Date: December 03, 2024

দৈনিক বজ্রশক্তি

Header
collapse
...
Home / জাতীয় / জন্মনিবন্ধন সনদ পেতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ

জন্মনিবন্ধন সনদ পেতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ

June 16, 2022 02:34:16 PM  
জন্মনিবন্ধন সনদ পেতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ

জন্মনিবন্ধন সনদ পেতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। মূলত অপ্রতুল জনবল ও জটিল নিয়মের কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ১৮টি সেবা পেতে জন্মনিবন্ধন বাধ্যতামূলক। নির্ধারিত ফরমে জন্মনিবন্ধনের জন্য আবেদন করেও সনদ পেতে দিনের পর দিন ঘুরতে হচ্ছে। জন্মনিবন্ধনের সেবা নেয়ার জন্য প্রতিদিনই বিপুল পরিমাণ লোকজন আসছে। কিন্তু জনবলের অভাবে পর্যাপ্ত সেবা পাচ্ছে না সেবাগ্রহীতারা। জন্মনিবন্ধনের ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশনের ১০টি ওয়ার্ড নিয়ে একটি আঞ্চলিক জোন গঠিত। সেজন্য ১০টি ওয়ার্ডের মানুষ একটি অফিসেই সেবা নিতে আসে। তাতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা হিমশিম খায়। তাছাড়া জন্মনিবন্ধন ভুল সংশোধনীর জন্য সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক অফিস ও ডিসি অফিসে কয়েক দফা ঘুরেও সনদ মিলে না। ভুক্তভোগী এবং সিটি কর্পোরেশন সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক মানুষ নতুন করে জন্মনিবন্ধন করতে বা নামের সংশোধন করতে সিটি কর্পোরেশনের আঞ্চলিক অফিসে ধর্না দিচ্ছে। আবার কেউ কেউ জন্মনিবন্ধন ওয়েবসাইটে বা অনলাইনে আপডেট না থাকায় তাও করতেও আসছে। ফলে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক অফিসের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে মানুষের জটলা এখন নিত্যদিনের ঘটনা। অনেকে এক যুগ আগে হাতে লেখা জন্মনিবন্ধন সনদ নিয়েছিল কিন্তু এখন ওয়েবসাইটে ওই তথ্য মিলছে না। আবার অনেকে অনলাইন সনদ নিয়েছিল কিন্তু সনদ নম্বর ১৭ ডিজিটের কম, তাদের তথ্যও ওয়েবসাইটে নেই। আবার ওয়েবসাইটে কিছু জন্মনিবন্ধন পাওয়া গেলেও সেটির নামের বানান বেশিরভাগই ভুল করে উঠানো হয়েছে। আবার ওই বানান বা ছোট-খাটো সংশোধনী করতে গেলেও শুরু হয় আরো ভোগান্তি। সেক্ষেত্রে প্রথমে আঞ্চলিক অফিস এবং তা নিয়ে ডিসি অফিসে যেতে হয়।

সূত্র জানায়, বিগত ২০০৪ সালের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন অনুযায়ী জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে নিবন্ধন করাতে হবে। পাশাপাশি মৃত্যু ৪৫ দিনের মধ্যে মৃত্যুসনদ সংগ্রহের কথা বলা হয়। শুরুতে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন হাতে লেখা জন্মনিবন্ধন সরবরাহ করতো। ২০০৬ সালে এসে অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ ইস্যু করা শুরু হয়। ২০১১ সালের নভেম্বরে জন্ম-মৃত্যুর নিবন্ধনের নতুন ওয়েবসাইট ও সার্ভার চালু করা হয়, যার কার্যক্রম ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়। তারপর অনেকেই পুরোনো জন্ম নিবন্ধন সনদ নতুন ওয়েবসাইটে যুক্ত করে নিয়েছেন। পাশাপাশি কিছু ইউনিয়ন পরিষদ আগের হাতে লেখা সনদের তথ্য ওয়েবসাইটে হালনাগাদ করে। তবে বেশিরভাগই হালনাগাদ করা হয়নি। ২০১২ সালে চালু হওয়া ওয়েবসাইটটি ২০২০ সাল পর্যন্ত চালু ছিল। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ফের নতুন ওয়েবসাইট  চালু হয়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনেকে অভিযোগ করেছেন, তারা আগে জন্মনিবন্ধন করলেও ওই তথ্য বা জন্মনিবন্ধনের তথ্য ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে না। ফলে অনেকে শিক্ষার্থীদের স্কুলে নিবন্ধন কার্যক্রমে ভোগান্তিতে পড়ছে। আবার অনেকের ওয়েবসাইটে উঠলেও তাতে অসংখ্য বানান ভুল রয়েছে।

এদিকে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, জন্মনিবন্ধন করাতে গিয়ে কারো কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায় না। জন্মনিবন্ধনের জন্য সিটি কর্পোরেশনের আঞ্চলিক অফিসে গেলে কি কি কাগজপত্র লাগবে তাও কেউ। উলটো সেবাগ্রহীতাদের কাছে টাকা দাবি করা হয়।

অন্যদিকে জনপ্রতিনিধিদের মতে, জন্মনিবন্ধন সনদের বিষয়টি কাউন্সিলরদের অধীনে হলেই ভালো হয়। জনপ্রতিনিধিরা এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের অধীনে এ কাজটি দিলে তা আরো সহজ হবে।
অন্যদিকে জন্মনিবন্ধন সংশোধনে ভোগান্তির বিষয়ে জন্মনিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ওসমান ভূঁইয়া জানান, বিধিমালা অনুযায়ী এ নিয়ম করা হয়েছে। কীভাবে ওসব আরো সহজ করা যায় তা নিয়েও আলোচনা চলছে।