চট্টগ্রাম ব্যুরো:
আগামী ২৭ এপ্রিল চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওইদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) একটানা ভোটগ্রহণ হবে। তবে কেন্দ্রে কোনো সিসি ক্যামেরা থাকবে না।
গতকাল বুধবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ১৫তম কমিশন সভা শেষে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম এ তথ্য জানান। এর আগে বেলা ১১টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্য কমিশনাররাও অংশগ্রহণ ছিলেন। ইসি সচিব জানিয়েছেন, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোয়পত্র দাখিলের শেষ সময় ২৭ মার্চ। মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ২৯ মার্চ। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ৫ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ৬ এপ্রিল। নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা। গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদ। এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে সংসদ সচিবালয়। পরে আসন শূন্য ঘোষণার গেজেট ইসিতে আসে। এরপর নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করলো কমিশন।
এদিকে, চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সম্ভাব্য ৫ জন প্রার্থীর নাম আলোচিত হচ্ছে। তবে তারা বলছেন, দলীয় সভানেত্রীর সিদ্ধান্ত মেনে আসনটিতে পুনরায় বিজয় ধরে রাখতে কাজ করবেন। আলোচনায় আসা প্রার্থীরা হলেন- নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সাবেক চেয়ারম্যান ও নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য ও জাসদের কার্যকরী সভাপতি প্রয়াত মঈন উদ্দিন খান বাদলের স্ত্রী সেলিনা খান, সাবেক রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম।
উপনির্বাচনে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে আবদুচ ছালাম বলেন, আমি ২০০৮ সালে এবং ২০১৪ সালে দলের মনোনয়ন চেয়েছিলাম, শুরুতে পেয়েছিলাম। পরে নেত্রীর নির্দেশে আমি সরে এসেছি। এরপর সিডিএ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছি। এবার আমি মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। সবাই মনোনয়ন চাইতে পারেন, এটা সবার অধিকার। নেত্রী যদি সিদ্ধান্ত দেন, তাহলে নির্বাচনে আগ্রহী। দায়িত্ব পেলে অবশ্যই যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করবো। আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, দল যদি মনে করে আমাকে মনোনয়ন দিলে ভালো হবে, তাহলে আমাকে দেবে। সভানেত্রী নির্বাচন করতে নির্দেশ দিলে অবশ্যই করবো। চট্টগ্রাম-৮ আসনের ৬৫ শতাংশ ভোটার নগরের এবং ৩৫ শতাংশ ভোটার বোয়ালখালীর। দল যখন যে দায়িত্ব আমাকে দিয়েছে আমি তা পালন করেছি। মফিজুর রহমান বলেন, মরহুম মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি দলের অত্যন্ত নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। তার মৃত্যুতে শূন্য হওয়া আসনটিতে মনোনয়ন পেতে অনেকের নাম শোনা যাচ্ছে। মনোনয়ন কে পাবেন, তা নির্ভর করছে নেত্রীর সিদ্ধান্তের ওপর। নেত্রী যদি এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেন, সেভাবে কাজ করবো।
সেলিনা খান বলেন, বিগত উপনির্বাচনেও চট্টগ্রাম-৮ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছিলাম। দল থেকে মোছলেম উদ্দিনকে মনোনয়ন দেওয়া হলে তাঁকে সমর্থন দিয়েছি। আমি জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম, এখনও আছি। যদি জনগণ আমাকে চায় এবং নেত্রী যদি আমাকে সুযোগ দেন, আমি মানুষের সেবায় কাজ করবো। এস এম আবুল কালাম বলেন, আমাকে যদি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়, আমি নির্বাচনে করতে রাজি। অন্য কোনো দলের হয়ে কাজ করার ইচ্ছে নেই। বোয়ালখালী ও পাঁচলাইশ-চান্দগাঁও নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য মঈন উদ্দিন খান বাদলের মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হলে ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারির উপ-নির্বাচনে মোছলেম উদ্দিন আহমদ সংসদ সদস্য হন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হলে পুনরায় আসনটি শূন্য হয়। ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়লাভ করেন আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা এম কফিল উদ্দিন। ২০০৮ সালে নৌকা প্রতীকে মহাজোটের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) মঈন উদ্দীন খান বাদল সংসদ সদস্য হন। এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।