ডেস্ক রিপোর্ট:
চলমান সংঘাতের কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, সীমান্তরক্ষী বাহিনীসহ (বিজিপি) বিভিন্ন সংস্থা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সহসাই দেশটিতে ফেরত পাঠাতে পারবেন বলে মনে করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তবে তাদের কবে নাগাদ ফেরত পাঠানো হবে সেই দিনক্ষণ প্রকাশ করতে রাজি নন মন্ত্রী।
সোমবার (১২ ফ্রেবুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এমনটাই জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে তাদের যেসব বর্ডার গার্ড, সেনাবাহিনী এবং তাদের পরিবারের যারা বাংলাদেশে এসেছে, তাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আমরা ঐক্যমতে পৌঁছেছি। মিয়ানমার তাদের নিয়ে যাবে। আমি দিনক্ষণ বলতে চাই না। কারণ এটা গোপনীয়। এটাতে নিরাপত্তার বিষয় জড়িত আছে। তবে খুব সহসাই মিয়ানমার তাদের ফেরত নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। আমরা আশা করছি, খুব সহসাই তাদের ফেরত পাঠাতে পারব।
মিয়ানমারের নৌবাহিনীর জাহাজ বাংলাদেশে ভেড়ানোর ক্ষেত্রে সৃষ্ট জটিলতার প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে এবং এটা খুব সহসাই হবে। কখন কোন জাহাজ ভিড়বে সেটা আমি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বলতে পারি না। এটা টেকনিক্যাল পার্ট বা এটা বলার প্রয়োজন আছে বলেও আমি মনে করি না।
মিয়ানমার ইস্যুতে বাংলাদেশের নিরাপত্তা ইস্যুতে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেখুন, আমরা এ ব্যাপারে আমাদের উদ্বেগ জানিয়েছি। আমরা মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছি। তাদের অভ্যন্তরীয় বিষয়ে এখানে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হোক সেটা আমরা চাই না। আমাদের এখানে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কিছু নেই সেটাও বলার সুযোগ নেই। আমাদের এখানে মর্টার শেল এসে পড়েছে। এটা গ্রহণযোগ্য নয়। আর সেটার কড়া প্রতিবাদ আমরা জানিয়েছি।
চলমান সংঘাতের ফলে মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যের সঙ্গে দেশটির সেনা সদস্য বাংলাদেশে এসেছে। এসব সেনা সদস্যদের কেউ কেউ ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা নিধনের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে তদন্তে দাবি উঠছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান জানতে চাইলে ড. হাছান বলেন, দেখুন আমরা আপাতত তাদের ফেরত পাঠানো নিয়ে কাজ করছি। কারণ আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হচ্ছে, তাদের নাগরিকদের ফেরত পাঠানো। আর তারাও নিয়ে যেতে চায়। আমরা এ নিয়ে কাজ করছি।
রাখাইনের রাজধানী সিত্তের বাংলাদেশ মিশন থেকে কূটনীতিকদের সরিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের মিশনে যারা কর্মরত আছে তাদের নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহের রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, বিজিপিসহ বিভিন্ন সংস্থা ও তাদের পরিবারের সদস্য মিলিয়ে দেশটির অন্তত ৩৩০ জন নাগরিক বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। নেইপিদো তাদের নাফ নদী দিয়ে রাখাইনে ফেরাতে ঢাকাকে প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু রাখাইনের পরিস্থিতি বিবেচনায় ঢাকার পক্ষ থেকে তাদের উড়োজাহাজে করে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। পরে মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের সমুদ্র পথে জাহাজে করে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেয়, বাংলাদেশও তাতে রাজি হয়।