Date: November 22, 2024

দৈনিক বজ্রশক্তি

Header
collapse
...
Home / জাতীয় / দিন দিন কমছে দেশীয় গ্যাসের সরবরাহ

দিন দিন কমছে দেশীয় গ্যাসের সরবরাহ

February 09, 2023 05:37:48 PM   স্টাফ রিপোর্টার
দিন দিন কমছে দেশীয় গ্যাসের সরবরাহ

স্টাফ রিপোর্টার: 
দেশীয় গ্যাসের সরবরাহ দিন দিন কমছে। মূলত অনুসন্ধান ও উত্তোলনে জোর না দেয়াতেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পেট্রোবাংলা গত ৫০ বছরে মাত্র ৬৮টি অনুসন্ধান কূপ খনন করেছে। আর গত ১২ বছরে ২০টি অনুসন্ধান কূপ খনন করে ৪টি নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। তার মধ্যে শুধু ভোলা নর্থ গ্যাসক্ষেত্রে বলার মতো মজুত রয়েছে। তবে পেট্রোবাংলা সম্প্রতি কয়েকটি উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার কূপ থেকে গ্যাস প্রাপ্তির খবর দিলেও সেগুলো থেকে গ্যাস প্রাপ্তির হার খুবই কম। পেট্রোবাংলা সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, পেট্রোবাংলার হিসাবেই দেশে গ্যাসের ঘাটতি বাড়ার বলা হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংস্থাটি বাস্তবসম্মত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। গ্যাসক্ষেত্রগুলো ব্যবস্থাপনায় কার্যকর উদ্যোগ ছিল না। স্থলভাগে অনুসন্ধান নেই। সাগরেও কাজ হচ্ছে না। ফলে সহসা কাটছে না দেশীয় গ্যাস সঙ্কট। আর এখন উদ্যোগ নিলেও তার সুফল পেতে কয়েক বছর লাগবে। বর্তমানে দুটি বিদেশি ও তিনটি দেশীয় কোম্পানি দেশে গ্যাস উৎপাদন করছে। তার মধ্যে শুধু সিলেট গ্যাস ফিল্ডেই (এসজিএফএল) দৈনিক উৎপাদন ১৫ কোটি ঘনফুট থেকে কমে সাড়ে ৮ কোটি ঘনফুটে নেমেছে। অন্যান্য দেশীয় কোম্পানির অবস্থাও একই রকম। দেশে গ্যাস অনুসন্ধানে যেমন উদ্যোগ নেই, তেমনি কূপ সংস্কার ও ব্যবস্থাপনাতেও রয়েছে অবহেলা। 
সূত্র জানায়, বঙ্গোপসাগরে গ্যাসের বিশাল মজুদের সম্ভাবনা কথা ধারণা করা হলেও বিভিন্ন সময় একাধিক বিদেশি কোম্পানি অনুসন্ধানেও তাতে কোনো সফলতা আসেনি। প্রায় এক দশক আগে সমুদ্রের একমাত্র গ্যাসক্ষেত্র সাঙ্গু বন্ধ হয়ে গেছে। এখন মাত্র দুটি ব্লকে ভারতীয় দুটি কোম্পানি যৌথভাবে কাজ করছে। তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানে বাংলাদেশের সাগর এলাকাকে অগভীর ও গভীর মোট ২৬টি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। তার মধ্যে অগভীর অংশে ব্লক ১১টি আর গভীর সমুদ্রে ব্লক ১৫টি। সাগরের ২৪টি ব্লক এখন উন্মুক্ত। সেখানে কোনো অনুসন্ধান কাজ হচ্ছে না। ওসব ব্লককে ইজারার জন্য মডেল পিএসসি (উৎপাদন-অংশীদারিত্ব চুক্তি) সংশোধন করে পেট্রোবাংলা। বিদেশি কোম্পানির জন্য বাড়ানো হয়েছে গ্যাসের দামও। কিন্তু গত দুই বছরেও দরপত্র আহ্বান করা হয়নি। সম্প্রতি মডেল পিএসসি আবার সংশোধন করে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে প্রতি ইউনিট ১০ ডলার করা হয়েছে। আগামী দুই-এক মাসে দরপত্র ডাকা হতে পারে বলে জানা যায়।
সূত্র আরো জানায়, পেট্রোবাংলা গত সাত বছর ধরেই দেশের সমুদ্রসীমায় একটি পূর্ণাঙ্গ বহুমাত্রিক জরিপ শুরু করতে পারেনি। ওই কাজের জন্য ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়। নানা বাধা পেরিয়ে ২০২০ সালের মার্চে পেট্রোবাংলা টিজিএস ও স্কামবার্জার কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি করে। তাছাড়া কেনা হয়নি পৃথক জরিপ জাহাজও। অথচ প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার ও ভারত বঙ্গোপসাগর থেকে বিপুল পরিমাণে গ্যাস আবিষ্কার করলেও বাংলাদেশ সমুদ্রের তলে কী সম্পদ লুকিয়ে আছে তা এখনো জানতেই পারেনি।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। ২০২৫ সালের মধ্যে পেট্রোবাংলা মোট ৪৬টি অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার কূপ খননের পরিকল্পনা নিয়েছে। স্থল ও সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ব্রুনাইসহ গ্যাস ও তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর সঙ্গে দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি চুক্তির প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।