আলতাফ হোসেন:
উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও মানহানিমূলক সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিনের সম্পাদক মো. আশরাফ আলী ও দৈনিক ভোরের পাতা পত্রিকার সম্পাদক ড. এরতেজা হাসানসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে ৫০ লাখ টাকার মানহানির মামলা হয়েছে। মামলাটি করেছেন দৈনিক বাংলাদেশ সমাচারের বিশেষ প্রতিনিধি মোঃ শফিকুল ইসলাম সুমন। নরসিংদী বিজ্ঞ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ৪ সেপ্টেম্বর সোমবার এই মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং নরসিংদী সিআর-১০৪১।
মামলার আসামিরা হলেন, দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিন পত্রিকার বেলাবো প্রতিনিধি ফয়সাল আহমেদ আব্দুল্লাহ, এই পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ আশরাফ আলী, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রতন, দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসান এবং বেলাব উপজেলার ধুকুন্দি গ্রামের মৃত আসমত আলীর ছেলে বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধা শেখ আতাউর রহমান।
এ মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে দৈনিক গণকণ্ঠ ও দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা এবং দুর্নীতি দমনে তথ্য প্রকাশকারী সংস্থার, নরসিংদীর জেলার পরিচালক মো: আলম মৃধা, দৈনিক বজ্রশক্তির নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি মোঃ আলতাব হোসেন এবং মনোহরদী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এবং অনলাইন নিউজ পোর্টাল ভয়েজ বিডি২৪.কমের সম্পাদক ও প্রকাশক কাজী শরিফুল ইসলাম শাকিল।
মামলা সূত্রে জানা যায়, শফিকুল ইসলাম সুমন দীর্ঘদিন ধরে বহুল প্রচারিত দৈনিক বাংলাদেশ সমাচারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে অত্যন্ত সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৩ আগস্ট দৈনিক বাংলাদেশ সমাচারের শেষ পৃষ্ঠার নিচের অংশে ‘নরসিংদীর বেলাবতে সন্ধান মিলেছে আট বছরের এক বীর মুক্তিযোদ্ধার’ শিরোনামে ২-৩ নং সাক্ষীগণকে সাথে নিয়ে সরজমিনে তথ্য উপাত্ত যাচাই-বাছায় পূর্বক সংবাদ প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে বিগত ২৭ আগস্ট তারিখে উক্ত সংবাদের দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশ করেন। এছাড়াও জাতীয় দৈনিক দেশেরপত্র, বজ্রশক্তি, সময়ের প্রত্যাশা এবং নরসিংদীর বহুল প্রচারিত সাপ্তাহিক আজকের চেতনাতেও বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরই প্রেক্ষিতে শেখ আতাউর রহমান অত্র মামলার বাদিকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দিয়ে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে শেখ আতাউর রহমানের কুপ্ররোচনায় অন্যান্য আসামির যোগসাজসে বাংলাদেশ বুলেটিনের বেলাবো প্রতিনিধি ফয়সাল আহমেদ আব্দুল্লাহ দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিনে ১ সেপ্টেম্বর বাদীর বিরুদ্ধে “বেলাবতে চাঁদা না দেওয়ায় মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার” শিরোনামের সংবাদ প্রকাশ করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২ সেপ্টেম্বর শনিবার দৈনিক ভোরের পাতা পত্রিকার শেষ পৃষ্ঠায় “চাঁদা না দেওয়ায় মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রচারের অভিযোগ” শিরোনামের সংবাদ প্রকাশ করে। এ ধরনের মানহানি কর ও অবাস্তব সংবাদ প্রকাশ করায় বাদী ও সাক্ষীগণের সামাজিক মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়। এতে বাদীর প্রায় সামাজিক মর্যাদা অনুযায়ী ৫০ লক্ষ টাকার মানহানির মামলা করেন তিনি।
জানা যায়, ১৯৭৯ সালের এসএসসি সার্টিফিকেট অনুযায়ী ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ৮ বছরের শিশু ছিলেন শেখ আতাউর রহমান। কিন্তু সেই তথ্য তিনি গোপন করে ভোটার আইডি কার্ডে বয়স বাড়িয়ে হয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বিগত ১৪ বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা নিচ্ছেন তিনি। মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ে এক ছেলেকে দিয়েছেন সরকারি চাকুরী। দীর্ঘদিন ধরেই বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চলছে কানাঘুষা, বইছে নিন্দার ঝড়। শেখ আতাউর রহমান নরসিংদী জেলার বেলাবো উপজেলার ধুকুন্দি গ্রামের মৃত আসমত আলীর ছেলে। ১৯৭৯ সালে শিবপুর উপজেলাধীন জয়নগর আলহাজ্ব আফসার উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তৃতীয় বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করেন তিনি। তার পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল শিবপুর, রোল নং- ৪৬৬২৮, রেজি নং-১৭৩১২/৭৬, বিভাগ- বিজ্ঞান। তার জন্ম তারিখ ০৩/০১/১৯৬৩। অর্থাৎ ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ৮ বছর। কিন্তু এই তথ্য গোপন করে ভোটার আইডি কার্ডে বয়স বৃদ্ধি করে খেতাব নিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ২০০৯ সাল থেকে তিনি নিয়মিত ভাতা পাচ্ছেন।