
মোঃ তুহিন:
গাজীপুর: গাজীপুরের হোতাপাড়ায় অবস্থিত ফু-ওয়াং ফুডস লিমিটেডের শ্রমিকরা দুই মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধ না করা এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মিয়া মামুনের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ লোপাটের অভিযোগে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এর প্রতিবাদে তারা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন।
রবিবার (২০ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে প্রায় এক হাজার শ্রমিক এই মানববন্ধনে অংশ নেন।
মানববন্ধনে শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, ফু-ওয়াং ফুডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিয়া মামুন বছরের পর বছর ধরে শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘন করে আসছেন। তিনি শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে দেশে-বিদেশে বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন বলে তারা দাবি করেন। শ্রমিকদের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মিয়া মামুন একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ থেকে পার পেয়ে গেছেন।
ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বলেন, "মিয়া মামুন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী মহলের ঘনিষ্ঠ। এমনকি সালমান এফ রহমানের সাথেও তার দুর্নীতির যোগাযোগ রয়েছে বলে আমরা শুনেছি। তিনি দেশের টাকা বিদেশে পাচার করছেন, আর আমাদের মতো গরিব শ্রমিকদের পেটে লাথি মারছেন।"
শ্রমিকরা আরও জানান, গত দুই মাস ধরে তাদের বেতন বন্ধ রয়েছে। ঈদুল ফিতরের আগে বোনাস দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা এখনো পরিশোধ করা হয়নি। মালিকপক্ষ বারবার আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করেনি বলে অভিযোগ তাদের। এক শ্রমিক বলেন, “পরিবার নিয়ে আমরা না খেয়ে দিন কাটাচ্ছি, অথচ মালিকপক্ষ কোটি টাকার সম্পদ নিয়ে আয়েশে দিন কাটাচ্ছে।"
এছাড়াও, কারখানায় দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়ম চলছে বলে শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন। সময়মতো ওভারটাইমের টাকা পরিশোধ না করা, চিকিৎসা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার মতো ঘটনা ঘটছে বলেও তারা জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা অবিলম্বে বকেয়া বেতন-বোনাস পরিশোধের দাবি জানান এবং অভিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “এভাবে একটি প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। আমরা আর কোনো প্রতারণা সহ্য করব না। দাবি আদায় না হলে প্রয়োজনে রাজপথে আরও কঠোর আন্দোলনে নামবো।”
এ বিষয়ে কারখানার মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আমীর হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “আমি নিজেও তিন মাস আগে এই কারখানায় যোগ দিয়েছি। গত দুই মাসের বেতন আমারও বকেয়া রয়েছে।”