মনিরুজ্জামান মনির, পাবনা থেকে:
পাবনায় হেযবুত তওহীদের স্থানীয় কার্যালয়ে হামলা ও সুজন হত্যা মামলার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। একই মামলায় গ্রেফতার চার আসামির বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ায় তাদের শিশু আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে পাবনার অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সাইফুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার মূল আসামি আলাল শেখকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সাথে দুই আসামি মারুফ শেখ ও রফিক ডাক্তারকে দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। অপর চার আসামি আল আমিন শেখ, ইমরান শেখ, ইমরান মোল্লা ও বাপ্পি শেখকে শিশু আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এর আগে গতকাল সকালে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হেমায়েতপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক সৌরভ কুমার চন্দ গ্রেফতার সাত আসামিদের আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। অপরদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী রিমান্ড আবেদন বাতিল করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন বাতিল করে তিনজনের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রাশেদ মৃধা আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে শক্ত প্রমাণ থাকায় আদালত প্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এরমধ্যে মূল আসামি আলাল শেখকে তিন দিন ও অপর দুই আসামিকে দুই দিন করে রিমান্ডে দেওয়া হয়েছে। আসামীপক্ষের আইনজীবী বাকী চার আসামিদের বয়স ১৮ বছরের নিচে প্রমাণ করতে পারায় বিজ্ঞ আদালত তাদের বিচারকার্য পরিচালনার জন্য শিশু আদালতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, এক শ্রেণির মানুষ আজ ধর্মান্ধতা ও ধর্মভীরুতা- এই দুইটা বিষয় যে সম্পূর্ণ আলাদা বিষয় তা বুঝতে পারছে না। তারা কোমলমতি শিশুদের ধর্মভীরুতাকে কাজে লাগিয়ে নানা রকম উদ্দেশ্য হাসিল করেছে। আমি বিজ্ঞ আদালতকে বলেছি, এই ঘটনার পেছনে যারা আছে তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ আগস্ট মঙ্গলবার রাতে একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্র দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে হেযবুত তওহীদের পাবনা স্থানীয় কার্যালয়ে হামলা চালায়। এতে হেযবুত তওহীদের ১০ সদস্য আহত হন। এরমধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় দুইজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হলে সেখানেই রাত আড়াইটায় সুজন শেখ নামে এক সদস্য মারা যান। আহত অপর সদস্য মো. আমিনুল ইসলাম এখনো আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
এ ঘটনায় রাতেই হেযবুত তওহীদের জেলা সভাপতি সেলিম শেখ বাদী হয়ে ১৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে পাবনা সদর থানায় মামলা করে। পরে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়। প্রথম ২৪ ঘন্টায় ৭ আসামিকে গ্রেফতার করা হলেও ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও বাকি আসামীদের গ্রেফতার না করায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।