ডেস্ক রিপোর্ট:
প্রজ্ঞাপন ও বিশেষ আদেশের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আমদানি শুল্কে এমন অব্যাহতি দিয়েছে। আর সবচেয়ে বেশি শুল্ক ছাড় মিলেছে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে। এ খাতে ৯ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এরপরই ডিফেন্স স্টোরের জন্য ৫ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা ছাড় পেয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
শুল্ক অব্যাহতি ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় বেড়েছে ৯ হাজার ১৫২ কোটি টাকা বা ১৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ। ওই বছরে ৫১ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা শুল্ক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও স্থানীয় ব্যবসাকে সুরক্ষা দিতে অব্যাহতির পরিমাণ বাড়লেও বড় ধরনের ইতিবাচক প্রভাব বাজারে লক্ষ্য করা যায়নি বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
গত অর্থবছরে (২০২২-২৩) মোট ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে আমদানি-রপ্তানি পর্যায়ে শুল্ক হিসেবে আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ১ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা। আর অর্থবছর শেষে শুল্ক আহরণ হয় ৯২ হাজার ৭৩২ কোটি টাকায়। ঘাটতি ১৮ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ অব্যাহতি না দেওয়া হলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি রাজস্ব আদায় করত এনবিআর।
কোন খাতে কত অব্যাহতি
গত অর্থবছরে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে ৯ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা, ভোজ্যতেল আমদানিতে ৩ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা, কাঁচামাল আমদানিতে ১ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকা, মোবাইল নির্মাতারা ২ হাজার ২৪১ কোটি টাকা এবং ডিফেন্স স্টোরের জন্য ৫ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা ছাড় পেয়েছেন।
এছাড়া পাওয়ার গ্রিড প্রতিষ্ঠান ৮২৭ কোটি টাকা, রুপপুর পারমাণবিক প্রকল্প ৪ হাজার ৪১ কোটি টাকা, বিভিন্ন খাতে বিশেষ ছাড় ৯ হাজার ৫০ কোটি টাকা, রিলিফ পণ্যে ৪০৫ কোটি টাকা, বিভিন্ন সময়ে শুল্ক ছাড় হিসেবে ৫ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে শুল্ক অব্যাহতির পরিমাণ বেড়েছে ১ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা। এ খাতে ২০২১-২২ অর্থবছরে অব্যাহতির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা। মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতেও অব্যাহতির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে এ খাতে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল ৮ হাজার ৭৭১ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে তা বেড়ে হয় ৯ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। পোল্ট্রি ফার্মেও গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭৭০ কোটি টাকা শুল্ক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা বেড়ে হয়েছে ৯৭৮ কোটি টাকা। আর ভোজ্যতেলে ২ হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা শুল্ক অব্যাহতি বেড়েছে।
শুল্ক অব্যাহতি পেলেও ডিম ও ভোজ্যতেলের দাম রয়েছে ক্রেতার নাগালের বাইরে। বর্তমানে প্রতি লিটার খোলা ও বোতলজাত সয়াবিন তেল যথাক্রমে ১৫৪ টাকা, ১৭৪ টাকা আর ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দর ৮৫০ টাকা নির্ধারণ করেছে ব্যবসায়ীরা। আর গত মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ডিমের দাম চড়া হতে শুরু করেছে। বর্তমানে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকায়। এ অবস্থায় ডিম আমদানির চিন্তাভাবনা করছে সরকার।