ডেস্ক রিপোর্ট:
রাজবাড়ীর কালুখালীতে নিখোঁজের ১২ দিন পর পাটখেত থেকে এক নারীর (১৯)
উদ্ধাররে কঙ্কালের ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টায় রাজবাড়ী পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার জি.এম.আবুল কালাম আজাদ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কালুখালী উপজেলার বিকয়া গ্রামের পান্নু মণ্ডলের ছেলে মো. মাহফুজ মণ্ডল (২১), দুলাল খানের ছেলে রবিউল খান (২১), রমজান মণ্ডলের ছেলে হাকিম মণ্ডল (২০) ও পাংশা উপজেলার আশুরহাট গ্রামের মো. নজরুল ইসলামের ছেলে মো. হাসিব খান (২০)।
এর মধ্যে মামলার ১নং আসামি মাহফুজ মণ্ডলকে পুলিশ গত ৮ আগস্ট কালুখালী উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি আসামিদের গতকাল শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ জুলাই রাতে নিখোঁজ হন ভুক্তভোগী ওই নারী। নিখোঁজের ১২ দিন পর গত ১৭ জুলাই বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কালুখালী উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়নের পাতুরিয়া এলাকার সিরাজ মণ্ডলের পাটখেত থেকে মাথার খুলি, চুল ও হাড়সহ বিভিন্ন অংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকা অবস্থায় দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ এসে উদ্ধার করে। মরদেহের পাশে পড়ে থাকা ভ্যানিটি ব্যাগ, পায়ের স্যান্ডেল, পরিহিত জামা ও ওড়না দেখে নিহতের পরিবার শনাক্ত মরদেহটি করে। পরে ১৮ জুলাই ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে জেলা পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের জন্য নিবিড়ভাবে তদন্ত শুরু করে।
জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই নারী স্বামী পরিত্যক্তা। তিনি তিন বছরের সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকতেন। ফেসবুকে মাহফুজ মণ্ডলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু মাহফুজ মণ্ডল ভুক্তভোগী ওই নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বাড়ি থেকে বের করে ধর্ষণ করার পরিকল্পনা করে। পরে ৫ জুলাই রাত সাড়ে ১২টার দিকে পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই নারী বাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন। কিন্তু মাহফুজ প্রতিবন্ধী হওয়ায় ওই নারী তাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান। এ সময় মাহফুজ ও রবিউলসহ আরও দুইজন ওই নারীকে একটি পাটখেতে দিয়ে নিয়ে যায় এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। তখন ওই নারী মামলা করবে বলে হুমকি দিলে তারা তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পাটখেতের মধ্যে রেখে যায়।
রাজবাড়ী পুলিশ সুপার জি.এম.আবুল কালাম আজাদ বলেন বলেন, ভুক্তভোগী ওই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে আমরা নিবিড়ভাবে এই ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করি। জেলা পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত চার আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. সালাহউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) রেজাউল করিম, সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) সুমন কুমার সাহা, কালুখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রাণ বন্ধু চন্দ্র বিশ্বাসসহ জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।