খেলারপত্র ডেস্ক:
মার্চ মাস আসার আগের ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় পথচলা শেষ। দুই যুগ পর এমন তেতো স্বাদ পেল বার্সেলোনা। সেই ২০০৮ সালের পর প্রথমবার হারল তারা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে। তবে হতাশার এই আবহেও আশার গান শোনালেন শাভি এর্নান্দেস। বার্সেলোনা কোচের দাবি, গত মৌসুমের চেয়ে এবার আরও ভালো করেছে তার দল।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে ইউরোপা লিগে খেলতে আসা বার্সেলোনা মুখ থুবড়ে পড়েছে এখানেও। নকআউট পর্বের প্লে অফের দ্বিতীয় লেগে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে বৃহস্পতিবার তারা ২-১ গোলে হেরেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে। প্রথম লেগে কাম্প নউয়ে ফলাফল ছিল ২-২। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ গোলে অগ্রগামিতায় শেষ ষোলোয় পায় রাখল ইউনাইটেড।
এবারের মতো গত মৌসুমেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে পড়েছিল বার্সেলোনা। টানা দুই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্ব থেকে বিদায়ের ঘটনা তাদের সবশেষ ছিল সেই ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে। এবারের আগে ওই মৌসুমেই শেষবার তারা মার্চে খেলতে পারেনি কোনো ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায়।
গত মৌসুমে ইউরোপা লিগে কোয়ার্টার-ফাইনালে আইনট্রাখট ফ্র্যাঙ্কফুর্টের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল বার্সেলোনা। এবার তারা থমকে গেল আগেই। কিন্তু ম্যাচ শেষে মুভিস্টার প্লাসকে শাভি বললেন, এবার উন্নতি হয়েছে তার দলের।
“অবশ্যই বড় হতাশার (এই হার), তবে আমার বিশ্বাস, আগের মৌসুমের চেয়ে এবার আমরা ভালো খেলেছি। অন্তত এবার তো লড়াই করেছি! এই মৌসুমে আমাদের বায়ার্ন মিউনিখ, ইন্টার মিলান (চ্যাম্পিয়ন্স লিগে) এবং এখন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, এমন বড় ও শক্তিশালী ক্লাবের বিপক্ষে খেলতে হয়েছে। যদিও আমরা যথেষ্ট ভালো ছিলাম না, তাদের পর্যায়ে খেলতে পারিনি।”
“আমরা অবশ্যই উন্নতি করেছি এবার। তবে তা যথেষ্ট ছিল না। এখন বাকিটা আমাদের হাতেই। আমরা আবার চেষ্টা করব (পরের মৌসুমে)। আত্ম-সমালোচনা করব, নিজেদের নিয়ে পর্যালোচনা করব, আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চেষ্টা করব ও পরের মৌসুমে ইউরোপে আরও ভালো করার চেষ্টা করব।”
ইউনাইটেডের বিপক্ষে এই ম্যাচে প্রথমার্ধে এগিয়ে ছিল বার্সেলোনাই। দ্বিতীয়ার্ধে দুটি গোল হজম করে ম্যাচ হেরে যায় তারা। প্রতিপক্ষকে কৃতিত্ব দিলেও শাভি দায় দিচ্ছেন নিজেদেরই। চোটের কারণে পেদ্রি ও নিষেধাজ্ঞার কারণে গাভির না থাকা বড় ব্যবধান গড়ে দিয়েছে বলে মনে করেন বার্সেলোনা কোচ।
“ওদেরর প্রথম গোলটাই আমাদের বড় ক্ষতি করে দেয়। দ্বিতীয়ার্ধে মুখোমুখি দ্বৈরথগুলোয় আমরা বারবার হেরেছি। ইউনাইটেডের খেলায় তাড়না অনেক বেশি ছিল। দারুণ ফর্মে থাকা দুর্দান্ত একটি দলের কাছে আমরা হেরেছি। তবে দিনশেষে, দায়টা আমাদেরই। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা খেই হারিয়েছি।”
“পেদ্রি আর গাভি খেললে, আমার ধারণা দ্বিতীয়ার্ধের চিত্র হতো ভিন্ন। অজুহাত খুঁজছি না। কিন্তু ওদের খেলা যে ধরনের, ওরা থাকলে প্রতিপক্ষের অর্ধে খেলার সুযোগ থাকে। আজকে সের্হি রবের্তো ভালো খেলেছে, কেসিয়ে ভালো ছিল। কিন্তু আমরা যেভাবে খেলি, তাতে ওরা দু’জন (পেদ্রি-গাভি) থাকলে ভালো হতো। তার পরও অবশ্য বলতে হবে, প্রথমার্ধে আমরা দারুণ খেলেছি। বিদায় নেওয়াটা হতাশাজনক।”
ইউরোপ থেকে বিদায় নিলেও নিজেদের দেশে ভালো অবস্থানে আছে বার্সেলোনা। লা লিগায় তারা শীর্ষে আছে রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে ৮ পয়েন্ট এগিয়ে থেকে। কোপা দেল রে-তে সেমি-ফাইনালে খেলবে তারা রিয়ালের বিপক্ষেই।