Date: April 26, 2024

দৈনিক বজ্রশক্তি

Header
collapse
...
Home / অর্থনীতি / বেনাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি কমেছে এক লাখ টন

বেনাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি কমেছে এক লাখ টন

March 14, 2023 08:17:29 PM   ডেস্ক রিপোর্ট
বেনাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি কমেছে এক লাখ টন

অর্থনীতি ও বাণিজ্য ডেস্ক:
২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি কমেছে ১ লাখ ১ হাজার ৯৪১ দশমিক ৩ টন। আগের অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) আমদানি হয়েছিল ১৪ লাখ ৪৮ হাজার ৭১৯ দশমিক ৮০ টন। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমদানি হয়েছে ১৩ লাখ ৪৬ হাজার ৭৭৮ দশমিক ৫ টন।
নির্ধারিত এ সময়ে কাস্টমের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৯৩৭ কোটি টাকা। সেখানে আদায় করা হয়েছে ৩ হাজার ৬৮১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৫৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। বেনাপোল কাস্টমস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
কাস্টমস ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে ডলার সংকটে খাদ্যপণ্য ছাড়া অন্য পণ্য আমদানিতে ব্যাংক এলসি খুলছে না। এতে ব্যবসায়ীরা আমদানি করতে পারছেন না। সম্প্রতি বেনাপোল কাস্টমসে ঘুস গ্রহণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। একজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তার নামে দুদকের মামলার বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে ঘুস বাণিজ্যের কারণে ১০ বছর ধরে বেনাপোল কাস্টমস লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করতে পারেনি। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের মাধ্যমে তারা ফাইলপ্রতি ঘুস নেয়।
বেনাপোল কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে পণ্য আমদানি হয়েছিল ১৪ লাখ ৪৮ হাজার ৭১৯ দশমিক ৮০ টন। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে পণ্য আমদানি হয়েছে ১৩ লাখ ৪৬ হাজার ৭৭৮ দশমিক ৫ টন। আমদানি কম হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৯৪১ দশমিক ৩ টন। যে কারণে রাজস্ব আদায়ও কম হয়েছে। এতে সরকারের রাজস্ব আয়ও কমে গেছে।
গত বছরে (২০২১-২২) বেনাপোল কাস্টম হাউজে ৫৫৮ কোটি ৮ লাখ টাকা রাজস্ব কম আদায় হয়েছিল। অর্থবছরটিতে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা, সেখানে আদায় হয়েছে ৪ হাজার ৫৯৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ হাজার ২৪৪ কোটি ৫৭ লাখ। সে বছর ঘাটতি ছিল ২ হাজার ৯৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামসুর রহমান বলেন, ‘‌যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় দুই দেশের ব্যবসায়ীদের বেনাপোল দিয়ে বাণিজ্যে আগ্রহ বেশি। তবে বর্তমানে ডলার সংকটে সরকার এলসিতে শতভাগ মার্জিন শর্ত দিয়েছে। আবার ব্যাংকগুলো ডলার সংকট দেখিয়ে এলসি খুলছে না। যে কারণে চলতি বছরের প্রথম আট মাসে আমদানি কমে গেছে। আর আমদানি কমলে রাজস্বও কম আসবে এটাই স্বাভাবিক।’
যশোরের আমদানিকারক জাহিদ হোসেন বলেন, ‘‌আমরা মোটর পার্টস আমদানি করে সারা দেশে বিক্রি করে থাকি। বর্তমানে যশোরের কোনো ব্যাংক এলসি খুলছে না। ফলে আমরা পণ্য আমদানি করতে পারছি না। এতে ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে।’ ভারত-বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট ইমপোর্ট এক্সপোর্ট কমিটির পরিচালক মতিয়ার রহমান জানান, এলসি করতে না পারায় ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানি করতে পারছে না। ফলে সরকারের রাজস্ব আয়ও কমে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আমদানিকারক জানান, কাস্টমসের নানা হয়রানি আর বন্দর ব্যবস্থাপনায় অনিয়মের কারণে অনেক ব্যবসায়ী বেনাপোল ছেড়ে অন্য বন্দরে চলে গেছে। কাস্টমসকে টাকা দিতে হয় বাধ্যতামূলক। তা না হলে বিভিন্ন অজুহাতে আমদানিকারকদের হয়রানির শিকার হতে হয়। যশোর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মিজানুর রহমান খান জানান, সরকার এলসি করতে শতভাগ মার্জিন দেয়ার নিয়ম করেছে। কয়েক মাস ধরে ব্যাংকগুলো এলসি খুলছে না। এতে আমদানির সঙ্গে জড়িত হাজার হাজার ব্যবসায়ী অর্থনৈতিকভাবে দুরবস্থায় রয়েছেন। এখন আমদানিকারকরা চরম বেকায়দায় পড়েছেন। একে তো বাণিজ্য ভালো নেই, তার ওপর পণ্য আমদানি করতে না পারলে আমদানির সঙ্গে জড়িতরা আর্থিকভাবে পঙ্গু হয়ে যাবে।