স্টাফ রিপোর্টার:
মসদজিদে অবস্থান করাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর উত্তরায় তাবলীগের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সাদ ও জুবায়ের গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দু’পক্ষের বেশ কয়েকজন মুসল্লি আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। গত রবিবার (২১ জানুয়ারি) রাত ৮ টার দিকে উত্তরার রাজলক্ষ্মীর ৩নং সেক্টরে তাকওয়া মসজিদে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তাকওয়া মসজিদে আগে থেকেই তাবলীগের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে মাওলানা যোবায়ের পন্থীরা। গতকাল রোববার রাতে জামায়াত নিয়ে মসজিদে প্রবেশ করতে চায় মাওলানা সাদের অনুসারীরা। মসজিদে আগে থেকে অবস্থান নেয়া জোবায়ের পন্থীরা সাদ পন্থীদের মসজিদে প্রবেশে বাধা প্রদান করলে দু’পক্ষের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে মসজিদ কমিটি ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
মাওলানা সাদের অনুসারীরা দাবি করে বলেন, আমরা মসজিদে প্রবেশ করতে চাইলে জোবায়েরের অনুসারীরা তাদের প্রবেশে বাধা দেয়। এসময় যোবায়েরের অনুসারীরা তাদের মারধরও করে। হামলা করে নষ্ট করে দেয়া হয় তাদের সাথে থাকা লাগেজ ও রান্নার সামগ্রী। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার দাবি মাওলানা সাদের সমর্থকদের।
ঘটনার সময় এক ব্যক্তি ফেসবুক লাইভে এক সাদ পন্থী অভিযোগ করে বলেন, জোবায়ের পন্থীদের আমল শেষ। এখন আমাদের আমল করার কথা। কিন্তু এই মসজিদের ইমাম ফয়জুল্লাহ বলেন আমরা সাদ পন্থীদের মারা নাকি তাদের জন্য ফরজ। এরপর সে তাদের সাথীদের ডেকে আমাদের সাথিকে মসজিদের তিন তলায় দরজা আটকে পিটিয়েছে। মসজিদে শুইয়ে প্রায় ২৫-২৬ জন সাথিকে বেধরক পিটিয়েছে তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাদপন্থি এক মুসল্লির অভিযোগ, হঠাৎ ৩০-৪০ জনের একটি বাহিনী এসে আমাদের পিটিয়েছে। হামলার ইন্ধনদাতা হিসেবে মসজিদের খতিব মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আযহারী বলে দাবি করেছেন মারধরের শিকার ভুক্তভোগীরা।
এদিকে জোবায়ের পন্থীরা মারধরের কথা অস্বীকার করেন।
পরে মসজিদ কমিটি ও তাবলীগ জামায়াতের দুই পক্ষ ও পুলিশের মধ্যস্থতায় বৈঠক হয়। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত তাকওয়া মসজিদে তাবলীগের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর রাতেই তাকওয়া মসজিদের সামনে থেকে অন্যত্র চলে যায় মাওলানা সাদের অনুসারী মুসল্লিরা।
উল্লেখ্য, তাবলীগ জামাতের দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী সাদা ও জোবায়ের গ্রুপ। নীতিগত বিরোধের কারণে দুই গ্রুপের মধ্যে শাপে-নেউলে সম্পর্ক। প্রায় প্রতিবছরই বিশ্ব এজতেমায় তাদের মধ্যে ছোট-বড় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রতি বছর ইজতেমাকে ঘিরে সাদ ও যোবায়েরের অনুসারীরা তাকওয়া মসজিদে থেকেই কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন। দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ এড়াতে এ বছর ৪ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি মাওলানা যোবায়েরের অনুসারী আর ৯ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি মাওলানা সাদের অনুসারীরা টঙ্গি ময়দানে ইজতেমায় অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এবছর ইজতেমা শুরুর আগেই ঘটনা পুনরাবৃত্তি ঘটল।