আলতাফ হোসেন:
নরসিংদীর মাধবদী থানার পাইকারচর ইউনিয়নের বালাপুরেরচর মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার দ্বারা বালু উত্তোলন চলছে দীর্ঘদিন ধরে। বর্তমানে বালু উত্তোলনের কারণে বালুসাইর বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে। ইতোমধ্যে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে মানবববন্ধনসহ প্রতিবাদ সমাবেশ, স্মারকলিপি প্রদান করে এলাকাবাসী। এরপরেও স্থায়ীভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
বালাপুরেরচর ও মেঘনাবাজার এলাকাবাসী জনায়, মেঘনা নদীর ভাঙ্গন রক্ষার্থে পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০১৪ সালে আরশীনগর থেকে বালাপুরেরচর গ্রামের পূর্ব পাশ দিয়ে নরসিংদী জেলার শেষ সীমানা কদমতলা মহোনী সাধু আশ্রম পর্যন্ত বালুসাইর বেড়িবাঁধ নিমার্ণ করে। বেড়িবাঁধ নির্মাণের ফলে বালাপুরেরচর ও মেঘনাবাজার গ্রামসহ পাইকারচর ইউনিয়নের প্রায় ৯টি ওয়ার্ডের গ্রামবাসী নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা পায়। কিন্তু সম্প্রতি উক্ত বেড়িবাঁধের সন্নিকটে ড্রেজার দ্বারা বালাপুরেরচরের একটি প্রভাবশালী গ্রুপ বালু উত্তোলনের কাজ করে যাচ্ছে। বালু উত্তোলনের কারণে বেড়িবাঁধের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ও ভাঙ্গন দেখা দেয়। এ নিয়ে এলাকাবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন করে। এলাকাবাসীর প্রতিবাদের ফলে ড্রেজার দ্বারা বালু উত্তোলন বন্ধ করে ও ড্রেজার সড়িয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু ড্রেজারের বালু-পানি চলাচলের পাইপ অক্ষত রয়েছে। পুনঃরায় ড্রেজার দ্বারা বালু উত্তোলন শুরু করলে বর্ষায় বাঁধ ভেঙ্গে পাইকারচর ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের গ্রামবাসীর কৃষি জমি, ভিটা-মাটি হাড়িয়ে শত শত পরিবার বিলীন ও উদ্বাস্ত হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকার সচেতন মহল।
এদিকে প্রভাবশালী মহলের হাত থেকে বাঁধ রক্ষার বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য নরসিংদী পুলিশ সুপার, নরসিংদী পানি উন্নয়ন বোর্ড, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি), নরসিংদী প্রেসক্লাবে এলাকাবাসীর পক্ষে গণস্বাক্ষরতাসহ একটি অভিযোগ দায়ের করেন পাইকারচর ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি আব্দুল করিম। আবেদনে তিনি পাইকারচর ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের জনসাধারণের কথা ভেবে বেড়িবাঁধটি রক্ষার বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আবেদন জানান।
নরসিংদী সদর সহকারি কমিশনার ভূমি মেহেদী হাসান কাউছার বলেন, বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নরসিংদী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, আমার জানামতে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছ থেকে একটি বলু মহল ইজারা দেওয়া আছে। ইজারায় যে শর্তাবলী আছে এর বাহিরে যেন না যায় সে বিষয়ে আমাদের নজর আছে।