স্টাফ রিপোর্টার:
রাষ্ট্রপতির পদচ্যুতির প্রশ্নে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে রাজনৈতিক ঐকমত্য হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেছেন, “এটা একটা বড় সিদ্ধান্ত। এটাতে আমাদের যেমন তাড়াহুড়ো করার সুযোগ নেই, তেমনই অতিরিক্ত বিলম্ব করার সুযোগ নেই।
“...রাজনৈতিক ঐকমত্য যেহেতু গড়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, ওইটা পর্যন্ত আমাদেরকে অপেক্ষা করতে হবে।"
রোববার সচিবালয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “রাষ্ট্রপতির বিষয়টা এমন- এখানে গোপনে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই। যখন একটা সিদ্ধান্ত হবে, সেটা হবে প্রকাশ্যে।”
তিনি বলেন, “এখন রাজনৈতিক ঐক্য যত তাড়াতাড়ি হবে, তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। সিদ্ধান্ত কী হবে তা আমি বলতে পারব না। কারণ রাজনৈতিক ঐক্য কোন দিকে যাবে, মতামত কোন দিকে বেশি যাবে- সেটা তো আমি বলতে পারব না। এ মুহূর্তে কারো প্রেডিক করাও সম্ভব না।"
রাষ্ট্রপ্রধানের পদত্যাগের দাবিতে সম্প্রতি বিভিন্ন পক্ষের তরফে যে দাবি উঠেছে, সে বিষয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে বিএনপি তাদের অবস্থান তুলে ধরার ঘোষণা দিয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, “বিএনপি বলেছে- তারা রাজনৈতিক সংকট দেখছে; আবার বিএনপিরই দুই-একজন নেতা বলছেন, তারা সে সংকট দেখছেন না।
“এখন যারা দাবি করছে তার অপসারণ দরকার এবং যারা বলছে এটা হলে রাজনৈতিক সংকট হবে- মূলত ঐক্যটা তাদের মধ্যে করার চেষ্টা করা হচ্ছে।"
আওয়ামী লীগের আমলে রাষ্ট্রপতি হওয়া মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে শপথ নেওয়ায় অন্তর্র্বতী সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হয় কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে রিজওয়ানা হাসান বলেন, “প্রশ্নবিদ্ধ হয় না। ডকট্রিন অব নেসেসিটি বলে একটা কথা শুনেছেন- এটা পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত একটা মতবাদ; সাংবিধানিক ধারাবাহিকতাই ছিল আমাদের একমাত্র অপশন।"
চলমান সংলাপের বিষয়ে তিনি বলেন, “হয়তো সকলের সাথে কথা বলার প্রয়োজন নেই। যারা মনে করে অপসারণ বা পদত্যাগ প্রয়োজন বনাম যারা মনে করে অপসারণ সংকট হবে- আলোচনাটা মূলত তাদের মধ্যে হবে।"
উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, “এখন উপদেষ্টা পরিষদ ক্লিয়ার করেছে যে- রাজনৈতিক ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হবে। রাজনৈতিক ঐক্যের ফল কী হবে সেটা না জেনে আগে মন্তব্য করা যাবে না।
“রাজনৈতিক ঐকমত্য যেহেতু গড়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, ওইটা পর্যন্ত আমাদেরকে অপেক্ষা করতে হবে।"
তুমুল গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ অগাস্ট দেশ ছেড়ে যাওয়া শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন কি না, সে বিষয়টি নিয়ে আড়াই মাস পর বিতর্ক তৈরি হয় রাষ্ট্রপতির একটি কথায়।
দৈনিক মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, তিনি শেখ হাসিনার পদত্যাগের কথা শুনেছেন, কিন্তু কোনো দালিলিক প্রমাণ তার কাছে নেই।
ওই বক্তব্য মানবজমিনের একটি ম্যাগাজিনে ছাপা হওয়ার পর রাষ্ট্রপতি চাপে পড়েন। প্রথমে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল দাবি করেন, সাহাবুদ্দিন ‘মিথ্যা’ বলে শপথ ভঙ্গ করেছেন। তাকে অপসারণের সম্ভাবনা নিয়েও কথা বলেন উপদেষ্টা।
এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ জুলাই-অগাস্টের অভ্যুত্থানে যুক্ত বিভিন্ন সংগঠন রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবিতে মাঠে নামে।