রাজধানীর ডেমরা থানাধীন একটি বাসার দরজা ভেঙে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, প্রথমে স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যার পর স্বামী আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। গত মঙ্গলবার (২৮ জুন) সন্ধ্যায় খবর পাওয়ার পর ওই দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। নিহত স্ত্রীর নাম সীমা সুলতানা (৪৫), তার বাবার বাড়ি মাগুরা জেলায়। স্বামী লিয়াকত আলীর (৫৫) গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারি উপজেলায়।
ডেমরা থানা পুলিশ জানায়, পারিবারিক কলহের জেরে সোমবার (২৭ জুন) দিবাগত রাত তিনটা থেকে ভোর ছয়টার মধ্যে প্রথমে স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যার পর স্বামীও আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওই দম্পতির দুই ছেলে-মেয়ে। মেয়ে লিমা বিবাহিত, স্বামীর বাসায় থাকেন। ছেলে লিমন কলেজ পড়ুয়া। বাবা-মার সঙ্গে ডেমরার মধুবাগ ১৯/৫ নম্বর ভবনের দোতলায় বসবাস তার। তার বাবা লিয়াকত আলীর ওষুধের দোকান রয়েছে।
ডেমরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, নিহত দম্পতির ছেলে লিমন গত মঙ্গলবার সকালে ঘুম থেকে উঠে কলেজে যায়। বিকেলে ফিরে মাকে খাবারের জন্য ডাকতে যায়। কিন্তু মায়ের কোনো সাড়া না পেয়ে বাবাকে খোঁজাখুঁজি করে। বাবা-মার ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ পেয়ে সন্দেহ হয় লিমনের। পরে ঘরের ভেন্টিলেটর ভেঙ্গে দেখে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছেন বাবা। এরপর বাড়ির মালিক আমাদের খবর দেন। সুরতহাল শেষে রাতেই মরদেহ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) মর্গে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, স্বামী আত্মহত্যার আগে স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যা করেছেন বলে আমাদের ধারণা। কারণ স্ত্রীর গলাকাটা, আর স্বামী ঝুলছিলেন ফ্যানে। ঘরের দরজা ছিল ভেতর থেকে আটকানো। সীমার রক্তাক্ত মরদেহের পাশ থেকে ছুরি ও বটি উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের পরিবার পুলিশকে জানিয়েছে, ওই দম্পতির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে কলহ চলছিল। এখন ময়না তদন্ত ও ফরেনসিক পরীক্ষায় শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাবে মৃত্যুর রহস্য।
ডেমরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি-তদন্ত) ফারুক মোল্লা জানান, এ ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একটি হত্যা, আরেটি আননেরাচাল ডেথ বা ইউডি মামলা। এখন আমরা তদন্ত করে দেখব এ ঘটনায় অন্য কারো যোগসাজশ আছে কি না।