গত সপ্তাহে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছিল বাংলাদেশের বড় একটি অংশ। এরমধ্যে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, লক্ষীপুরে বন্যার তীব্রতা ছিল সবচেয়ে বেশি। টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানি এখন নামা শুরু করেছে। তবে বন্যার পানি নামলেও ঝুঁকি এখনো কমেনি। বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সতর্কতা দিয়ে বলেছেন, বন্যাকবলিত অঞ্চলগুলোতে পানিবাহিত রোগের মহামারি দেখা দিতে পারে। তিনি জানিয়েছেন, যদি সেসব জায়গায় এখনই সুপেয় পানি প্রদান না করা হয় তাহলে পানিবাহিত রোগ খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই কর্মকর্তা বলেছেন, “সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিত করাকে আমরা প্রাধান্য দিচ্ছি।”
শনিবার (৩১ আগস্ট) রয়টার্সকে স্বাস্থ্যসেবার মহাপরিচালক জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘন্টায় বন্যাকবলিত অঞ্চলগুলোতে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে অন্তত ৩ হাজার মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এখনো অনেক জায়গা পানির নিচে থাকায় সেখানকার মানুষ স্বাস্থ্যসেবা নিতেও আসতে পারছেন না। লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা ফরিদ আহমেদ রয়টার্সকে বলেছেন, “সব জায়গায় পানি, কিন্তু পান করার মতো পানি নেই। মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।” বন্যার পানিতে বৃহৎ অঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় শস্যক্ষেত্রে বড় প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, বন্যার কারণে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের ২০ লাখ শিশু ঝুঁকিতে আছে। শিশুদের জীবনরক্ষার স্বার্থে ৩৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা চেয়েছে তারা। এদিকে ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাংক ইনস্টিটিউট এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানিয়েছিল বাংলাদেশের ৩৫ লাখ মানুষ বাৎসরিক বন্যার ঝুঁকিতে থাকেন। বিজ্ঞানীরা বলেছেন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে এ ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শঙ্কা বেড়েছে।