স্টাফরিপোর্টার :
শ্রীকৃষ্ণেরজন্মদিন জন্মাষ্টমীতে দেশের বানভাসীদেও দুর্গতি লাঘব ও মুক্তির জন্যপ্রার্থনা করা হয়। আর উৎসবের খরচকমিয়ে সেই অর্থ দুর্গতদের কাছে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
আজসোমবার সকাল ৮টায় রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে দেশ ও জাতির মঙ্গলকামনায় গীতাযজ্ঞের মাধ্যমে জন্মাষ্টমীর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
৯টারদিকে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর , সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা ও মহানগর সর্বজনীনপূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ড . তাপস চন্দ্রপালসহ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নেতারা গুরুবরণ করেন।
পরেবাসুদেব ধর বলেন , “আমরাসিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম প্রতি বছরের মতো এবারও জন্মাষ্টমী উদযাপন করা হবে। এরই মধ্যে আকস্মিকভাবে বন্যায় দেশের একটি বিরাট অংশ প্লাবিত হয়ে গেল , জনগণের একটি বিরাট অংশ অবর্ণনীয় দুঃখ -দুর্দশার মধ্যে পড়ল।
“আমরাআলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিলাম , পূজার বাইরেও এমন কিছু আনুষ্ঠানিকতা থাকে , যেগুলো না করলেও চলে।যেমন অতিরিক্ত আলোকসজ্জা , শোভাযাত্রায় আমরা অনেক কিছু বাদ দিতে পারি , ধর্মীয় আঙ্গিকটা রেখে আমরা করতে পারি। সেই দিক থেকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই অংশটা আমরাবন্যার্তদের জন্য পাঠিয়ে দেব। "
বাসুদেববলেন , “সারাদেশের মানুষকে আমরা আহ্বান জানিয়েছি , তারাও যেন এভাবে জন্মাষ্টমীর খরচ বাঁচিয়ে বন্যার্তদের জন্য আমাদের এখানে অর্থ পাঠিয়ে দেন। যাতে একটি বড় অ্যামাউন্ট আমরাবন্যার্তদের জন্য ব্যয় করতে পারি।
“এটানতুন নয়, জাতীয় যেকোনো দুর্যোগে আমরা এ কাজটা করেছি। ’৮৮ এর বন্যা, ’৯৮এর বন্যায় আমরা পূজার খরচ বাঁচিয়ে বন্যার্তদের সহযোগিতা করেছি। সব সময় আমরাজাতীয় দুর্যোগে মানুষের পাশে থাকি।"
ক্ষমতারপালাবদলের পর দেশের বিভিন্নস্থানে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলার ঘটনায় যে অস্বস্তি তৈরিহয়েছে, তা কাটিয়ে উঠারআশা করেন বাসুদেব ধর।
তিনিবলেন, “জন্মাষ্টমীর মাধ্যমে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠিতহোক। ক্ষমতার পালাবদলের কারণে আমাদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে, এটা কেটে যাক, শান্তি ফিরে আসুক। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যেন দেশ গড়তে পারি।”
সনাতনধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বছর আগে দ্বাপর যুগে ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেন।
তিনিসনাতন ধর্মের অবতার হিসেবে প্রেম, সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠারব্রত নিয়ে পৃথিবীতে আবির্ভূত হন। শ্রীকৃষ্ণ অত্যাচারী ও দুর্জনের বিরুদ্ধেশান্তিপ্রিয় ভালো মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ব্রতী হন।
বাংলারহিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, দুষ্টের দমন করতে একইভাবে যুগে যুগে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পৃথিবীতে আসেন। এসে সত্য, সুন্দর ও ন্যায় প্রতিষ্ঠাকরেন।
পাপমোচনও পূণ্যলাভের আশায় জন্মষ্টমীতে উপবাস পালন করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। দিনটিতে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংগঠনওবিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।
জন্মাষ্টমীউপলক্ষে বেলা ২টায় ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে শোভাযাত্রা বের করা হবে।
এরআগে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন অন্তর্র্বতী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। শোভাযাত্রা উদ্বোধন করবেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।