় পিআইবির কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদকেও অপসারণের দাবি জানান তারা।
জানা যায়, মো. জাকির হোসেন প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর পরিচালক (প্রশাসন) (চলতি দায়িত্ব) হিসেবে কাজ করছেন। তিনি ২৬ জুলাই ২০০০ইং তারিখে পিআইপিতে নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। গত ১৬ মে ২০২৩ ইং তারিখে তিনি উপ-পরিচালক (প্রশাসন) পদে পদোন্নতি পেয়েছেন বলে দাবি করেন এবং পদে যোগদান করেন। একই তারিখে তিনি পরিচালক (প্রশাসন) (চলতি দায়িত্ব) পদে যোগ দেন। কিন্তু পদোন্নতি সিলেকশন কমিটি কিংবা কোনো বোর্ড সভা সে-সময় অনুষ্ঠিত হয়নি। পরে অনুসন্ধানে জানা যায়, তিনি ১১.০৯.২০১৭ইং তারিখের সিলেকশন কমিটির ১৫২তম সভার সুপারিশে এবং পিআইবি পরিচালনা বোর্ডের ১৬০তম সভার অনুমোদনে পদোন্নতি লাভ করেন।
অথচ পিআইবি পরিচালনা বোর্ডের ১৬০তম সভার কার্যবিবরণীতে কোথাও তার পদোন্নতির বিষয়ে কোন কিছু উল্লেখ নেই। তাছাড়া পিআইবি প্রবিধানমালা অনুযায়ী পিআইবি পরিচালনা বোর্ডের অনুমোদন ব্যতিরেকে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিয়োগ-পদোন্নতি পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
এছাড়াও ২০২০-২০২১ অর্থবছরে হিসাব শাখার আপত্তি সত্ত্বেও আয়-ব্যয় কর্মকর্তা হিসেবে জোরপূর্বক উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির ফিক্সিশনের সময় অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট নেন বলে অভিযোগ রয়েছে জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে। যা পরে অডিট আপত্তি হয়। এছাড়া, তিনি শুদ্ধাচার পুরস্কার কমিটিতে থেকে নিজেই শুদ্ধাচার পুরস্কার নিয়েছেন বলেও দাবি অভিযোগকারীদের।
এছাড়া, গত ১৫ বছরে মো. জাকির হোসেন ও মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদের বিরুদ্ধে পিআইবি'র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানাভাবে হয়রানি, প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
কর্মকর্তা কর্মচারীরা জানান, পিআইবিকে দুর্নীতিমুক্ত ও নিরাপদ রাখতে মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ এবং ভুয়া পরিচালকের দায়িত্ব পালনকারী মো. জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক তাদের অপকর্মের তথ্যাদি উদঘাটন করতে হবে। এইরকম কর্মকর্তাদের হাতে পিআইবি কোনোভাবেই নিরাপদ নয় বলে তারা মনে করেন।