ডেস্ক রিপোর্ট:
এক দফা দাবিতে ঝিনাইদহ থেকে খুলনা অভিমুখে বিএনপির রোডমার্চের উদ্বোধন করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
আজ মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপি।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা দেশ স্বাধীন করেছি গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য। কোনো রাজা রানির রাজত্ব করার জন্য আমরা দেশ স্বাধীন করিনি। দেশে আজ কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করা হয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে একটি দেশ চলতে পারে না। কারও রাজত্ব কায়েম করার জন্য স্বাধীনতা হয়নি। দেশটা হীরক রাজার দেশে পরিণত হয়েছে। হীরক রাজার প্রথম দিকে যেমন ভালো ছিল, শেষের দিকে কিন্তু তেমন ভালো ছিল না। দড়ি ধরে টান দেওয়ার সময় এসেছে। বর্তমান সরকারের অবস্থা হীরক রাজার মতই হবে। তাই দড়ি ধরে মারো টান, রাজা হবে খান খান। দেশ থেকে যে টাকা পাচার হয়েছে তা পাই পাই করে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
তিনি আরও বলেন, একদিকে গণতন্ত্র, অন্যদিকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার লড়াই। কিছু দিন আগে বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে গেছিলাম। তিনি আমার দিকে চেয়ে ছিলেন, তার চাহনিতে প্রশ্ন ছিল। তিনি আমাকে বলতে চেয়েছেন- তোমরা আমার জন্য কী করেছো। তিনি বলতে চেয়েছেন- আমি কী দেশের জন্য কিছু করিনি। দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিইনি। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিইনি। তিনি আমাকে কথাগুলো বলতে চাইছেন। আমি তার কোনো উত্তর দিতে পারিনি।
মির্জা আব্বাস বলেন, আমি বেগম খালেদা জিয়াকে বলে এসেছি দেশবাসী আপনার জন্য চিন্তিত। দেশবাসী আপনার জন্য দোয়া করছে। বাংলাদেশের প্রতি আপনার যে অবদান, সেই অবদান কেউ কখনো ভুলতে পারবে না। নিশ্চয়ই দেশের মানুষ আপনার জন্য কিছু করবে। বাংলাদেশে আজকে সেই ব্যবস্থা শুরু হয়ে গেছে। আমরা এই হাসিনা সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করে ইনশাআল্লাহ দেশনেত্রী আপনাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠাবো।
সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, আমরা এক দফা দাবিতে রাস্তায় নেমেছি। তারেক রহমান মৃত বিএনপিকে জীবিত করেছেন। এই ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে শত শত নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। ৪০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। তারপরও বিএনপি মাঠ ছাড়েনি। কারণ একটাই শেখ হাসিনার পদত্যাগ ছাড়া বিএনপি ঘরে ফিরবে না।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আর কত রক্ত দেশের মানুষ দিলে শেখ হাসিনা ক্ষ্যান্ত হবেন? এই খুনি জালিম সরকার যতক্ষণ পর্যন্ত বিদায় না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না।
তিনি বলেন, শয়তানির একটা সীমা আছে। সরকার চোর ডাকাতদের মুক্তি দিচ্ছে অথচ তিনবারের প্রধানমন্ত্রীকে মুক্তি দিচ্ছে না।
ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনার পরিচালনায় রোডমার্চের উদ্বোধনী সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সৈয়দ মেহদী আহম্মেদ রুমী, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দীন, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাহ উদ্দীন টুকু, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু প্রমুখ।